সালমা ফাইয়াজ
প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

নববর্ষে ছুটির প্রণেতা

নববর্ষে ছুটির প্রণেতা

আজ পহেলা বৈশাখ। বর্ণিল উৎসবে মাতোয়ারা হবে সারা দেশ। এ উপলক্ষে রাজধানী এবং দেশজুড়ে থাকছে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩২’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। শের-ই বাংলা ফাউন্ডেশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ উৎসবে নতুন রূপ নিয়ে আসবে আশা করি।

আমাদের অনেকে হয়তো ভুলেই গিয়েছিলাম পহেলা বৈশাখ আড়ম্বরপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পালনের সূচনা করেছিলেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। শের-ই বাংলা ফাউন্ডেশন সরকারের কাছে তাকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি প্রদানের আবেদন জানিয়েছে এবং তারই ধারাবাহিকতায় ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে দেশব্যাপী বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় বাংলা নববর্ষ পালিত হোক’—এই জনদাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে যোগাযোগ করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে।

বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ দেশব্যাপী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাণের উৎসব হিসেবে পালিত হয়। বাংলা একাডেমি কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে প্রথম সরকারি ছুটির ঘোষণা করেন তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আবুল কাশেম ফজলুল হক। তিনি এ ঘোষণা করেন ১৯৫৪ সালে। সে বছর থেকেই ব্যাপক হারে গ্রাম-শহর জুড়ে বাংলা নববর্ষ পালন, আনন্দ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তার আগে তা সীমিত ছিল গ্রামের মেলা, বাউল গান, জারি গানের অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, চৈত্রসংক্রান্তি শেষে হালখাতার মধ্যে।

আবুল কাশেম ফজলুল হক যিনি বাঙালি জাতি রাষ্ট্রের প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা অবিভক্ত বাংলার স্বাধীনতার মুক্তির দিশারি। তার সময়কালে অন্যতম বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিক হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল। তিনি ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগ হেরে গেলে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন। এ কে ফজলুল হক ছিলেন বাঙালি জাতিসত্তার অন্যতম প্রতীক।

ফজলুল হক একাধারে ছিলেন মুসলিম লীগ ও কংগ্রেস সদস্য। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির দ্যোতনার অন্যতম মুখ। অবিভক্ত বাংলায় তিনি গড়েছিলেন নিখিলবঙ্গ প্রজা সমিতি। সর্বশেষ তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল কৃষক শ্রমিক পার্টি। কারণ তিনি ছিলেন কৃষক দরদি মানুষ। আর তার কৃষক প্রেম থেকেই বাঙালি জাতিসত্তার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। তিনি বাংলার কৃষকদের চিনেছিলেন খুব কাছ থেকে। এই অসাধারণ বাঙালি ব্যক্তিত্বের হাত ধরেই বাংলার নববর্ষ পহেলা বৈশাখ সবার কাছে সর্বজনীন হয়ে উঠেছে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের কাছে শের-ই বাংলা ফাউন্ডেশন, শের-ই বাংলা এ কে ফজলুল হকের পরিবার ও পুরো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে আবেদন—এই দিনটি সাড়ম্বরে নতুন করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পালনের সূচনা হোক। তাকে যথাযথ মর্যাদায় স্বীকৃতি প্রদান করা হোক। রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংস্থার তত্ত্বাবধানে দেশব্যাপী বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় পহেলা বৈশাখ প্রতি বছর পালিত হোক।

লেখক: সমাজকর্মী

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গুমের মামলায় সশরীরে নয়, ভার্চুয়াল হাজিরা চান গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তারা

পেরুর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ত্রিদেশীয় সিরিজে মাঠে নামছে বাংলাদেশ, টিকিটের মূল্য প্রকাশ

‘শ্রমিক শোষণের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি’

ইতিহাস গড়া তাইজুলকে নিয়ে যা বললেন সাকিব

ট্রাম্পের হবু পুত্রবধূর সঙ্গে নাচলেন রণবীর

উপাচার্য-ভিপির মন গলাতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের ব্যতিক্রমী মোনাজাত 

শেষ হলো রূপায়ণ আর্মড ফোর্সেস ডে কাপ গলফ টুর্নামেন্ট

‘আঁচলে ফল বা পাতা পড়লেই মিলবে সন্তান’

বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার অবস্থান কত

১০

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১১

তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে

১২

 বিশ্বের বৃহত্তম ইসলামিক সংগঠনের নেতার পদত্যাগ দাবি

১৩

২৩ নভেম্বর : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

১৪

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৫

শুটিংয়ের প্রলোভনে মডেলকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, অতঃপর...

১৬

কেয়ামতের দিন যে ৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্বয়ং মহান আল্লাহ বাদী হবেন

১৭

বাম চোখ লাফালে কী হয়? যা বলছেন বিশেষজ্ঞ আলেম

১৮

২৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৯

লবণ নাকি চিনি, কোনটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে?

২০
X