কুড়িগ্রামে পরিবেশবান্ধব কাগজের তৈরি কলম বা গ্রিন পেন বানিয়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে গ্রিন ইকো নামে একটি সামাজিক সংগঠন। কলমটির বৈশিষ্ট্য হলো কলমের পেছনের অংশে বিভিন্ন জাতের গাছের বীজ এঁটে দেওয়া হয়। কালি শেষ হলে কলমটি পুঁতে রাখলে সেখান থেকে গাছের চারা জন্মায়।
পরিবেশবান্ধব এই কলমটি জলবায়ুর জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনবে। এ ছাড়া সরকারি সহযোগিতা পেলে বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছে ওই প্রতিষ্ঠানটি। কাগজের তৈরি কলমটি লেখার পাশাপাশি সবুজ বনায়নে বেশ ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সঞ্জয় চৌধুরী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার ভবানন্দকুটির গ্রামের গনেশ চৌধুরীর ছেলে সঞ্জয় চৌধুরী। তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্র। তিনি সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকায় উদ্যোগ নেন পরিবেশবান্ধব কাগজের তৈরি কলমের। প্রথমে সঞ্জয় চৌধুরী ও সুমন চৌধুরী দুই ভাই মিলে এ কাজ শুরু করলেও এখন তার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫-২০ জন নারী কাজ করেন।
কারখানায় কাজ করা দশম শ্রেণির ছাত্রী মোছা. আমেনা খাতুন বলে, আমরা দরিদ্র পরিবারের মানুষ। লেখাপড়ার পাশাপাশি গ্রিন ইকো কারখানায় কলম তৈরির কাজ করি। আমার মতো গ্রামের আরও ১০-১৫ জন নারী কাগজের তৈরি কলম বানান। এখান থেকে যে বাড়তি আয় হয়, তা দিয়ে নিজেও চলি ও বাকি টাকা সংসারের কাজে লাগাই।
প্রতিষ্ঠাতা সঞ্জীব চৌধুরী বলেন, এ কলমটি ৯৫ শতাংশ পরিবেশবান্ধব। কাগজের তৈরি কলম করার পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো হুমকির মুখে থাকা জলবায়ুর পরিবর্তনে কিছটা ভূমিকা রাখা। কেননা বাজারের প্লাস্টিকের তৈরি কলম পরিবেশের জন্য খুবই হুমকিস্বরূপ। তাই কাগজের তৈরি কলমের পেছনের অংশে বিভিন্ন জাতের গাছের বীজ এঁটে দিই। কালি শেষ হলে সেই কলমটি পুঁতে রাখলে সেখান থেকে সবুজ গাছের চারা জন্মাবে।
কুড়িগ্রাম বিসিক শিল্পের উপব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গ্রিন ইকো নামে একটি সংগঠন পরিবেশবান্ধব কাগজের তৈরি কলমের কাজ করে যাচ্ছে। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। কুড়িগ্রাম বিসিক শিল্পের কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে আমরা ওই সংগঠনটিকে সহযোগিতা করব বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন