

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সপ্তম ব্যাচের তিন শিক্ষার্থী কক্সবাজার সমুদ্রে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় মানববন্ধন ও সতর্কতা কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচিতে অরিত্রকে খুঁজে বের করতে পুনরায় জোরালো উদ্যোগ নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং তিন শিক্ষার্থীর নামে হলের একটি ব্লক করার দাবি তোলা হয়।
ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিনের সঞ্চালনায় চাকসুর এজিএস আইয়ুবুর রহমান তৌফিক মানববন্ধনে বলেন, ‘আমরা এখনও অরিত্রকে পাইনি সে আমাদের শিক্ষার্থী, এই দেশের নাগরিক। বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে খোঁজা হলেও তা ছিল অত্যন্ত সীমিত সময়ের জন্য। যদি ড্রোনসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনুসন্ধান চালানো হতো, তাহলে তাকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীই ঘুরতে যায়, কিন্তু আর কাউকে কোনোভাবেই এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হতে চায় না। তাই রাষ্ট্রকে আরও তৎপর হয়ে যথাযথ তদন্ত করতে হবে, যাতে অরিত্রকে খুঁজে পাওয়ার যায়। ট্যুরিস্ট পুলিশকে আরও সচেতনভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের সঙ্গে যথাযথভাবে সমন্বয় করতে ব্যর্থ হয়েছে অভিভাবক হিসেবে তাদের ভূমিকা আরও শক্তিশালী হওয়া উচিত ছিল।অরিত্রের পরিবারের সঙ্গে কথা বলা ও তাদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি। তার স্মৃতি ধরে রাখতে হলের ব্লকে তার নামে করা যেতে পারে, যাতে ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীরাও তাকে জানতে পারে এবং নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন হয়।’
মানববন্ধনে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি মোহাম্মদ শোয়াইব বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীদের হারিয়েছি এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। যে রিসোর্টে তারা গিয়েছিল, সেটি ছিল সম্পূর্ণ অরক্ষিত। উন্নত বিশ্বে এ ধরনের স্থানে নিরাপত্তা নির্দেশনা পরিষ্কারভাবে দেওয়া হয়, কিন্তু এখানে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ সে দায়িত্ব পালন করেনি। এটি রাষ্ট্রেরও বড় ধরনের ব্যর্থতা, যার কারণে প্রতি বছর সম্ভাবনাময় তরুণ প্রাণ ঝরে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষে এসে আনন্দ করতে ঘুরতে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যারা এসব স্থানের দায়িত্বে থাকে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি ছিল। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদেরও নিজের নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। নিজেদের দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই কক্সবাজার ভ্রমণে গিয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের তিন শিক্ষার্থী পানিতে তলিয়ে যান। তাদের মধ্যে এম সাদমান রহমান সাবাব এবং আসিফ আহমেদকে উদ্ধার করা হলেও অরিত্র হাসানকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন