ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে তাকসিম এ খানের মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়িয়েছে সরকার। তাকে ফের নিয়োগ দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো এই পদে নিয়োগ পেলেন তিনি।
গত ১১ জুলাই ঢাকা ওয়াসার বোর্ড সভায় তাকসিম এ খানকে আরও তিন বছরের জন্য নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে তাকসিমকে ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর পর থেকে তার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। ১৪ অক্টোবর তাকসিমের ষষ্ঠবারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর আগেই ফের নিয়োগ পেলেন তিনি।
ওয়াসার এমডির দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দুর্নীতি, অনিয়মসহ নানা অভিযোগ থাকার পরও তাকসিম এ খানকে একই পদে রাখা ও নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত ১২ বছরে তাকসিমের বেতন বেড়েছে ৪২১ শতাংশ। করোনার মধ্যে একলাফে ওয়াসার এমডির বেতন বাড়ানো হয় পৌনে ২ লাখ টাকা। মাসে ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা বেতন ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা নেওয়া এবং গত ১৪ বছরে বেতন-ভাতা হিসেবে ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা নেওয়াসহ আলোচনা-সমালোচনার অভিযোগগুলোর সঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে তার ১৪টি বাড়ি থাকা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ। তাকসিম এ খান, তার স্ত্রী ও সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান কালবেলাকে বলেন, একই ব্যক্তিকে একই পদে বারবার পদায়ন করা কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো নয়। ওয়াসা এমডি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অফিস করেন, তিনি এমন কিছু সংস্কৃতি তৈরি করেছেন যেটি কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যায় না। তবু তিনি বারবার নিয়োগ পাচ্ছেন।
এদিকে ঢাকা ওয়াসার এমডির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ। ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, দুদকে তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে। এমতাবস্থায় ওয়াসা বোর্ড বিধি অনুযায়ী তার চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করতে পারে না। তাকসিম তার চেয়ার ছাড়তে চান না। তিনি চলে গেলেই তার আমলের বড় বড় দুর্নীতি সামনে চলে আসবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুজিত কুমার বালা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বোর্ড সদস্য জানান, বোর্ড সভায় এমডির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব পাস হলেও বোর্ড সদস্য ডিসিসিআইর সাবেক সহসভাপতি ইমরান আহমেদ, আইসিএবির সহসভাপতি সাব্বির আহমেদ ও ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি এ কে এম আব্দুল হামিদ আপত্তি জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন