কফি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়। সকালে দিন শুরু করা হোক বা দুপুরে সতেজতা বাড়ানো, কোটি কোটি মানুষ কফির স্বাদ ও গন্ধে ভরিয়ে দেন প্রতিদিনের রুটিন। তবে অনেকেই কফির সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেতে পছন্দ করেন। এটি শুধু স্বাদ বাড়ায় না, শরীরের ওপরও বিভিন্ন প্রভাব ফেলে। সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণা ও পুষ্টিবিদের মন্তব্য অনুযায়ী দেখা গেছে, দুধ মিশিয়ে কফি খাওয়া কিছু ক্ষেত্রে উপকারী, আবার কারও জন্য তা সমস্যার কারণও হতে পারে।
কফির সঙ্গে দুধের সংমিশ্রণ
ক্যাপুচিনো, লাতে বা মোচার মতো দুধ যুক্ত কফি বিশ্বের বহু দেশে জনপ্রিয়। সাধারণত ফোম আকারে দুধ দেওয়া হয়, যা কফিকে ক্রিমি ও মসৃণ করে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, দুধে থাকা প্রোটিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড কফির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পলিফেনলের সঙ্গে মিলিত হয়ে শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে জয়েন্টে ব্যথা, আর্থ্রাইটিস বা হাড়ের সংক্রমণজনিত প্রদাহের ক্ষেত্রে এই সংমিশ্রণ উপকারী হতে পারে।
জার্নাল অব অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রি-তে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কফির সঙ্গে দুধ মিশালে শরীরে প্রদাহ কমে যায়। পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহরও উল্লেখ করেছেন, দুধ যুক্ত কফি শরীরের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা অ্যাসিডিটি ও হজমের সমস্যাও কমায়। এছাড়া, দুধ কফির তীব্র স্বাদ হালকা করে এবং ক্যাফেইনের নেতিবাচক প্রভাবও কিছুটা কমাতে পারে।
কারা সতর্ক হবেন
যাদের ল্যাকটোজ সহনশীলতা কম, তাদের জন্য দুধ মিশ্রিত কফি সমস্যা তৈরি করতে পারে। দুধে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিন থাকায় এটি হাড়ের জন্য উপকারী হলেও, একবার দুধ যুক্ত কফি বানানোর পর পুনরায় গরম না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ তা খাদ্যনালিতে জ্বালা বা অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
এছাড়া যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে আছেন বা ডায়েটিং করছেন, তাদের জন্য দুধ ছাড়া ব্ল্যাক কফি বেশি সুবিধাজনক হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ যুক্ত কফির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যকারিতা কিছুটা কমে যায়। তবে প্রদাহ কমানো, অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ এবং শরীরের ভারসাম্য রক্ষায় এটি উপকারি।
মোটকথা
দুধ মিশিয়ে কফি খাওয়া ভালো নাকি ক্ষতিকর—এ প্রশ্নের উত্তর এককভাবে দেওয়া সম্ভব নয়। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে ব্যক্তির স্বাস্থ্যের ওপর। সংযমী পরিমাণে কফি পান করা এবং নিজের দেহের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কফি পানের অভ্যাসে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য এবং প্রয়োজন বিবেচনা করাই মূল চাবিকাঠি।
সূত্র : হেলথলাইন, টাইমস অব ইন্ডিয়া
মন্তব্য করুন