আর কে চৌধুরী
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৪, ০১:৫৮ এএম
আপডেট : ১৬ জুন ২০২৪, ১২:০২ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দূর হোক মনের পশুত্ব ও অহংবোধ

দূর হোক মনের পশুত্ব ও অহংবোধ

পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ ঈদের অন্যতম অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। বিশ্বাসীদের আদিপিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার ছেলে ইসমাইল (আ.)-এর পবিত্র স্মৃতিবিজড়িত কোরবানি প্রথার সঙ্গে। ঈদুল আজহা এমন এক উৎসব ও ইবাদত, যা সংঘাতময় বিশ্বে মানবজাতিকে শান্তির পথ দেখাতে পারে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর আগে সর্বশক্তিমান আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে তার প্রিয় বস্তু কোরবানির নির্দেশ দেন। আল্লাহর প্রতি সংশয়াতীত আনুগত্যে ইব্রাহিম (আ.) প্রিয় ছেলে ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানির সিদ্ধান্ত নেন। ঐশী নির্দেশ পালনে অপত্যস্নেহ বাধা হয়ে যাতে না দাঁড়ায় তা নিশ্চিত করতে নিজের চোখ বেঁধে প্রিয় ছেলেকে কোরবানির সময় আল্লাহর ইচ্ছায় ইসমাইল (আ.)-এর বদলে একটি মেষ বা দুম্বা কোরবানি হয়। ফেরেশতা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে জানান, আল্লাহ তার আনুগত্যে সন্তুষ্ট হয়েছেন।

স্রষ্টার প্রতি আনুগত্যের এ মহিমান্বিত ঘটনার অনুসরণে মহানবী (সা.)-এর অনুসারীদের মধ্যে ১৪০০ বছর ধরে পালিত হচ্ছে কোরবানির প্রথা। কোরবানি নিছক পশু জবাই নয়; মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকে যে পশুত্ব ও অহংবোধ, তা বিসর্জন দিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হওয়াই কোরবানির শিক্ষা। এ বিষয়ে আল্লাহর ঘোষণা, পশুর রক্ত বা মাংস নয়, তার কাছে পৌঁছে বান্দার তাকওয়া। সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের উৎস মহান আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী জীবন গড়ার মধ্যেই রয়েছে কোরবানির মাহাত্ম্য। তা উপেক্ষা করে কোরবানির নামে অহংবোধের কোনো সুযোগ নেই। সারা দেশে এখন চলছে ঈদুল আজহার প্রস্তুতি। কোরবানিতে পরিবেশ যাতে দূষিত না হয়, সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। উপলব্ধি করতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অনুষঙ্গ। কোরবানির ক্ষেত্রে পরিবেশ যাতে নোংরা না হয়, সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। মুসলমানের পাশাপাশি খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের কাছেও হজরত ইব্রাহিম পরম শ্রদ্ধার পাত্র। হানাহানিমুক্ত বিশ্ব গড়তে মিল্লাতে ইব্রাহিম (আ.)-এর মধ্যে শান্তি ও সমঝোতার পরিবেশ গড়ে উঠলে, তা হবে মানবজাতির জন্য এক বড় অর্জন।

কোরবানির ঈদে নতুন করে মানুষের মধ্যে সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হয়। ঈদুল আজহা এলেই তারা সব ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে যায়। নিজেদের আনন্দে অন্যদের শরিক করা ঈদুল আজহার শিক্ষা। কোরবানিকৃত পশুর গোশত তিন অংশে ভাগ করে এক অংশ নিজের জন্য সংরক্ষণ, দ্বিতীয় অংশ আত্মীয়স্বজনকে প্রদান এবং তৃতীয় অংশ সমাজের অভাবগ্রস্ত ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া ইসলামের বিধান। আল্লাহতায়ালা কোরবানির পশুর গোশতের একটি অংশ দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষকে দান করার নির্দেশ দিয়েছেন। ত্যাগ, তিতিক্ষা ও প্রিয় বস্তু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করা কোরবানির তাৎপর্য। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক।

লেখক: সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের উপদেষ্টা

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জিটিওকে সাক্ষাৎকার / বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষী সহিংসতা নেই : ড. ইউনূস

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে জাতিসংঘ মহাসচিবের পূর্ণ সমর্থন

১৬ ফুটের এই দুর্গা প্রতিমা নজর কাড়ছে সবার

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সহজ ৬ উপায়

মৃৎশিল্পে অবদানে সম্মাননা পেলেন ১২ শিল্পী

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

আজ ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ

কাতারকে ক্ষতিপূরণ দিতে ইচ্ছুক ইসরায়েল

সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরি দিচ্ছে ইউনাইটেড হাসপাতাল

১০

ঢাকায় কখন হতে পারে বজ্রবৃষ্টি, জানাল আবহাওয়া অফিস

১১

৩০ সেপ্টেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১২

সেভেন রিংস সিমেন্টের ‘জেনে গড়ি, নিজের বাড়ি’ শীর্ষক সম্মেলন

১৩

ওসমানী হাসপাতালে ট্যাংকির ঢালাই ভেঙে কর্মী নিহত

১৪

জামিন পেলেন বাসদের সেই দুই নেতা

১৫

ঢাকা বিভাগেই থাকতে চান শরীয়তপুরবাসী

১৬

তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে সম্প্রীতির : সেলিমুজ্জামান

১৭

লালমনিরহাটে দুর্গাপূজার উদ্বোধন করলেন হাঙ্গেরি দূতাবাসের কনসাল 

১৮

চট্টগ্রামে এভারকেয়ার হাসপাতালে বিশ্ব হার্ট দিবস উদযাপন

১৯

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার ছুরিকাঘাতে জামায়াত নেতা খুন

২০
X