কম দামে বিদ্যুৎ আমদানি করতে যাচ্ছে সরকার। নেপাল জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এ বিদ্যুৎ আমদানি হবে। তবে এখনো দাম নির্ধারণ হয়নি। বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করতে আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নেপাল যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, নেপাল থেকে আপাতত ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। সেপ্টেম্বরে নেপালে গিয়ে দাম ঠিক করা হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়েও আলোচনা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ভৌগোলিক সংযোগ না থাকার কারণে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে এ বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। ভারতের সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে নেপাল। এ জন্য গত ১ জুন ভারত তাদের সঞ্চালন লাইন ব্যবহারে নেপালকে অনুমতি দিয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল প্রচন্ডের মধ্যে আলোচনার সময় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে গত ১৫-১৬ মে ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে ভারতকে বিদ্যুৎ বাণিজ্য-সংক্রান্ত ত্রিদেশীয় চুক্তিতে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করে বাংলাদেশ ও নেপাল। প্রাথমিকভাবে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য, বর্তমানে ভারত থেকে আমদানির জন্য ব্যবহৃত বহরমপুর-ভেড়ামারা হাই-ভোল্টেজ ক্রস-বর্ডার ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে নেপাল থেকে আসবে। নেপালের লিখু-৪ প্রকল্প থেকে এ বিদ্যুৎ আসবে। ২৫ বছরের জন্য এ চুক্তি করা হবে। আর ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ৪-৫ টাকা হবে বলে ওই কর্মকর্তা জানান। এ ছাড়া নেপালের বিদ্যুৎ আনতে আরও দুটি প্রস্তাবিত রুট রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো নেপালের আনামারী থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশের পঞ্চগড় পর্যন্ত। এর মোট দৈর্ঘ্য ৪৯ কিলোমিটার। প্রস্তাবিত এই ট্রান্সমিশন লাইনটি নির্মাণ করতে হলে ২৪ কিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করতে হবে। অন্যেটি হলো নেপালের আনামারী থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও পর্যন্ত। এই রুটে ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণের জন্য ভারতীয় ভূখণ্ডের ৩৩ কিলোমিটার ব্যবহার করতে হবে। আর ট্রান্সমিশন লাইনের মোট দৈর্ঘ্য ৮৩ কিলোমিটার। জানা গেছে, ভারতের সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ট্রান্সমিশন চার্জ ও সার্ভিস ফি দিতে হবে দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এনটিপিসিকে (ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়া কোম্পানি)। প্রচলিত নিয়ম অনুসারে, ইউনিটপ্রতি ট্রান্সমিশন চার্জ ৪০-৪৫ পয়সা (ভারতীয় রুপি) হতে পারে। এ ছাড়া ৪ থেকে ৭ পয়সা পরিষেবা চার্জ যুক্ত হতে পারে। নেপালের এনইএ, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং ভারতের এনটিপিসির মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
মন্তব্য করুন