তিন দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন নামের একটি সংগঠন। রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এতে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি মহামান্য হাইকোর্ট ১০ম গ্রেড (ইঞ্জিনিয়ারিং) পদে বিএসসি প্রকৌশলীদের আবেদন করার অনুমতি দিয়ে যে ঐতিহাসিক রুল প্রদান করেছেন, তা দেশের আপামর প্রকৌশলী সমাজের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটিয়েছে। এই রুল কোটা নামক বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। আমরা এই রুলকে পূর্ণ সমর্থন জানাই এবং অবিলম্বে এর শতভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানান। এটি কেবল একটি আইনি সিদ্ধান্ত নয়, এটি ন্যায়, মেধা ও যোগ্যতার প্রতি রাষ্ট্রের অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
তারা বলেন, জাতি আজ এক চরম বৈষম্যের মুখোমুখি। মহামান্য হাইকোর্টের একটি যুগান্তকারী রুলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একদল স্বার্থান্বেষী মহল দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন, আজ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করছে- এই অন্যায়, এই অবিচার আর বরদাস্ত করা হবে না।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মহামান্য আদালতের রুলকে অবমাননা করে ডিপ্লোমাধারীদের একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলা, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে, পেশিশক্তির জোরে রুল বাতিল করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা সাধারণ মানুষের চলাচলে বাধা দিচ্ছে, প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করছে, প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছে, এমনকি হত্যার হুমকিও প্রদান করছে। তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রতিনিধি সাকিবুল হক লিপুকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এটি কেবল একজন ব্যক্তির উপর আক্রমণ নয়, এটি রাষ্ট্রের আইনের শাসনের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ, বিচার ব্যবস্থার প্রতি চরম অবমাননা এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার হীন প্রচেষ্টা।
মানববন্ধনে বক্তারা এই সকল অপরাধমূলক কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানান এবং সরকারের কাছে ৩ টি জোর দাবি জানান। দাবিসমূহ হলো- (১) এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। (২) সাকিবুল হক লিপুসহ সকল হুমকির শিকার প্রকৌশলীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। (৩) মিডিয়ায় চলমান সকল অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে। যারা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বক্তারা বলেন, এই আন্দোলন কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়, বরং সকল প্রকৌশলীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং মেধার সঠিক মূল্যায়নের জন্য। উচ্চতর যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করার কোনো সুযোগ নেই। কোনো গোষ্ঠী সরকারকে চাপে ফেলে বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারবে না।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী শাকিল আহমেদ ইকবাল, প্রকৌশলী ফাহিম আহমেদ, প্রকৌশলী জয় রায় শুভ, জামিল আল জামি, প্রকৌশলী জিহাদুল হক তালুকদার, প্রকৌশলী আতিকুর রহমানসহ প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য করুন