পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ১০৮ নেতাকর্মীকে সাম্প্রতিক এক রায়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির গতকাল শুক্রবারের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে তাদের এ সাজা দিলেন আদালত।
এ ঘটনায় দেশটির গণতন্ত্রের সংকট আরও ঘনীভূত হলো বলে দাবি করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে এ সাজা ঘোষিত হয়েছে, যা দেশটির রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সমালোচকরা একে গণতন্ত্রের জন্য ‘কালো দিন’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাজাপ্রাপ্ত ১০৮ জনের মধ্যে ৫৮ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে এক বছর থেকে তিন বছর পর্যন্ত সাজা দেওয়া হয়েছে। ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন সংসদ সদস্য, সিনেটর এবং জ্যেষ্ঠ নেতারা। বিশেষ করে পিটিআইর জাতীয় পরিষদ ও সিনেট সদস্য ওমর আয়ুব খান ও শিবলি ফারাজকে এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত বছরের মে মাসে দুর্নীতির মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে ইমরান খানের গ্রেপ্তার কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় হাজার হাজার সমর্থক সেনা ক্যাম্প ও সরকারি ভবনে হামলা চালায়। প্রাণ হারায় অন্তত ১০ জন। এরপর থেকেই পিটিআইর ওপর শুরু হয় নজিরবিহীন দমনপীড়ন। গত বৃহস্পতিবার ঘোষিত সর্বশেষ রায়ে বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আইয়ুব খানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, যা ইমরানপন্থি বিরোধী জোটের জন্য বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া আদালতের রায়ে ছয়জন পিটিআই আইনপ্রণেতাকে তাদের সংসদীয় আসন থেকেও অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
এ রায়ের কঠোর সমালোচনা করেছে পিটিআই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে ইমরান খানের দল বলেছে, ‘পাকিস্তানের বিচারিক ইতিহাসে এ প্রথম এমন লজ্জাজনক ঘটনা ঘটল, যেখানে বিরোধীদলের নেতাদের শুধু এ কারণে শাস্তি দেওয়া হলো যে, তারা ইমরান খানের রাজনৈতিক আদর্শ, জনগণের প্রতিনিধিত্ব ও সাংবিধানিক সংগ্রামের প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন।’ পিটিআই জানিয়েছে, তারা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন