পরচুলার টুপি তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন পাবনার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গার রাকসা ও কাশিনাথপুর টাংবাড়ি এলাকার নারীরা। বর্তমানে এই পরচুলা তৈরির কাজের সঙ্গে দুই শতাধিক নারী কাজ করে যাচ্ছেন। সম্ভাবনাময় এ শিল্প গ্রামের মেয়েদের স্বাবলম্বীর পাশাপাশি কর্মদক্ষ করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রীরাও এ কাজ করে নিজেদের পড়াশোনার খরচ জোগাচ্ছে। এ পরচুলা ইউরোপে রপ্তানি হলেও ভারত, চীন, জাপান ও কোরিয়ায় চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। গ্রামীণ নারীরা পরচুলা তৈরি করে অর্থনীতিতে ভূমিকা পালন করছেন।
উপজেলার রাকসা গ্রামের সোহেল রানার কারখানায় সরেজমিন কথা হয় কারিগর নবম শ্রেণির ছাত্রী সুলতানা ইয়াসমিনের সঙ্গে। সে বলে, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি এ কাজ করে প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা উপার্জন করি, যা দিয়ে আমার পড়াশোনার খরচ চালিয়ে পরিবারে দিই। একটি টুপি তৈরি করতে দু-তিন দিন সময় লাগে, তবে স্কুল ছুটি থাকলে এক দিনেও করা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন ভারেঙ্গার ইউনিয়নের রাকসা, চকপাড়া, পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের বকচর ও কাশিনাথপুর টাংবাড়ি গ্রামে পাঁচটি পরচুলা তৈরির কারখানা রয়েছে। এতে দুই শতাধিক নারী কাজ করে থাকেন।
কারখানার মালিক সোহেল রানা জানান, পরচুলা তৈরির এসব উপকরণ আমরা ঢাকা থেকে নিয়ে আসি। পরচুলা তৈরি করে আবার ঢাকায় পাঠানো হয়। আমার এ কারখানায় শতাধিক নারী কর্মী কাজ করেন। এ কাজ করে মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার করছেন।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার মেয়েরা অবসর সময়ে বসে না থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি পরচুলা তৈরি করে নিজেদের আর্থিক চাহিদা মিটিয়ে সংসারের হাল ধরে। সরকার যদি এ শিল্প খাতে আর্থিক সহযোগিতা করে তাহলে দেশে বেকারত্বের হার অনেকটাই কমে যাবে বলে আশা করেন তারা।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মোছা. রেবেকা সুলতানা জানান, নতুন ভারেঙ্গা, পুরান ভারেঙ্গা, জাতসাখিনী ও আমিনপুরে মোট পাঁচটি পরচুলা তৈরির কারখানা হয়েছে। এখানে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী ও গৃহিণী মিলে দুই শতাধিক নারী এ কাজের সঙ্গে জড়িত। তাদের হাতের তৈরি এই পরচুলা দেশ ছাড়াও দেশের বাইরে প্রায় ২৮টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। উপজেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর থেকে তাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।