সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সমস্যা রয়েছে। সে কারণে অনেক শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ছে। কিন্তু সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারছে না। তবু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যায় এতটাই বেড়েছে যে, তা শিক্ষার মান নষ্ট করে দিচ্ছে। গুণগত মান রক্ষা হচ্ছে না।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত। এই মুহূর্তে স্থায়ী ক্যাম্পাস, স্থায়ী সনদের চেয়েও বেশি জরুরি গুণগত শিক্ষক ও মানসম্মত পাঠদান। এই শিক্ষক থাকতে হবে আনুপাতিক হারে। আমরা স্থায়ী ক্যাম্পাস, ট্রাস্টি বোর্ডের অনিয়মসহ অন্য সব বিষয় নিয়ে পড়ে আছি, অথচ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষক কতজন রয়েছেন, অধ্যাপক কতজন রয়েছেন, সেদিকে কারও নজর নেই।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্টি নিয়োগ দেওয়া হয় যাদের প্রতিপত্তি রয়েছে, যারা রাজনৈতিক দলের অনুসারী। অথচ ট্রাস্টি নিয়োগ দেওয়া উচিত শিক্ষাবিদদের মধ্য থেকে। সে কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটু-আধটু পরিবর্তনে কিছুই হবে না। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বড় সংস্কার দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় কমিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য সরকারের বিশেষ কমিটি দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আগের আইনের সংশোধন করে নতুন একটি ‘বিশেষ আইন’ করা উচিত। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কাছে থাকতে হবে আংশিক। বাকি দায়িত্বটুকু উপাচার্যকে দিতে হবে। উপাচার্য হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ। কারণ ট্রাস্টি বোর্ডকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার পুরো দায়িত্ব দিলে তারা এটিকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বানাবে। সেখানে মানসম্মত শিক্ষা নয়; বরং সনদ বিক্রি হবে। ট্রাস্টিরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টাকা দেন। সে টাকা কীভাবে দেন, কীভাবে খরচ করেন, তারও যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে।
লেখক: সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক চেয়ারম্যান, ইউজিসি