কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩২ এএম
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সেই দিনটি

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন

স্মরণ
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাঙালি চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী। তার জন্মদিন রোকেয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দে জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রোকেয়া খাতুন, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, মিসেস আর এস হোসেন নামেও লিখতেন এবং পরিচিত ছিলেন।

ঊনবিংশ শতকে নারীরা যখন অবরোধবাসিনী, তখন নারী শিক্ষার পাশাপাশি তাদের অধিকারের দাবিতে উচ্চকিত হন তিনি। ২০০৪ সালের বিবিসি বাংলার ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি’ জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হন বেগম রোকেয়া। বেগম রোকেয়ার ১৮৯৮ সালে বিয়ে হয় বিহারের ভাগলপুর নিবাসী উর্দুভাষী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে। তিনি ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, তদুপরি সমাজসচেতন, কুসংস্কারমুক্ত এবং প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন। উদার ও মুক্তমনের অধিকারী স্বামীর উৎসাহ ও সহযোগিতায় রোকেয়া দেশি-বিদেশি লেখকদের রচনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পান এবং ক্রমেই ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। তার সাহিত্যচর্চার সূত্রপাতও ঘটে স্বামীর অনুপ্রেরণায়। তবে রোকেয়ার বিবাহিত জীবন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ১৯০৯ সালের ৩ মে সাখাওয়াত হোসেন মারা যান। এর আগে তাদের দুটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে অকালেই মারা যায়। ১৯০২ সালে পিপাসা নামে একটি বাংলা গল্প লিখে সাহিত্যজগতে তার অবদান রাখা শুরু হয়। এরপর একে একে লেখেন মতিচূর-এর প্রবন্ধগুলো এবং সুলতানার স্বপ্ন-এর মতো নারীবাদী বিজ্ঞান কল্পকাহিনি। রোকেয়া তার নারীবাদী চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন মতিচূর প্রবন্ধ সংগ্রহের প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ডে। সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী ইত্যাদি তার সৃজনশীল রচনা। তার রচিত সুলতানার স্বপ্নকে বিশ্ব নারীবাদী সাহিত্যে একটি মাইলফলক ধরা হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়ার আগে তার লেখাগুলো নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ছোটগল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, বিজ্ঞান কল্পকাহিনি ও শ্লেষাত্মক রচনায় রোকেয়ার স্টাইল ছিল স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। উদ্ভাবনা, যুক্তিবাদিতা ও কৌতুকপ্রিয়তা তার রচনার সহজাত বৈশিষ্ট্য। তার প্রবন্ধের বিষয় ছিল ব্যাপক ও বিস্তৃত। বিজ্ঞান সম্পর্কেও তার অনুসন্ধিৎসার পরিচয় পাওয়া যায় বিভিন্ন রচনায়। মতিচূর প্রবন্ধ গ্রন্থে রোকেয়া নারী-পুরুষের সমকক্ষতার যুক্তি দিয়ে নারীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বী অর্জন করে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় আহ্বান জানান এবং শিক্ষার অভাব নারী-পশ্চাৎপদতার কারণ হিসেবে তুলে ধরেন। তার সুলতানার স্বপ্ন নারীবাদী ইউটোপিয়ান সাহিত্যের ক্ল্যাসিক নিদর্শন বলে বিবেচিত। অবরোধবাসিনীতে তিনি অবরোধ প্রথাকে বিদ্রুপবাণে জর্জরিত করেন। তার প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাসের মধ্য দিয়ে তিনি নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আর লিঙ্গসমতার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। হাস্যরস আর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের সাহায্যে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীর অসম অবস্থান ফুটিয়ে তোলেন। তার রচনা দিয়ে তিনি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন, ধর্মের নামে নারীর প্রতি অবিচার রোধ করতে চেয়েছেন, শিক্ষা আর পছন্দ অনুযায়ী পেশা নির্বাচনের সুযোগ ছাড়া যে নারীর মুক্তি আসবে না, তাই তিনি বলেছেন। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া কলকাতায় মারা যান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুপুরের মধ্যে যেসব অঞ্চলে ঝড় হতে পারে

৯ জনকে হত্যা-ধর্ষণের পর ধরা, সেই ‘টুইটার খুনি’র মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

২৯তম বিসিএসে ২১ ভুয়া ক্যাডার

খাবার টাটকা রাখতে ফ্রিজের তাপমাত্রা কত রাখবেন

গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের বড় ১০ খবর

টিভিতে আজকের খেলা

চট্টগ্রামে বিএনপি নেতা বহিষ্কার

যুদ্ধ আমাদের ইমানি শক্তি বাড়িয়েছে : ইরানি আলেমদের প্রতিক্রিয়া

রাশিয়ায় ইরানি শিশুর সঙ্গে এ কেমন আচরণ, সারা বিশ্বে তোলপাড় (ভিডিও)

২৭ জুন : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১০

ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের

১১

২৭ জুন : আজকের নামাজের সময়সূচি

১২

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মানববন্ধন আজ 

১৩

পরীক্ষার সুযোগ পেতে পারেন সেই ছাত্রী

১৪

সাতসকালে রাজধানীতে ছিনতাইয়ের শিকার কালবেলার সাংবাদিক

১৫

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৬

সুবর্ণচরে সাগরিকার সফল উদ্যোক্তাদের সম্মাননা প্রদান

১৭

ইসরায়েলের হত্যা পরিকল্পনা থেকে যেভাবে বেঁচে গেলেন খামেনি

১৮

ফজরের পর যে গুরুত্বপূর্ণ আমল করবেন

১৯

গায়িকা কনার বিচ্ছেদ নিয়ে সালমার পোস্ট

২০
X