প্রহসনের নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বিএনপির দায়ের করা মামলায় দুই দফায় আট দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে ৩ ঘণ্টার বেশি সময় দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাতের ভোট গ্রহণের কথা স্বীকার করলেও ওই সময় এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন। বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করে অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে কৌশলে উত্তর দিয়েছেন নুরুল হুদা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রিমান্ড শেষে নুরুল হুদাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে দুপুর ২টার দিকে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে তোলা হয়। এ সময় আসামি ‘স্বেচ্ছায়’ জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। রেকর্ড শেষে সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে তাকে আদালত থেকে বের করা হয়। এ সময় পিছমোড়া করে হাতকড়া, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, মাথায় হেলমেট পরানো ছিল। মলিন মুখে বের হতে দেখা যায় তাকে।
গত ২২ জুন সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ দিন স্থানীয় জনগণ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, লুঙ্গি পরিহিত নুরুল হুদাকে গলায় জুতার মালা পরায় জনতা। জুতা দিয়ে মুখে আঘাত করতেও দেখা যায়। পরদিন ২৩ জুন নুরুল হুদাকে চার দিন ও ২৭ জুন ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উল্টো ‘ভয়ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে গত ২২ জুন মামলা করে বিএনপি। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মামলাটি করেন। পরবর্তী সময়ে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি এ কে এম নুরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়েছে। হাবিউল আউয়াল রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন।
মন্তব্য করুন