টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ দল এখন যুক্তরাষ্ট্রে। সেই দলের সঙ্গে থেকে মূল লড়াইয়ের জন্য তৈরি হচ্ছেন লিটন কুমার দাস। কেমন তার বিশ্বকাপ প্রস্তুতি? ক্যারিয়ারের অতৃপ্তি, দলের কথা, সতীর্থের বন্ধুত্ব এবং পরিবারের পাশে থাকা নিয়ে একটি ভিডিও করেছেন লিটন দাস। বিসিবির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের আয়োজন ‘দ্য গ্রিন রেড স্টোরি’-তে তিনি নিজের ব্যাটিং পারফরম্যান্সের উন্নতির প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন। কালবেলা পাঠকের জন্য সেই ভিডিওর অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো…
নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে
লিটন: আমার পারফরম্যান্সের কথা বললে বলতেই হবে, ‘নট আপ টু দ্য মার্ক।’ আমি যে লেভেলের খেলোয়াড় বা যে পারফর্ম করা উচিত আমার, সেটা এখনো করতে পারিনি। জিনিসটা যদি এভাবে বলি যে, আগের দুটি বিশ্বকাপে যদি ১০০ রান না করি, এবারের বিশ্বকাপে যদি ১০১ করতে পারি, তাহলে আরও ভালো করেছি। যা করিনি, চেষ্টা করব তার থেকে ভালো কিছু করার।
সাকিব-মাহমুদউল্লাহর প্রসঙ্গে
লিটন: সাকিব ভাই পুরোনো খেলোয়াড়, আমার সেটা মনেই হয় না। যেভাবে সবার সঙ্গে ব্যবহার করেন, মনে হয় খুবই ফ্রেন্ডলি। এটা একটা বড় জিনিস। রিয়াদ ভাইও এখন অনেক ফ্রেন্ডলি।
নাজমুল হোসেন শান্তর অধিনায়কত্ব নিয়ে
লিটন: সর্বশেষ কয়েকটা সিরিজ ধরে ও অধিনায়কত্ব করছে। আমার কাছে খুবই ভালো লাগছে। সব মিলিয়ে যা দেখছি, মনে হচ্ছে ও উন্নতি করছে। স্বাভাবিকভাবেই যে কোনো মানুষের উন্নতির শেষ নেই। ও খুব ভালো করছে।
আসন্ন বিশ্বকাপে টপ অর্ডারের পারফরম্যান্স নিয়ে
লিটন: শুধু আমি নই, আমার মনে হয় এখন বাংলাদেশের সব টপ অর্ডার ব্যাটাররাই চিন্তা করে যে সেঞ্চুরি করবে, এটা তো সহজ কাজ নয় যে, টি-টোয়েন্টিতে যাব এবং ১০০ করে ফেলব। যদিও বিশ্বক্রিকেট এখন অন্যভাবে চলছে। আইপিএলের কথা বলব না, কারণ ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট পুরোপুরি ভিন্ন ধরনের। যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখেন, বিশ্বকাপে ১০০ হয়, তবে হাতেগোনা দু-একজন ব্যাটসম্যান ব্যাটিং করেন টি-টোয়েন্টিতে। আমাদেরও সে সুযোগ আছে। আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা খুব ভালো। চেষ্টা সবার ভেতরই থাকবে।
খারাপ সময়ের মোটিভেশন
লিটন: খারাপ সময়ে অতি বেশি চিন্তার কিছু থাকে না। কারণ, আপনি ব্যাডপ্যাঁচে যখন থাকেন, যত বেশি চিন্তা করবেন, যত কিছু নিয়ে ভাববেন, তত আপনার জন্য খারাপ সময় বয়ে আনবে। আপনার কাছে একটা বিকল্পই থাকে, কতটুকু কঠোর পরিশ্রম করছেন অনুশীলনে, অনুশীলনকে কতটা গুরুত্ব দিয়ে নিচ্ছেন, সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, খারাপ সময়ে যত শান্ত ও স্থির থাকা যায়, যত কম অতিরিক্ত করা যায়, তত ভালো। স্রেফ নিজের ক্রিকেটে মনোযোগ রাখা উত্তম।
প্রেরণার উৎস
লিটন: অনেক মানুষই আছেন, যারা সবসময় আমাকে প্রেরণা জোগান। অনেক কোচ আছেন, যাদের সঙ্গে কথা হয়, অনুপ্রাণিত করেন। এই সময়ে এটা অনেক বড় ব্যাপার, সাহস দেওয়া। সবচেয়ে কাছের মানুষ আমার স্ত্রী। সবসময় আমাকে সাহস দেয় সে। এর থেকে বড় কিছু লাগে না।
বিশ্বকাপের দল নিয়ে
লিটন: ২০২২ বিশ্বকাপের পর থেকেই টি-টোয়েন্টিতে আমাদের দলটা অনেক ব্যালান্সড। আমরা অনেকগুলো সিরিজ জিতেছি এবং ভালো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটও খেলছি। এমন নয় যে, স্রেফ এমনি জিতে যাচ্ছি। ভালো দলের সঙ্গে জিতেছি, ভালো ক্রিকেট খেলে জিতেছি।
বিশ্বকাপের আশা
লিটন: অবশ্যই বিশ্বকাপে একটা আলাদা চাপ থাকবে। সব দলেরই থাকে। আমার মনে হয়, আমরা যদি ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি এবং ক্রিকেটের ভাষায় যেটি বলে, শান্ত ও স্থির থেকে যদি ক্রিকেট খেলা যায়, ভয়ডরহীন ক্রিকেট, কোনো ফল না ভেবে যদি খেলা যায়, আমার মনে হয়, আমাদের খুব ভালো সুযোগ আছে।
নিজেকে নিয়ে
লিটন: একেকটা মানুষের চরিত্র একেক রকম। আমাকে যারা চেনে বা জানে কাছ থেকে, তারা জানে আমি কতটা ‘জলি মাইন্ডেড’। অনেক সময় এরকম হয় যে, মাঠে থাকল অন্যরকম চেহারা দেখা যায় আমার। চেষ্টা করব পরেরবার থেকে হাসার জন্য। এতে মানুষ খুশি হয়।