

দ্বিতীয় ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারেই আয়ারল্যান্ডের ওপেনার অ্যান্ডি বালবার্নিকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেললেন তাইজুল ইসলাম। জোরালো আবেদনে আম্পায়ার আঙুল তুলতেই ম্যাচ জেতার মতো বাঁধভাঙা উদযাপনে বাংলাদেশ ফিল্ডাররা। তাইজুলকে কোলে চড়িয়ে নিলেন মুশফিকুর রহিম; দারুণ অর্জনকে দারুণভাবেই উদযাপন করলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এখন বাঁহাতি এই স্পিনার।
একদিন আগেই সাকিবের রেকর্ডের পাশে বসেছিলেন ৩৩ বছর বয়সী তাইজুল। খুব শিগগির যে সাকিবকে ছাড়িয়ে যাবেন তিনি—সেটাও ছিল অনুমেয়ই। ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনের চতুর্থ ইনিংসেই সেই রেকর্ড ভাঙা হলো তার। শুধু তাই নয়, আরও দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে এখন অন্য উচ্চতার দিকেই ছুঁটছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। টেস্টে বাংলাদেশের জার্সিতে ২৪৯ উইকেট হলো তাইজুলের; সাকিবের ছিল ২৪৬ উইকেট। ৫৭তম টেস্ট ম্যাচে এসে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছেন তিনি।
ঢাকা টেস্টে বল হাতে দারুণ ছন্দে তাইজুল। আইরিশদের প্রথম ইনিংসেই চার উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে এখন পর্যন্ত ৬ উইকেট হারানো সফরকারীদের ৩টিই নেন তাইজুল। এই ইনিংসে সাকিবকে ছাড়ানোর মতো কীর্তি গড়েছেন তিনি। সাকিব না থাকায় তাইজুল নিজেকে আরও বেশি মেলে ধরার সুযোগ পেয়েছেন। তার এমন অর্জনকে দলের ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল এভাবে ব্যাখ্যা দিলেন, ‘তাইজুল যেভাবে পারফর্ম করে যাচ্ছে প্রতিটি টেস্ট ম্যাচে, আপনি যদি দেখেন যে সাকিব থাকাকালীনও সে পারফর্ম করেছে। সাকিব চলে যাওয়ার পর এখন লিডিং রোলে আছে।’ তাইজুলের অর্জনকে উদযাপন করবে দলও, ‘অবশ্যই দল থেকে তো আমাদের একটা মিটিং হয়। প্রতিটি খেলার শেষেই এমন অর্জন উদযাপন হয়। যেমন আমাদের জয় ১০০০ রান করেছেন টেস্ট ক্রিকেটে—নিশ্চিতভাবে এমন (উদযাপন) কিছু তো একটা থাকবেই।’
২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত সাকিবের ছায়াসঙ্গী ছিলেন তাইজুল। ম্যাচ সংখ্যা, পরিসংখ্যান এসব দেখলেই এমন তথ্য পাওয়া যায়। তবে আশরাফুল সেটা মানতে চান না। তার মতে, ‘সাকিব থাকাকালীনও কিন্তু অনেক টেস্ট ম্যাচে লিড করেছে তাইজুল। সাকিব শুধু ব্যাটিং করেছেন, হয়তো বা একটা ইনিংসে বল করেননি, আরেক ইনিংসে বল করেছেন। তাইজুল গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে এশিয়ায় খেলা হলে।’ আশরাফুল অবশ্য ঠিকই বলেছেন। এশিয়ার কন্ডিশনে তাইজুলের চেয়ে বড় বাঁহাতি অস্ত্র এখন যে আর নেই কেউ দলে।
মন্তব্য করুন