ঈদের ষষ্ঠ দিন আজ। শহরে ফিরতে শুরু করেছে কর্মব্যস্ত মানুষ। বাড়ছে যান চলাচল, খুলছে বন্ধ থাকা শপিং মলগুলো। সেইসঙ্গে সিনেমা হলে দর্শকের উপস্থিতিও বাড়ছে। ফলে যত সময় যাচ্ছে, ততই জমে উঠছে ঈদের সিনেমার উৎসব।
এবারের ঈদে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ছয়টি নতুন সিনেমা। এর মধ্যে দর্শক চাহিদায় সবার শীর্ষে আছে রায়হান রাফী পরিচালিত এবং শাকিব খান অভিনীত ‘তাণ্ডব’। দেশের ১৩২টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমাটি প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন হলে হাউসফুল যাচ্ছে। বিশেষ করে সিনেপ্লেক্সগুলোতে দর্শকের চাপে অতিরিক্ত শো বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর মধুমিতা সিনেমা হলের ম্যানেজার আরিফুর রহমান রাজু কালবেলাকে বলেন, ‘ঈদের প্রথম দিন হাউসফুল না গেলেও পরদিন থেকেই দর্শকের চাপ বাড়ছে। এখন প্রতিদিনই প্রায় সব শো হাউসফুল যাচ্ছে। সরকারি ছুটি শেষ হলে দর্শক আরও বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।’
অ্যাকশন-থ্রিলার ঘরানার এ সিনেমাটিতে শাকিব খান ও জয়া আহসানের সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন সাবিলা নূর, আফজাল হোসেন, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, এফ এস নাঈম প্রমুখ। সিনেমাটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে এসভিএফ, বাংলাদেশের আলফা আই এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি।
‘তাণ্ডব’-এর পর দর্শক চাহিদায় রয়েছে তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’। সিনেপ্লেক্সগুলোতে সিনেমাটি টিকিট সংকটে পড়েছে—অনলাইনে আগাম টিকিটও পাওয়া যাচ্ছে না। পারিবারিক ও আবেগঘন ড্রামার এ সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছেন দেশের প্রথম সারির একঝাঁক অভিনয়শিল্পী—জাহিদ হাসান, জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, তারিক আনাম খান, আজাদ আবুল কালাম, সুনেরাহ বিনতে কামাল, ইন্তেখাব দিনার, সৌম্য জ্যোতি ও সাদিয়া আয়মান। পরিচালক জানান, দর্শকদের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়ে তিনি অভিভূত।
আলোচনায় রয়েছে ‘নীলচক্র’ সিনেমাও। মিঠু খানের পরিচালনায় প্রথমবারের মতো জুটি হয়েছেন আরিফিন শুভ ও মন্দিরা চক্রবর্তী। থ্রিলারধর্মী এ মুভিটি শুরুতে ধীরগতিতে চললেও এখন অনেক হলে দর্শক বাড়ছে। অনেকে এর চিত্রনাট্য ও অ্যাকশন দৃশ্যের প্রশংসা করছেন।
এদিকে সঞ্জয় সমাদ্দারের ‘ইনসাফ’ সিনেমাও প্রথম দিন কিছুটা স্তিমিত থাকলেও দ্বিতীয় দিন থেকেই বেশ কয়েকটি হলে হাউসফুল যাচ্ছে। এতে অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ ও প্রথমবারের মতো বড় পর্দায় অভিষেক হওয়া তাসনিয়া ফারিণ।
তবে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত অন্য দুটি সিনেমা ‘টগর’ ও ‘এশা মার্ডার’ দর্শক টানতে ব্যর্থ হয়েছে। আলোক হাসানের ‘টগর’ মুক্তির পর থেকেই প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের উপস্থিতি কম। আর সানী সানওয়ারের ‘এশা মার্ডার’ রহস্য-থ্রিলার ঘরানার হলেও, বড় তারকার অনুপস্থিতি ও প্রচারণার দুর্বলতায় দর্শক আগ্রহে ভাটা পড়ে।
সব মিলিয়ে এবারের ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর সংখ্যা যেমন বেশি, তেমনি ঘরানার দিক থেকেও ছিল বৈচিত্র্য। শহরে কর্মব্যস্ত মানুষের ফিরতি ঢল শুরু হওয়ায় হলগুলোতে দর্শক আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন প্রেক্ষাগৃহ-সংশ্লিষ্টরা। ঈদের এ সিনেমা উৎসব দেশীয় চলচ্চিত্রের জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে—সেটাই হয়তো সবচেয়ে বড় সাফল্য।
মন্তব্য করুন