বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের সব সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সব থানাকে ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এ ছাড়া তল্লাশি চৌকি ও টহল বাড়াতেও বলা হয়েছে।
বান্দরবানের দুই উপজেলায় ব্যাংকে ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও অপহরণের ঘটনার পর এবং আসন্ন ঈদ সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার থানাগুলোয় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। শুক্রবার পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া শাখার প্রধান এআইজি এনামুল হক সাগর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন উৎসব কেন্দ্র করে সবসময়ই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ঈদ সামনে রেখে আমরা ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করেছি। কারণ, উৎসব সামনে রেখে ব্যাংক লেনদেন বেশি হয়। এ ছাড়া বান্দরবানে যেহেতু ব্যাংকে ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটেছে, সেই বিষয়টি সামনে রেখেও নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি থানাকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় টহলও জোরদার করা হয়েছে। সিসিটিভি ঠিক আছে কি না, গার্ডের অস্ত্র ঠিক আছে কি না, ছুটির সময় এসব প্রতিষ্ঠানে কারা দায়িত্বে থাকবে তাদের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যেসব পুলিশ সদস্য ডিউটি পালন করবেন, তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সতর্কভাবে কাজ করব।
এদিকে বান্দরবানের পরিস্থিতি দেখতে আজ শনিবার ওই পার্বত্য জেলায় যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শনিবার সকালে উড়োজাহাজে চেপে তিনি ঢাকা থেকে রওনা হবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু জানান, মন্ত্রী পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শন করতে রুমা যাচ্ছেন। সকাল ৯টায় হেলিকপ্টারে তিনি রুমা রওনা হবেন।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বান্দরবানের আলীকদমে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথ চেকপোস্টে হামলা চালিয়েছে অস্ত্রধারীরা। ওই রাতেই বান্দরবানের থানচি বাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কেএনএফ সদস্যদের প্রায় এক ঘণ্টা গোলাগুলি হয়। এর আগে মঙ্গল ও বুধবার বান্দরবানের রুমা এবং থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্ররা। তারা ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে এবং সোনালী ব্যাংকের ম্যানাজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। লুট করে বেশকিছু অস্ত্র ও গুলি। এ ঘটনার পর সেখানে কেএনএফ সদস্যদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।