সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সরকারি ৪১ একর জমি দখল করে ও ম্যুরাল ভেঙে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মো. আবু সালেহ বাবু আটুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি। গত ১১ মার্চ বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক শ্যামনগরের ইউএনওকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও কাজ চলমান রয়েছে। বঙ্গবন্ধু চত্বরের ম্যুরাল ভেঙে মার্কেট নির্মাণ করায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও গ্রামের সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন।
লিখিত অভিযোগে ব্যবসায়ীরা জানান, আটুলিয়া ইউনিয়নের নওয়াবেঁকী হাট-বাজারের পেরিফেরিভুক্ত জমিতে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। কিন্তু আটুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. আবু সালেহ বাবু ও স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. মোশারাফ হোসেনের সহযোগিতায় দোকান ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলেন। ওই স্থানে দোকান প্রতি ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ২৩টি দোকান অবৈধভাবে নির্মাণ শুরু করেন চেয়ারম্যান বাবু। যার মূল্য ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এরই মধ্যে পাঁচটি দোকান নির্মাণ করে মাসিক ৫ হাজার টাকা হারে ভাড়া উত্তোলন করছেন চেয়ারম্যান।
ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের দলীয় প্রোগ্রাম করার কোনো জায়গা না থাকায় সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার ওই জায়গায়টিতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’ নাম দেন। ইউপি চেয়ারম্যান বঙ্গবন্ধু চত্বরের সেই ম্যুরাল অপসারণ করে সেখানে নিজস্ব মার্কেট নির্মাণ করছেন। আমরা চাই বঙ্গবন্ধু চত্বরের জায়গা দখলমুক্ত থাকুক। সেখানে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণ বন্ধের দাবি জানাই।
চেয়ারম্যানের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে ইউপি সদস্য স্বপন কুমার বৈদ্য বলেন, জায়গাটি পেরিফেরিভুক্ত ১ নম্বর খাস খতিয়ানের জমি। তবে চেয়ারম্যান বলছেন, এটি ইউনিয়ন পরিষদের জমি। জায়গাটি যদি ইউনিয়ন পরিষদের হয়ে থাকে, তাহলে পরিষদের উন্নয়নকাজে লাগলে আমাদের কোনো বাধা নেই।
এ বিষয়ে আটুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু সালেহ বাবু বলেন, জায়গাটি আমাদের পরিষদের, সেজন্য আমরা কাজ করছি। কোন খাতের টাকা দিয়ে মার্কেট নির্মাণ করছেন—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে মার্কেট নির্মাণ করছি। পরবর্তী সময়ে আমি আমার টাকা নিয়ে নেব। তবে ব্যক্তিগত টাকায় মার্কেট নির্মাণ করার কোনো আইনগত বিধান আছে কি না—জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, সরকারি জমিতে চেয়ারম্যানের মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি এরই মধ্যে আমাদের নজরে এসেছে। শ্যামনগরের ইউএনওকে কাজ বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।