তোয়াহা হুসাইন
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

পবিত্রতা অর্জনে পানির বিভাগ ও বিধান

পবিত্রতা অর্জনে পানির বিভাগ ও বিধান

কিছু আমলের জন্য অজু-গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করতে হয়। পবিত্রতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন পবিত্র পানি। পানির বিধান সম্পর্কে ইসলামে পূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে। কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, তোমাদের তা দিয়ে পবিত্র করার জন্য।’ (সুরা আনফাল: ১১)। পবিত্র পানির ব্যাখ্যায় হাদিসে এসেছে, ‘যে পানির মৌলিক গুণাবলি (রং, স্বাদ, ঘ্রাণ) বহাল থাকে, কোনো নাপাকির সংমিশ্রণ না হয় এবং অন্য কোনো বস্তু তার ওপর প্রাধান্য বিস্তার না করে।’ (ইবনে মাজা: ৫১৪)। অর্থাৎ—১. আসমান থেকে বর্ষিত পানি। ২. কূপের পানি। ৩. ঝরনার পানি। ৪. নদীর পানি। ৫. সাগরের পানি। ৬. বরফ গলা পানি। ৭. কুয়াশার পানি। (আল ফিকহুল মুইয়াসসার: ১/৩৩)।

পবিত্রতা অর্জিত হওয়া বা না হওয়ার দিক থেকে পানিকে পাঁচ প্রকারে ভাগ করা হয়।

সাধারণ পবিত্র পানি: যে পানি নিজেও পবিত্র আবার অন্যকেও পবিত্র করতে সক্ষম, তা হলো বিশুদ্ধ পানি। (সুরা আনফাল: ১১; বোখারি: ১৪৬)

মাকরুহ পানি: যে পানি নিজে পবিত্র এবং তা থেকে পবিত্রতাও অর্জন করা যায়, তবে মাকরুহ; যেমন বিড়াল, মোরগ, ছিঁড়েফেঁড়ে খাওয়া জন্তু বা সাপের উচ্ছিষ্ট পানি। বিশুদ্ধ ও পবিত্র পানি থাকা অবস্থায় এমন পানি দিয়ে অজু-গোসল করা মাকরুহ হবে। যদি এমন পানি ছাড়া কোনো পানি না থাকে, তাহলে এ পানি ব্যবহার করা মাকরুহ হবে না। (ইবনে মাজাহ: ৩৬২; মুসনাদে আহমাদ: ৮৩২৪)

সন্দেহযুক্ত পানি: এ ধরনের পানি পবিত্র, কিন্তু তা দ্বারা পবিত্র হওয়ার বিষয়টি সন্দেহযুক্ত; যেমন গাধা অথবা খচ্চরের উচ্ছিষ্ট পানি। এ পানি পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু এর দ্বারা অজু করা ঠিক হবে কি না, তাতে সন্দেহ থেকে যায়। তাই এমন পানি ছাড়া অন্য পানি না থাকলে তা দিয়ে অজুও করতে হবে আবার তায়াম্মুমও করতে হবে। (বোখারি: ৩৮৭৭; আবু দাউদ: ৩৩১৫)

ব্যবহৃত পানি: হাদিসের স্পষ্ট বর্ণনার কারণে ব্যবহৃত পানি পবিত্র। তবে হাদিসের ভাষ্যমতে, এই পানি দ্বারা নতুন করে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে না। (বোখারি: ৫২৪৪)। ব্যবহৃত পানি বলা হয় এমন পানিকে, যা অপবিত্রতা দূর করা বা সওয়াব অর্জনের জন্য অজু ও গোসলে ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যবহারকারীর শরীর থেকে আলাদা হওয়ার পর সেই পানি ব্যবহৃত পানি বলে গণ্য হবে।

নাপাক পানি: সামান্য আবদ্ধ পানি, যাতে নাপাকির মিশ্রণ ঘটেছে, পানির মধ্যে নাপাকির প্রভাব প্রকাশ হোক বা না হোক, এমন পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে না। (বোখারি: ২৩২)। যে পানির মধ্যে নাপাকির প্রভাব প্রকাশ পায় তা কম হোক আর বেশি, ভাসমান হোক বা আবদ্ধ—সবই নাপাক পানি হিসেবে গণ্য হবে। (ইবনে মাজাহ: ৫১৪)। তাই এ পানি দিয়ে অজু বা গোসল করা যাবে না।

লেখক: মাদ্রাসা শিক্ষক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মুসিয়ালা ম্যাজিক! অকল্যান্ডকে ১০-০তে গুঁড়িয়ে দিল বায়ার্ন

ইসরায়েলিদের পালাতে বলল সেনাবাহিনী

ইরানের হাইপারসনিক ইসরায়েলের হাইফা তেল আবিব ও নেগেভ বিমানঘাঁটিতে আঘাত করেছে

কী কথা বললেন এরদোয়ান-ট্রাম্প?

ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ছাত্রের হাত ভেঙে দিলেন মাদ্রাসা শিক্ষক

কোল্ড স্টোরেজে ভাড়া বৃদ্ধি প্রতিবাদে আলু চাষিদের বিক্ষোভ

নরসিংদীতে বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত ৪

জনগণই বিএনপির মূল শক্তি : খোকন

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত হবে আন্তর্জাতিক টুরিস্ট স্পট : চসিক মেয়র

দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, যুবদল নেতাকে বহিষ্কার

১০

সিলেট ওসমানী মেডিকেলে কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

১১

‘৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পলায়ন বাংলাদেশের বিপ্লবের ইতিহাসের স্বর্ণালী দিন’

১২

খামেনির ওপর হামলার বিষয়ে যে অবস্থান নিলেন ট্রাম্প

১৩

এবার এইচএসসি পরীক্ষায় আসনের দূরত্ব বাড়ছে

১৪

ইসরায়েলের হামলা নিয়ে আসল সত্য বললেন ইরানের প্রেসিডেন্ট

১৫

ইরানে হামলা ঠেকাতে বিল আনছেন মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স

১৬

শেষ মুহূর্তে ক্লাব বিশ্বকাপে ঢুকতে চেয়েছিল বার্সা, ফিফা বলল ‘না’

১৭

তফশিল ঘোষণার সময় জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার

১৮

স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ

১৯

আ.লীগ গণঅধিকার পরিষদকে ১০টি আসন অফার করেছিল : ফারুক হাসান

২০
X