রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারকে হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের ফসল ঘরে তোলার জন্য বাংলাদেশের বিপ্লবকে যদি সংহত করতে হয়, তাহলে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
গতকাল রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেলা ১১টার দিকে সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের নেতৃত্বে বিএনপি মহাসচিব প্রয়াত জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে যান। তারা প্রয়াত নেতার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই প্রথম শেরেবাংলা নগরে যুবদলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে চন্দ্রিমা উদ্যানে যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা রাষ্ট্রপতিকে অপসারণে তদের দাবি নিয়ে গত শনিবার মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির সর্বোচ্চ ফোরামে আলোচনা হবে। আলোচনা শেষে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগেও বলেছিলাম, গণঅভ্যুত্থানের ফসল ঘরে তুলতে বাংলাদেশের বিপ্লবকে সংহত করতে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। এটা সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত। এ জন্য প্রয়োজন দ্রুত সংস্কার শেষে নির্বাচন।
নির্বাচন বিলম্বিত হলে কোনো ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা করছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বারবার বলছি, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করা দরকার। একটি সাংবিধানিক রাজনৈতিক শক্তির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে যুবদলের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে গত ৫ আগস্ট দ্বিতীয়বার দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই সংগ্রামে যুবদলের ভূমিকা নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে যুবদল আগের চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। এ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সফল যে পরিণতি, সেখানে ভূমিকা অক্ষুণ্ণ থাকবে।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দিন জুয়েল, সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী মেডিকেল ক্যাম্প ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এ সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।