

বরিশালে হেনস্তার ঘটনায় মুখ খুলেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেছেন, আমি একটি উন্নয়ন কাজের সহযোগী চাইলাম, সেটাকে কেন্দ্র করে আমাকে হেনস্তা করা হয়েছে। আমরা সবার নাম জানি, সবাইকে চিনি, তাদের বের করে দলীয় শৃঙ্খলার ভেতর আনতে হবে।
ফুয়াদ বলেছেন, গতকালের (রোববার) ঘটনার সময় প্রশাসনের সবাই ছিল, কিন্তু তারা কিছুই করেনি, নিশ্চুপ ছিল। গতকালের ঘটনায় বাবুগঞ্জের প্রশাসনের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে এখানে ভালো নির্বাচন সম্ভব না।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশালের রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এবি পার্টি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি ঘটনার সময় উপস্থিত বাবুগঞ্জ থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের নীরব ভূমিকা এবং দায়িত্বে অবহেলার জন্য বরখাস্তের দাবি জানান।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেছেন, দলের মধ্যে ক্রিমিনাল রেখে শহীদ জিয়ার বাংলাদেশ গড়তে পারবে না, বেগম খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ গড়তে পারবেন না। আমরা হতাশ হচ্ছি, যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের পদ আবার ফেরত দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের আগে এটা কোনো ভালো লক্ষণ না। এটা ৩১ দফার সংস্কারের ভাষা না। চোর-চোট্টারা আমাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে, আমরা এমন একটা বাংলাদেশে বসবাস করছি। আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণ করছি। কিন্তু এটা অসীম নয় ধৈর্য ধারণের।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, বরিশালের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দাবি নিয়ে ৬-৭ জন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। এর ফলশ্রুতিতে কিছু কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। ছয় লেন রাস্তা ও মীরগঞ্জ সেতু এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। অনেকেই এটা নিয়ে কাজ করেছে। তার ফলশ্রুতিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে দেড় হাজার কোটি টাকা নিজস্ব তহবিল থেকে বাজেট দিয়ে সরকার মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, সেই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে আমরা অংশগ্রহণ করেছিলাম। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে আমরা সেতু নিয়ে কথা বলেছি। আমরা ইতোমধ্যে জানি যেই কোম্পানিটি টেন্ডার পেয়েছে তাকে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে এপ্রোজ করা হয়েছে। ইট, সুরকি, বালু-পাথর, শ্রমিক সাপ্লাই কাজগুলো নিয়ে ইতোমধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে যোগাযোগের যে ভাষা ছিল তাতে চীনা কোম্পানি মোটেই সন্তুষ্ট হয়নি। কোম্পানির লোকেরা বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে বসতে চেয়েছিল। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি সরকারের ব্যাপার। এজন্য আমি তাদের সঙ্গে বসতে রাজি হইনি।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ অভিযোগ করে বলেন, দুই মাস ধরে অভিজ্ঞতার শিকার হচ্ছি। আমার ক্যাম্পেইনে নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। থানায় গেলেও মামলা নিচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না বলেও অভিযোগ করন তিনি। এগুলো আমরা আওয়ামী লীগের আমলে দেখেছি। প্রশাসন ধরেই নিয়েছে যখন ‘আওয়ামী লীগ থাকবে তখন আমরা আওয়ামী লীগ, আর যখন বিএনপি আসবে বা থাকবে তখন আমরা সেই দলের হয়ে যাব।’ একটা রাষ্ট্র এভাবে হতে পারে না। গত বছরের লড়াইটা ছিল আমরা রাষ্ট্রকে রাষ্ট্র বানাতে চাই। আমরা সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাই। যে যার জায়গা থেকে কাজ করবে।
বিএনপিকে এবং প্রশাসনকে তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার জন্য যারা যেখানে যতটুকু দায়িত্ব আছে দয়া করে সেই দায়িত্ব পালন করবেন। তারেক রহমান ৩১ দফার যে ঘোষণা দিয়েছে সংস্কার প্রস্তাবের ওপর আপনি বাংলাদেশকে ঢেলে সাজাবেন। তার আগে আমরা দেখতে চাই আপনি আপনার দলকে ঢেলে সাজাবেন। দয়া করে শুধু গণতন্ত্রের রাজনীতি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির বরিশাল জেলা ও মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে বরিশাল প্রেস ক্লাবে একই বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
মন্তব্য করুন