মৃত্তিকা সাহা
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৮ এএম
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

পদ্মা ব্যাংকের ভবিষ্যৎ কী

অনিয়ম ও লুটপাটে ধস
পদ্মা ব্যাংকের ভবিষ্যৎ কী

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের আর্থিক খাতে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বেসরকারি খাতের বেশ কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়ে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পদ্মা ব্যাংক, যা আগে ফারমার্স ব্যাংক নামে পরিচালিত হতো। রাজনৈতিক বিবেচনায় ওই সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের আবদারে ২০১২ সালে এই ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। শুরু থেকেই ব্যাংকটিতে ছিল অনিয়ম আর লুটপাট। তার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেই পার পেয়ে গেছে। ধীরে ধীরে ব্যাংকটির অবস্থা দুর্বল হতে থাকে। নানা ধরনের অনিয়মের কারণে ব্যাংকের গ্রাহকের আস্থা তলানিতে ঠেকলে শেষ পর্যন্ত পদ ছাড়তে বাধ্য হন মহীউদ্দীন খান আলমগীরসহ প্রভাবশালী উদ্যোক্তারা। যদিও কোনো ধরনের বিচারের আওতায় আনা হয়নি কাউকেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তে ব্যাংকটিকে নতুনভাবে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় আরেক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নাফিজ সরাফতকে। তখন ব্যাংকটির নাম পরিবর্তন করে ‘পদ্মা’ ব্যাংক করা হয়। বিদেশি বিনিয়োগ আনার শর্তে ব্যাংকটিকে নানা নীতি ছাড়ের সুবিধা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে পদ্মা ব্যাংকে প্রতিশ্রুত বিদেশি কোনো বিনিয়োগই আসেনি। আগের ধারাবাহিকতায় তিনিও অনিয়ম আর লুটপাটেই আটকে যান। গ্রাহকের আস্থা তলানিতে নেমে যাওয়া পদ্মা ব্যাংককে টেনে তুলতে শেষ পর্যন্ত সেই প্রভাবশালী ব্যবসায়ীকে সরিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তে সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বলা হয় পদ্মা ব্যাংকের শেয়ার কিনতে। এরপর শেয়ার কেনার মাধ্যমে পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনায় আসে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকসহ আইসিবি। ব্যাংকটির ৬৫ শতাংশ শেয়ার সরকারি এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হাতে চলে যায়। এতেও গ্রাহকের আস্থা ফেরেনি।

অবশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের নির্দেশে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের মার্জারের সিদ্ধান্ত হয়। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগের সরকারের সময়ে নেওয়া একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে এক্সিম ও পদ্মা ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় সম্পাদিত একীভূত হওয়ার চুক্তি বাতিল করতে যাচ্ছে ব্যাংক দুটি। দুই ব্যাংকের নিজস্ব পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, একে অন্যের সঙ্গে একীভূত হতে অনীহার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

ব্যাংক দুটির এমন ঘোষণার পর পদ্মা ব্যাংকের ভবিষ্যৎ কী হবে—এ নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা।

এদিকে, বর্তমান গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর ১১টি দুর্বল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেইসঙ্গে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টিকে থাকতে তারল্য সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টির ভিত্তিতে সবল ব্যাংকগুলো দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিচ্ছে। ৬টি ব্যাংক গত এক মাসে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা পেয়েছে। কিন্তু দুর্বলতর ব্যাংক হওয়া সত্ত্বেও পদ্মা ব্যাংকের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন গভর্নর মার্জারের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এটা আগের সরকারের সিদ্ধান্ত। তাই এটা স্বাভাবিকভাবে বাতিল বলেই ধরে নিতে হবে। তাদের মতে, আর্থিক খাতে রাজনৈতিক বিবেচনায় ও প্রভাব খাটিয়ে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত যে টেকসই হয় না, তার বড় একটি উদাহরণ এই পদ্মা ব্যাংক। কারণ, ব্যাংকটিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেনি। ব্যাংকটির ৮৫ শতাংশ ঋণই এখন খেলাপি। জমা রাখা টাকাও ফেরত পাচ্ছেন না অধিকাংশ গ্রাহক।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মঈনুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, মার্জারের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই বলার সময় আসেনি। কারণ বর্তমান গভর্নর এ বিষয়ে এখনো কোনো ঘোষণা দেননি। তবে যেহেতু এটা আগের সরকারের সিদ্ধান্ত, সেহেতু এটা বাতিল বলেই ধরে নিতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান গভর্নর ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে বেশ কয়েকটি দুর্বল ব্যাংককে গ্যারান্টির ভিত্তিতে তারল্য সহায়তা দিচ্ছেন। এরপর এসব ব্যাংকের সম্পদের মান যাচাই-বাছাই করেই বলতে পারবেন, কোন ব্যাংক এমনি ঘুরে দাঁড়াবে আর কোন ব্যাংক মার্জার করতে হবে। সেজন্য আরও কিছুটা সময় লাগবে। তবে পদ্মা ব্যাংকের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ ব্যাংকটির বিষয়েও বাংলাদেশ ব্যাংককে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে।

পদ্মা ব্যাংকের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা কালবেলাকে বলেন, মার্জারের বিষয়টি আপাতত স্থগিত রয়েছে। আগে ব্যাংকগুলোর সম্পদের মান যাচাই-বাছাই করে তারপর মার্জারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আপাতত ১১টি ব্যাংক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ শুরু করেছে। তবে পদ্মাসহ আরও বেশ কয়েকটি দুর্বল ব্যাংক রয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে পরবর্তী ধাপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যেসব ব্যাংক গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারছে না, তাদের তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় অতিরিক্ত তারল্য আছে এমন ব্যাংকগুলো থেকে অর্থ নিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। পদ্মা ব্যাংক তারল্য সহায়তা চাইলে সেটিও বিবেচনা করা হবে। কারণ আমানতকারীদের সুরক্ষা দেওয়াই বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম কাজ। সেটি অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংক দেবে। এ বিষয়ে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে আমানত বীমা তহবিল থেকে এতদিন সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা দেওয়া হতো। এখন থেকে দেওয়া হবে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা। এতে ৯৪ দশমিক ৬০ শতাংশ আমানত হিসাবধারী শতভাগ টাকা ফেরত পাবেন। এর মানে কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের সবার টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এত বেশি আমানত বীমা কাভারেজ নেই। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে আমানত বীমা তহবিল থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়। বাকি অর্থ ওই ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে ফেরত দেওয়ার বিধান রয়েছে।

এদিকে, মার্জারের বিষয়ে এক্সিম ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগের সরকারের চাপানো সিদ্ধান্তে ব্যাংক একীভূত হবে না। পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হতে চাওয়ার সিদ্ধান্তটি এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অবহিত করেছি।’

পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) কাজী মো. তালহা কালবেলাকে বলেন, ‘আমরাও এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একত্র হতে চাই না। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তারল্য সহযোগিতা পেলে পদ্মা ব্যাংক আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের ব্যাংক অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত আসার পর গ্রাহকরা আবারও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এতে ব্যাংকটি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা পেলে সেখান থেকে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে চাই। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তারল্য সহায়তাও চেয়েছি। গভর্নর আসার পর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

পদ্মা ব্যাংকে পরিচালকদের আমানত নেই

পদ্মা ব্যাংকের আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, বিদায়ী ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলোর আমানত ২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। আর বাকিটা সাধারণ আমানতকারীদের আমানত। বর্তমানে ব্যাংকটিতে পরিচালকদের আমানত নেই বললেই চলে। সব মিলিয়ে ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা হবে।

২০২৩ সাল শেষে পদ্মা ব্যাংকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) আমানত ছিল ১ হাজার কোটি টাকা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ৭৬০ কোটি টাকা। বাকি ১ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি আমানত হচ্ছে জীবন বীমা করপোরেশন, সাধারণ বীমা করপোরেশন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, তিতাস গ্যাস, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিন্যান্স ফান্ড লিমিটেড (বিআইএফএফএল), ইসলামিক ফাউন্ডেশন, নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের। এখন সরকারি এসব প্রতিষ্ঠান জমা টাকা ফেরত পাচ্ছে না, কেউ কেউ সুদও পাচ্ছে না। আর সাধারণ আমানতকারীরাও তাদের আমানত ফেরত পাচ্ছে না।

ঋণের ৮৫ শতাংশই খেলাপি:

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুন শেষে ব্যাংকটির ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৪ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ৮৫ শতাংশ। এমন বাস্তবতায় ঝুঁকিতে পড়েছেন ব্যাংকটির সাধারণ আমানতকারীরা। বর্তমানে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ কার্যক্রমও সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। মূলত ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ থেকে যে আয় করে, তা দিয়েই আমানতকারীদের সুদ পরিশোধ করে। পদ্মা ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ঋণ থেকে আয়েরও কোনো সুযোগ নেই। ফলে আমানতের সুদ পরিশোধও করা হচ্ছে না। ফলে ব্যাংকটির লোকসানের অঙ্কই কেবল বাড়ছে। আর আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় গ্রাহকের আস্থা তলানিতে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি খাত থেকে পাওয়া ২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা আমানতকে শেয়ারে রূপান্তর করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সফল হয়নি ব্যাংকটি।

পদ্মা ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ তালহা বলেছেন, সব ঋণ মন্দ নয়। ফলে সেখান থেকে কিছু আদায় হচ্ছে। বিশেষ করে গুলশান করপোরেট শাখায় বেশি আদায় হচ্ছে। তা থেকেই আমরা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী টাকা ফেরত দিচ্ছি।

ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারাও একীভূত হওয়ার পক্ষে না। তারা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা পেলে ব্যাংকটি আবার ঘুরে দাঁড়াবে। জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকটির একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা নিয়মিত বেতন পাচ্ছি। ব্যাংকের স্বার্থে সবাই একসঙ্গে পুরো টাকা না তুলে প্রয়োজন অনুযায়ী তুলছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কোনো নির্দেশনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বলা হয়েছে, গ্রাহক বাড়াতে। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করছি। তবে আস্থাহীনতাই বড় সমস্যা।

শীর্ষ খেলাপি যারা:

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকটির সবচেয়ে বড় খেলাপি গ্রাহক চট্টগ্রামের এমএএস শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ, যার কর্ণধার সারোয়ার হোসেন, মিনহাজুল হাসান ও শহিদুল হক। প্রতিষ্ঠানটির ঋণের পরিমাণ ১৪৭ কোটি টাকা। তালিকায় পরের বড় খেলাপি হলো খুলনার মিমু জুট মিল, মল্লিক অ্যাকুয়াকালচার ও মনমি অ্যাগ্রো। এই তিন প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ১০৮ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের নাহার ফারমার্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠান নাহার ফারমার্স, মায়া ফিড ও নাহার ফারমার্স রাইস ব্র্যান অয়েলের খেলাপি ঋণ ১০১ কোটি টাকা।

এ ছাড়া অ্যাপোলো ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন এবং অ্যাপোলো ট্রেডিংয়ের ঋণ ৯১ কোটি টাকা, অ্যাটলাস গ্রিন প্যাক লিমিটেডের ঋণ ৯১ কোটি টাকা, আলভী অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, প্রিয়াঙ্কা ট্রেডিং ও রোজবার্গ অটো রাইস মিলসের ঋণ ৮০ কোটি টাকা। এর বাইরে শীতল এন্টারপ্রাইজের ঋণ ৭৮ কোটি টাকা, রংপুর জুট মিলস লিমিটেডের ঋণ ৭০ কোটি টাকা, এসবি অটো ব্রিকস ও সগীর ব্রাদার্সের ঋণ ৬৩ কোটি, অ্যাগ্রো এরিনা অ্যাসোসিয়েটসের ৬২ কোটি, জয় এন্টারপ্রাইজ ও সিলভার ট্রেডিংয়ের ঋণ ৫৮ কোটি টাকা, আল ফারুক ব্যাগস লিমিটেডের ঋণ ৫৩ কোটি, গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের ৫১ কোটি, শহীদ শিপ ব্রেকিংয়ের ঋণ ৪৮ কোটি, রানা অটো ব্রিকস, সেলিম অটো ব্রিকস, এ আর ইন্টারন্যাশনাল এবং এমএইচ এন্টারপ্রাইজের ঋণ ৪৮ কোটি টাকা।

অভিভাবকশূন্য পদ্মা ব্যাংক:

শেয়ার কেনার মাধ্যমে ব্যাংকটির মালিকানায় আসে রাষ্ট্রায়ত্ত ৪ ব্যাংক ও আইসিবি। ফলে এসব ব্যাংকের এমডিরাই বর্তমানে ব্যাংকটির পর্ষদ সভায় রয়েছেন। পদাধিকার বলে সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এমডির নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ফলে বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে। কোনো পর্ষদ সভাও হচ্ছে না ব্যাংকটির। বর্তমানে শুধু তদারকিমূলক কার্যক্রমই পরিচালনা করছেন ভারপ্রাপ্ত এমডি। এদিকে গত ২১ অক্টোবর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর নতুন এমডি নিয়োগ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও গতকাল পর্যন্ত ব্যাংকটির ওয়েবসাইটে চেয়ারম্যান হিসেবে আফজাল করিমের নামই দেখা গেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দাঁড়িয়ে থাকা লরিতে বাসের ধাক্কা, চালক নিহত

আশা জাগিয়ে অল্প সময়েই ভেঙে পড়ল যুদ্ধবিরতি!

সিলেট থেকে ৪১৯ যাত্রী নিয়ে প্রথম হজ ফ্লাইট বুধবার

আজ যেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া

ব্রহ্মপুত্র ন‌দে গোসলে নেমে নিখোঁজ ২ ভাই

১১ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে বিএসএফ জওয়ান নিহত

রোববার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১১ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ খবর

১০

সীমান্তের ২০০ গজের মধ্যে বিএসএফের দুই বাঙ্কার নির্মাণ

১১

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ, কড়া বার্তা ভারতের

১২

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির এক নেতা বহিষ্কার 

১৩

সব ধর্মের মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট থাকার প্রয়াস তারেক রহমানের

১৪

মা দিবসে সব মায়েদের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান

১৫

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে কুচক্রী মহল: আবু নাসের

১৬

সাবেক রাষ্ট্রপতি পালিয়েছেন, ব্যর্থতা অন্তর্বর্তী সরকারের : আমিনুল হক 

১৭

সরকারের পদক্ষেপ ইতিবাচক, সবাইকে ঘরে ফেরার আহ্বান হাসনাতের 

১৮

চট্টগ্রামের ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না গ্রেপ্তার

১৯

বৃষ্টির সুখবর, হতে পারে কালবৈশাখীও

২০
X