গণপরিবহন নারীবান্ধব হয়ে উঠতে পারেনি আজও। এর থেকে দুঃখজনক আর কী হতে পারে! এমনিতেই গণপরিবহন নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। গণপরিবহন একজন নারীর জন্য কতটা অনিরাপদ, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। বর্তমানে দেশের সব সেক্টরে মেয়েরা ছেলেদের সঙ্গে সমানভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কর্মস্থল বা স্কুল-কলেজে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে গণপরিবহনগুলোয় মেয়েদের নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শহরের বাসগুলোতে ওঠার পর থেকে নামার আগ পর্যন্ত নানা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং সম্মুখীন হতে হয় নারীদের। অতি দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, বাসে উঠতে গেলে কন্ডাক্টর বাসে উঠানোর বাহানায় গায়ে হাত দেওয়া থেকে শুরু করে পাশের সিটে বসে থাকা বাবার বয়সী লোকটা পর্যন্ত খারাপ স্পর্শ থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। সবাই যে এমন, তা কিন্তু নয়। আমাদের দেশে একসময় নারীর জন্য বিশেষভাবে তৈরি বাস সার্ভিস বা নারী বাস দেশের বিভিন্ন শহরে তাদের যাতায়াত সুবিধা ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তৈরি করা হয়। বাংলাদেশে নারীদের জন্য বাস সার্ভিসের ধারণা শুরু হয় ২০১১ সালের দিকে। প্রথমে ঢাকা শহরে বিশেষ কিছু রুটে তাদের সেবায় বাস চালু হয়। এসব বাসে নারীদের জন্য আলাদা সিট, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, নারীদের বাস সার্ভিসের অপ্রতুলতায় এই সেবা নিতে পারছে না দেশের অধিকাংশ নারী যাত্রী। তখন তাদের বাধ্য হয়েই সব সমস্যা মেনে নিতে হচ্ছে এবং এ অবস্থার মধ্য দিয়েই হাজির হতে হয় তাদের কর্মস্থলে।
নারীর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিশেষ বাস সার্ভিস বাড়ানো উচিত। এ সেবার আওতায় যেন সব নারী থাকে, তার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের প্রতিটি শহরে এ সেবা চালু করতে হবে। বাইরে যারা কাজ করতে বের হয় বা শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায়, তাদের বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবারের হয়ে থাকে। তাই এই সার্ভিসটি যেন মেয়েদের জন্য ব্যয়বহুল না হয়, সেদিকটায় বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
ঢাকাসহ দেশের সব শহরে এ সেবাটি চালু করতে হবে। মেয়েদের নিরাপত্তার বৃহত্তর স্বার্থে এদিকে বিশেষ নজর দেওয়া একান্ত জরুরি।
তানিয়া আক্তার, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়