বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিপত্য (হেজিমনি) হুমকির মুখে পড়েছে। ব্রিকসের নেতৃত্বে বিশ্ব একটি ‘মাল্টিপোলার ওয়ার্ল্ড’ গঠনের পথে অগ্রসর হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর বিশ্বের অধিকাংশ দেশের বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব শুল্কযুদ্ধ শুরু করে দিয়েছেন, যা নিয়ে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত, ব্রিকস দেশগুলো তার এই শুল্কযুদ্ধের প্রত্যক্ষ শিকার। ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপিত হয়েছে। ভারতের ওপর গত ২৭ আগস্ট শুল্কের হার ৫০ শতাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। রাশিয়ার ক্রুড-অয়েল কম দামে কিনে সেটা রিফাইন করে বেশি দামে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে বিপুল মুনাফা অর্জনের অভিযোগে ভারতকে জরিমানা হিসেবে ২৫ শতাংশ বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। চীনের ওপর শুল্কের হার ৯০ দিনের জন্য ৩০ শতাংশে স্থগিত করা হলেও সেটা যে আবার বাড়ানো হবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে, রাশিয়ার ৩০০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ জব্দ করা হয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগে ইরানের ওপরও নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা ২০১০ সাল থেকে জারি রেখে ইরানের অর্থনীতিকে ধসিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবারের শুল্কযুদ্ধ থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর মতো মার্কিন-মিত্র রাষ্ট্রও ছাড় পায়নি। যুক্তরাষ্ট্রকে ডিঙিয়ে চীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতি হয়ে যাচ্ছে—এ বাস্তবতা আসলে ট্রাম্প কোনোমতেই মেনে নিতে পারছেন না। ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ স্লোগান দিয়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অতএব, যেভাবেই হোক তিনি ব্রিকসের উত্থান নস্যাৎ করতে বদ্ধপরিকর। ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ভারত চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে, যা ব্রিকসকে শক্তিশালী করবে।
সম্প্রতি ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে ব্রিকসের সম্মেলন সমাপ্ত হয়েছে। ব্রিকসের ১১ সদস্য দেশসহ ৩৫টি দেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সম্মেলনে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলোর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের পরিবর্তে ব্রিকসের নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহারের যে সিদ্ধান্ত রাশিয়ার কাজান সম্মেলনে গৃহীত হয়েছিল, তা ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তা আবারও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এই ব্রিকস কারেন্সি বিশ্ববাণিজ্যে ডলারের আধিপত্য অনেকখানি খর্ব করবে বলে দাবি করা হচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর অর্থনীতির মালিক যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নাগপাশের সবচেয়ে প্রভাবশালী সাম্রাজ্যবাদী হাতিয়ার হলো মার্কিন ডলার, যে নাগপাশ থেকে তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশই নিজেদের মুক্ত রাখার অবকাশ বা সুযোগ এখনো সৃষ্টি হয়নি। ১৯৪৪ সালের ব্রেটন উডস সম্মেলনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৯৪৭ সালে সৃষ্ট ইন্টারন্যাশনাল মোনেটারি ফান্ড (আইএমএফ) বা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মাধ্যমে এই হাতিয়ারের জাল-বিস্তার শুরু হয়েছিল এর পূর্ববর্তী ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিংয়ের পরিবর্তে মার্কিন ডলারকে বিশ্বের যাবতীয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মুদ্রা-বিনিময় ও অর্থ-লেনদেনের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও বহুল-ব্যবহৃত মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে। আইএমএফের সিস্টেমে যুক্তরাষ্ট্রের একক গ্যারান্টির ভিত্তিতে ৩৫ ডলারে এক আউন্স সোনার দাম নির্ধারণ ও স্থিতিশীল রাখার মাধ্যমে এই ‘ফিক্সড এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেম’ চালু হয়েছিল। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত আইএমএফের ফিক্সড এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেম কাজ করলেও বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকের শেষের দিকে ‘ডলার ক্রাইসিস বা গোল্ড ক্রাইসিসের’ সময় সিস্টেমটা ভেঙে পড়ে। স্বর্ণের দাম ওই সময় হুহু করে বাড়তে বাড়তে এক আউন্স ৩০০ ডলার ছাড়িয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্র ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখার দায়িত্ব পালনে অক্ষমতা প্রকাশ করে, যার ফলে আইএমএফের ‘ফিক্সড এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেম’ ভেস্তে যায়। এর পরিবর্তে চালু করা হয় ‘ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেম’, যেখানে স্বর্ণের দাম এবং বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বৈদেশিক দাম নির্ধারণ আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। (২০২৫ সালে এক আউন্স স্বর্ণের দাম ৩৭০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে)। ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেমের কারণে ক্রমে ক্রমে সারা বিশ্বে পরম শক্তিশালী হয়ে ওঠে মুদ্রা বেচাকেনার বাজার। ২০২৫ সালে এই ‘কারেন্সি কেনাবেচার বাজারে’ মুদ্রা লেনদেন প্রতিদিন চার ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাচ্ছে, যেখানে এক বছরে ‘ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট’ (এফডিআই) হয় ৮০০ বিলিয়ন ডলারের মতো। চলমান তথ্যপ্রযুক্তি-বিপ্লবের কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারের দক্ষতা আকাশচুম্বী হয়ে পড়ছে ক্রমেই। বিশ্বমুদ্রা বাজারের একাধিপত্য ৫৩ বছর ধরে বহাল রেখেছে মার্কিন ডলার।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিশ্বের জনগণ প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের প্রাণহানিসহ যে ভয়াবহ ধ্বংসলীলার সম্মুখীন হয়েছিল, তার ফলে ঔপনিবেশিক কাঠামো পরিত্যাগ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল মনে করা হলেও প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে সাম্রাজ্যবাদ শুধু রূপ ও কৌশল পরিবর্তন করেছে, সাম্রাজ্যবাদ এখনো বিশ্বরাজনীতি ও অর্থনীতির প্রধান নিয়ামক হিসেবে অটুট রয়ে গেছে। তৃতীয় বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ ১৯৪৫-৭৫ পর্বে সরাসরি ঔপনিবেশিক দখলদারি থেকে ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জন করলেও সাম্রাজ্যবাদী-রাজনৈতিক আধিপত্য ও অর্থনৈতিক পরনির্ভরতার এক অবিচ্ছেদ্য জালে প্রায় সব দেশ গত ৮০ বছর ধরে আটকা রয়েছে। বিশ্বসাম্রাজ্যবাদের এই ‘আধিপত্য-পরনির্ভরতার’ জটাজালে সবচেয়ে ক্ষমতাধর অধিপতির ভূমিকা পালন করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের বিশ্ব-আধিপত্য (হেজিমনি) এখনো বহাল রয়েছে।
মার্কিনিদের রপ্তানি আয় আমদানি ব্যয়ের চেয়ে প্রতি বছর অনেক কম হওয়ায় তাদের ব্যালান্স অব পেমেন্টসের কারেন্ট অ্যাকাউন্টে নিয়মিতভাবে ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মোট বাণিজ্য-ঘাটতি এরই মধ্যে ৩৭ ট্রিলিয়ন (৩৭ লাখ কোটি) ডলার অতিক্রম করেছে। অন্য কোনো দেশ এরকম ঘাটতিতে পড়লে ওই দেশের মুদ্রার বৈদেশিক মানে ধস নামত, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে একেবারেই ব্যতিক্রম। তাদের মুদ্রা ডলার যেহেতু বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের বৈদেশিক-মুদ্রা-রিজার্ভের প্রধান অংশ তাই কোনো দেশই চায় না ডলারের বৈদেশিক মানে ধস নামুক। উদাহরণ হিসেবে চীনের ব্যাপারটা উল্লেখ করা যেতে পারে—চীন এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় বৈদেশিক মুদ্রা-রিজার্ভের মালিক হওয়া সত্ত্বেও তারা নিজেদের মুদ্রাকে ডলারের সঙ্গে একটা স্থিতিশীল সম্পর্কে বহাল রাখতে চায়। নয়তো একদিকে তাদের কাছে ডলারের যে বিশাল মজুত রয়েছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে; অন্যদিকে তাদের রপ্তানি পণ্যের প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা ক্ষুণ্ন হবে। বিশ্বের সবচেয়ে ঋণগ্রস্ত দেশ হয়েও যুক্তরাষ্ট্র এখনো সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখতে সমর্থ হচ্ছে মার্কিন ডলারের এ ‘আনচ্যালেঞ্জড হেজিমনি’র কারণে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের মুদ্রা টাকার বৈদেশিক মান ডলারপ্রতি অফিশিয়ালি ৪.৭৬ টাকা হলেও আনঅফিশিয়ালি ছিল ১৫ টাকা। এখন এক ডলারের বাজার দাম ১২১-১২২ টাকা। গত তিন বছরে টাকার বৈদেশিক মান ৪২ শতাংশেরও বেশি অবচয়ন হলেও গত ৯ মাস ধরে ডলারের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এর ফলে স্বৈরাচারী হাসিনার সরকারের আমলে আমাদের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গিয়েছিল এবং আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও বড়সড় ধস নেমেছিল। অথচ আমরা এখনো ‘ফ্রিলি-ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেম’ চালু করিনি, ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্টে টাকা এখনো অবাধে বিনিময়যোগ্য করা হয়নি (অবশ্য গত কয়েক মাস ধরে রিজার্ভের এ পতন থামানো গেছে)। শুধু আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি না, ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য সব দেশের সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়াস জারি রাখা সত্ত্বেও দিন দিন ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার এ প্রক্রিয়াকে থামাতে অসমর্থ হচ্ছে প্রায় সব দেশ (পাকিস্তানে এক ডলারের দাম এখন ২৮০ রুপির আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে, যার ফলে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার এখন ৩০ শতাংশে পৌঁছে গেছে)। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ এজেন্ট আইএমএফ তৃতীয় বিশ্বের সব দেশের ওপর সার্বক্ষণিক চাপ অব্যাহত রেখে চলেছে ক্রমেই ডলারের দাম দেশীয় মুদ্রায় বাড়ানোর ব্যাপারে। তাদের মতে, সব তৃতীয় বিশ্বের দেশে ডলারের তুলনায় মুদ্রাগুলো ‘অতিমূল্যায়িত’ রয়ে যাচ্ছে, তাই মুদ্রার অবচয়ন (ডেপ্রিসিয়েশন) আইএমএফের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে সবসময় অন্তর্ভুক্ত থাকে। মনে রাখা প্রয়োজন, আইএমএফ সার্বক্ষণিকভাবে এ দাবি করে চলেছে মার্কিন ডলারকে মদদ দেওয়ার জন্য। ব্রিকস নিজস্ব কারেন্সি চালু করার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মার্কিন ডলারের বিশ্ব-আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করার প্রক্রিয়া শক্তিশালী করে তুলেছে। ক্রয়ক্ষমতা সাম্যনীতির ভিত্তিতে ব্রিকস দেশগুলোর সম্মিলিত জিডিপি এখন বিশ্বের মোট জিডিপির ৪০ শতাংশে পৌঁছে গেছে এবং এই অনুপাত ক্রমবর্ধমান। বিশ্বের জনসংখ্যার ৫৭ শতাংশ ব্রিকসের ১১টি সদস্য দেশের অধিবাসী। রাশিয়ার কাজান সম্মেলনে আরও ১৩টি দেশকে ব্রিকসের ‘পার্টনার কান্ট্রি’ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। মনে হচ্ছে, আগামী এক দশকে ডলারের বিশ্ব-আধিপত্য খর্ব হয়ে যাবে।
আমরা অনেকেই খেয়াল করি না যে, বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি পুঁজি পাচার হয় যুক্তরাষ্ট্রে। বিশ্বের সব দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে অভিবাসনের স্বর্গরাজ্য বিবেচিত হয় যুক্তরাষ্ট্র। হাসিনার স্বৈরশাসনের সময় বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর যে ১৫-১৬ বিলিয়ন ডলার চারটি প্রধান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছিল বলে ধারণা করা হয়, সেগুলোরও প্রধান গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ চারটি প্রক্রিয়া হলো—১. আমদানিতে ওভারইনভয়েসিং, ২. রপ্তানিতে আন্ডারইনভয়েসিং, ৩. রপ্তানি আয় দেশে ফেরত না আনা এবং ৪. হুন্ডি পদ্ধতিতে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে রেখে দিয়ে তার বিনিময়ে দেশের পুঁজি পাচারকারীরা হুন্ডিওয়ালাদের কাছে সমপরিমাণ টাকা পরিশোধ করে সহজেই অর্থ পাচার সম্পন্ন করা। সাবেক হাসিনা সরকারের আমলে এই হুন্ডি প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি ব্যাংকের ঋণ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছিল এবং প্রথমোক্ত তিনটি প্রক্রিয়ার তুলনায় ওই সময় হুন্ডি পদ্ধতিতে অর্থ পাচার সবচেয়ে বহুল-ব্যবহৃত প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছিল। এর মানে, আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ ওই সময় ডলার-সাম্রাজ্যবাদের অনেক বড় শিকারে পরিণত হয়েছিল। পতিত স্বৈরশাসক হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য আগ্রহী হলেও সফল হয়নি। এখন ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ব্রিকসের ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কিন্তু এটা বলতেই হবে যে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিশ্ব-আধিপত্য খর্ব করে ভবিষ্যতে যদি ব্রিকস একটি ‘মাল্টিপোলার ওয়ার্ল্ড’ গড়ে তুলতে পারে, তাহলে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশও ডলার সাম্রাজ্যবাদের একটি বিকল্প খুঁজে পাবে।
লেখক: সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি
একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর
অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
মন্তব্য করুন