কানপুরে পা রাখার আগেই খবরটা ছিল চমকে যাওয়ার মতো। ভারত-বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্ট ঘিরে ধর্মঘট ডেকে বসে স্থানীয় সংগঠন হিন্দু মহাসভা। তবে কানপুর শহরের বিভিন্ন অংশ ঘুরে তেমন কিছুই চোখে পড়েনি। যে যার দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততার মধ্য দিয়ে দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন। উল্টো তিন বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরাতে দর্শকদের মধ্যে টিকিট পেতেও এক প্রকার প্রতিযোগিতা দেখা গিয়েছে। এমন হুমকির মধ্যে নড়েচড়ে বসেছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় চারপাশ ঘিরে রেখেছেন তারা। নির্দিষ্ট পোশাকের বাইরেও সাদা পোশাকে মিলেছিল অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেখা।
চেন্নাই থেকে কানপুর আসার পর একদিন হোটেলেই কাটিয়েছিলেন রোহিত শর্মা, নাজমুল হোসেন শান্তরা। বুধবার সকালে আনুষ্ঠানিক অনুশীলন করেন তারা। এ সময় কানপুর গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের আশপাশে সরেজমিন ঘুরে দেখেছে কালবেলা। তেমন কোনো বিক্ষোভ কিংবা লোক জড়ো হওয়ার ঘটনা দেখা যায়নি। তার পরও স্টেডিয়ামের প্রতিটি গেটে ছিল পুলিশের কঠোর সতর্ক অবস্থান। মাঠে প্রবেশের কার্ড থাকার পরও বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট পেরিয়ে স্টেডিয়ামে আসতে হয়েছিল মাঠকর্মী থেকে শুরু করে সংবাদকর্মীদেরও।
গ্রিন পার্কের ড্রেসিংরুমের পাশে ও ওপরের গ্যালারিতে কয়েকশ নিরাপত্তাকর্মী দেখা গেছে। মাঠে বেশ কয়েকবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও সরব উপস্থিতির দেখা মেলে। নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছিলেন উত্তর প্রদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিসিপি রাজেশ শ্রীবাস্তব। পুরো মাঠ প্রদক্ষিণ শেষে তিনি জানিয়েছেন, তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করেছেন তারা। রাজেশ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘এখানে তিন ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। একটি হচ্ছে আইসোলেশন কর্ডন যেটি মাঠ, পিচ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা দিচ্ছে। বাকি দুটি ধরনের মাধ্যমে প্যাভিলিয়নসহ স্টেডিয়ামের রাস্তাসহ আশাপাশের এলাকায় নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি কর্ডনই তিন-চারটি ভাগে বিভক্ত। কাজ করছে এক হাজার পুলিশ, ক্যামেরা রয়েছে একশর মতো।’
কানপুর টেস্ট ঘিরে হুমকি থাকলেও পুলিশ খুব একটা উদ্বিগ্ন নয়। প্রচুর নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকায় কোনো সমস্যাও দেখছেন না পুলিশের এই কর্মকর্তা, ‘হুমকি নিয়ে অনেক ধরনের তথ্য আছে। এগুলো কিছু বলা যাচ্ছে না। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। উত্তর প্রদেশ পুলিশের নিজস্ব স্ট্যান্ডার্ডে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো ফাঁকি দিয়ে বের হওয়া অসম্ভব। তাই বলতে পারি কোনো উদ্বেগ নেই।’ বাংলাদেশ টিমের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে চিন্তা নেই বলে জানানো হয়। সবকিছু দেখভাল করছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।