

তীর এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রত্যাশার কেন্দ্রে আছেন কুলসুম আক্তার মনি। কম্পাউন্ড নারী এককে পদক থেকে এক জয় দূরে এ তীরন্দাজ—সেমিফাইনাল জিতলে ঠাকুরগাঁ থেকে উঠে আসা আরচার যাবেন স্বর্ণ কিংবা রুপার লড়াইয়ে; হারলে ব্রোঞ্জ পদকের জন্য লড়তে হবে। কুলসুম আক্তার ইরানের ফাতিমা বাঘেরিকে ১৪৫-১৪৩ স্কোরে হারানোর পর ভারতের দ্বীপশিখাকে ১৪২-১৪০ ব্যবধানে হারিয়েছেন। কোয়ার্টার ফাইনালে কুলসুম কাজাখস্তানের ইউনুসোভা রোক্সানার বিপক্ষে জেতেন ১৪৬-১৪৪ পয়েন্টে। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তিনি ভারতের প্রদীপ প্রিথিকার মুখোমুখি হবেন।
সেমিফাইনালে ভালো কিছু করার আশাবাদ জানিয়ে কুলসুম বলেন, ‘আমার ইভেন্ট থেকে সতীর্থরা সবাই বিদায় নিয়েছেন, আমি টিকে আছি বলে কোনো চাপ অনুভব করছি না। এতদিন আমরা পরিশ্রম করেছি একটা কিছু পাওয়ার জন্যই। সেমিফাইনালেও আমি নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলার চেষ্টা করব।’
রিকার্ভ পুরষ এককে হতাশই হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। চায়নিজ তাইপের লিউ তাই ইয়েনকে ৬-৪ সেট পয়েন্টে হারিয়ে ভালো শুরু পেয়েছিলেন রাকিব মিয়া। পরে ভারতের সঞ্জয় ইয়াশদিপ ভোগেকে ৬-৪ সেট পয়েন্টে হারিয়ে ভালো কিছুর আশাও জাগিয়েছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যাং চায়েওয়ানের কাছে ৬-৪ সেট পয়েন্টে হেরে থামতে হয় রাকিবকে।
দারুণ সূচনার পর শেষটা নিয়ে হতাশ রাকিব বলেন, ‘ভারতের আরচারকে হারানোর পরও আমি ভেবেছি, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আমি নিজেই। আত্মবিশ্বাস বেড়েছিল। কিন্তু শেষটা নিয়ে সন্তুষ্ট নই। আমি বলব, মোটামুটি পারফর্ম করেছি। আসলে দক্ষিণ কোরিয়ানরা তো আমাদের চেয়ে ভালো। আমরা যথেষ্ট পরিশ্রম করি, মানসিক শক্তি বাড়াতে পারলে আমরা আগামী আরও ভালো করতে পারব।’
রিকার্ভ এককে আব্দুর রহমান আলিফ ১/২৪ লড়াইয়ে মালয়েশিয়ার মুহাম্মাদ হাইকাল দানিশ শিয়ামসুল আফান্দিকে ৬-৫ সেট পয়েন্টে হারান। পরে দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যাং জিহোর বিপক্ষে আলিফ জেতেন ৬-৫ সেট পয়েন্টে। কিন্তু কাজাখস্তানের আব্দুলিন ইলফাতের কাছে ৭-৩ সেট পয়েন্টে হেরে বিদায় নিতে হয় আলিফকে। সাগর ইসলাম ১/২৮ থেকে বিদায় নিয়েছেন ভিয়েতনামের লে কুয়োক ফোংয়ের কাছে ৬-৪ সেট পয়েন্টে হেরে। এ ইভেন্টে বাংলাদেশের আরেক প্রতিযোগী রাম কৃষ্ণ সাহা ১/৮ রাউনন্ডে ৬-৪ সেট পয়েন্টে ভারতের রাহুলের কাছে হেরে যান। ফলে রিকার্ভ পুরুষ এককে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের চার তীরন্দাজই ছিটকে গেলেন। রিকার্ভ নারী একক থেকেও বাংলাদেশের চার আরচারই বিদায় নিয়েছেন—সোনালি রায় দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যাং মিনহির কাছে ৬-০ সেট পয়েন্টে, শিমু ভারতের অঙ্কিতা ভাকাতের কাছে ৭-১ সেট পয়েন্টে, ইতি খাতুন ভারতের অংশিকা কুমারির কাছে ৬-৪ সেট পয়েন্টে ও মনিরা আক্তার মালয়েশিয়ার মোহামাদ জাইরি আরিয়ানা নুর দিয়ানার কাছে ৬-২ সেট পয়েন্টে হেরেছেন।
কম্পাউন্ড পুরুষ এককে আগেই বিদায় নিয়েছিলেন নাওয়াজ আহমেদ রাকিব, সোহেল রানা ও মোহাম্মাদ আশিকুজ্জামান। বাকি ছিল হিমু বাছাড়ের খেলা। হিমু গতকাল ভুটানের গাইতসে তেশিতুমের কাছে ১৪৩-১৪১ স্কোরে হেরে ছিটকে যান। কম্পাউন্ড নারী এককে পুষ্পিতা জামান দক্ষিণ কোরিয়ার পার্ক জং উনের বিপক্ষে টাইব্রেকে ১৪২-১৪২ জয়ের পর কাজাখস্তানের ইউনুসোভা রোক্সানার কাছে ১৪৫-১৪৩ স্কোরে হেরে ছিটকে যান।
মন্তব্য করুন