ছোট পর্দার আলোচিত অভিনেত্রী শমী কায়সারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার সন্দেহে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তদন্তের অংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে তার ও স্বামী-সন্তানের আয়কর নথি চেয়েছে সংস্থাটি। তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগও খতিয়ে দেখছে সংস্থাটি। ধানসিঁড়ি নামের এক বিজ্ঞাপনী সংস্থা থেকে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক এবং সর্বশেষ ভাইস প্রেসিডেন্টও নির্বাচিত হয়েছেন। আর বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে ইকমার্স প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ইকমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে বিয়ে করার পর থেকে প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন শমী কায়সার। আওয়ামী লীগের আশীর্বাদে ধানসিঁড়ি নামের একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার ব্যানারে তিনি হয়ে যান এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক; কিন্তু তার টার্গেট ছিল এফবিসিসিআইয়ের বড় পদ। আর সংস্থাটির বড় পদে যেতে হলে হয় কোনো অ্যাসোসিয়েশন বা কোনো চেম্বার বডির সভাপতি হতে হবে। নতুবা চেম্বার গ্রুপ বা অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে মনোনীত হতে হবে। আর বড় পদের অংশ হিসেবে তিনি ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়া ইক্যাবের সদস্য হন। আর রাতারাতি প্রভাব খাটিয়ে সংগঠনটির সভাপতির পদও বাগিয়ে নেন। আর অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে যান। এফবিসিসিআইয়ের সর্বশেষ কমিটিতে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। আর পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি অর্থ-বিত্তের মালিকও হয়ে যান তিনি। এরই মধ্যে তার দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি।
এনবিআর সূত্র জানায়, অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়টি অনুসন্ধানের স্বার্থে সম্প্রতি শমী কায়সারের আয়কর নথি চেয়ে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে সিআইডি। এই চিঠিতে বলা হয়েছে, অর্থ পাচারের সন্দেহভাজন ব্যক্তি হিসেবে শমী কায়সার ও তার স্বামী-সন্তানের আয়কর নথিও চেয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে তার ইস্কাটন ও গুলশানের ঠিকানার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীর ঠিকানাও দেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধানের স্বার্থে এসব আয়কর নথি একান্ত প্রয়োজন বলেও জানানো হয়েছে সিআইডির চিঠিতে।
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের সদ্য সাবেক এই ভাইস প্রেসিডেন্ট শমী কায়সারের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের ব্যাপক অভিযোগও রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও শমী কায়সার ইক্যাবের সভাপতি ছিলেন। গত ১৪ আগস্ট তিনি ই-ক্যাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ইশতিয়াক মাহমুদ নামের একজন আন্দোলনকারীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার হন শমী কায়সার। অভিযোগ রয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধানসিঁড়ি নামে লাউঞ্জটি শমী কায়সারের নামে ইজারা দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তার নামে ইজারা নবায়ন করার অভিযোগ উঠেছে।