অভিষেকেই বাজিমাত চিত্রনায়িকা আলিশা ইসলামের। দর্শকের পাশাপাশি নির্মাতাদের নজর এখন তার দিকে। ‘এমআর-৯ : ডু অর ডাই’ সিনেমায় অভিনয়ে মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন আলিশা। এরপরই তার ডাক পড়েছে আরও তিন সিনেমায়। কালবেলার সঙ্গে আলাপে এমনটাই জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
আলিশা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তিনটি সিনেমার অফার পেয়েছি; কিন্তু সেগুলোর গল্প শোনা হয়ে ওঠেনি। একটা গল্প অবশ্য এরই মধ্যে শুনেছি। বেশ ভালো লেগেছে।’
যেসব সিনেমায় ডাক পেয়েছেন তাতে তার বিপরীতে কে অভিনয় করবেন সে বিষয়ে নিশ্চিত নন আলিশা। ছবির গল্প ও পরিচালকের বিষয়ে জানলেও তাতে কারা অভিনয় করবেন সে বিষয়ে এখনো জানতে পারেননি।
ওসব সিনেমার কোনো একটিতে যদি শাকিবের নায়িকা হিসেবে ডাক পান? এমন প্রশ্নের জবাবে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘শাকিব খানের সঙ্গে সিনেমার অফার এলে অনেক খুশিমনে ভালোভাবে নেব। কারণ তিনি সুপারস্টার। আমার দিক থেকে তিনি একজন লেজেন্ডারি অ্যাকটর। তিনি ইন্ডাস্ট্রিকে অনেক কিছু দিয়েছেন।’
গল্পনির্ভর সিনেমায় কাজ করতে চান এই নায়িকা। তার ভাষ্য, চরিত্রের পেছনে গল্প থাকা চাই। বাংলা সিনেমা খুব ভালো সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।’ বেশ উৎফুল্ল হয়েই বললেন, ‘বাংলাদেশি সিনেমা এত ভালো করছে দেখে আমার খুব ভালো লাগছে।’
তবে দর্শকরা যে তাকে শুধু প্রশংসায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন, তা নয়। আসছে সমালোচনাও। অনেকেই তাকে বলছেন ‘ন্যাকা’। বিষয়টি জানেন আলিশাও। বললেন, ‘অনেকে বলেছে আমি নাকি ন্যাকামো করি! দেখুন, আমি এমন একজন মানুষ ছিলাম, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেজেন্টেশন দিতেও ভয় পেত। উত্তর মুখস্থ থাকলেও আমি ক্লাসরুমে দাঁড়িয়ে কথা বলতাম না। কারণ সবাই আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে! এতটা ভয় পেতাম; কিন্তু এখন সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারছি। আমি যেখানে আছি, যেমন আছি, ভালো আছি।’
চলন ও পোশাক দেখে আলিশাকে অনেকেই বিদেশি ভাবেন। তবে বিষয়টি মোটেও উপভোগ করেন না এ অভিনেত্রী। বলেন, ‘আমাকে দেখতে যেমনই লাগুক, আমি যদি কখনো বিদেশে যাই, প্লেন যখন ল্যান্ড করে, আমি আমার মোবাইল অন করি, আমার দেশের মাটি দেখে আমি সবসময় কাঁদি। বাংলাদেশ ও ঢাকা আমার অনেক পছন্দ। খুব ভালো লাগবে সবাই আমাকে দেখে যদি বাংলাদেশি আর্টিস্ট ভাবেন। আমার জন্মও বাংলাদেশে, আমার পড়াশোনাও বাংলাদেশে, আমার সবকিছু বাংলাদেশে।’
‘এমআর-৯ : ডু অর ডাই’ মুক্তির পর সিনেমা হলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আলিশা। সেখানে দর্শকের সাড়া পাচ্ছেন বেশ। অভিনেত্রী বলেন, ‘সবার মুখে ইতিবাচক কথাই শুনছি এখন পর্যন্ত। এর ইংলিশ ভার্সনে আমরা বেশ সাড়া পেয়েছি। বাংলা ভার্সনেও পাচ্ছি। দর্শকরা এ সিনেমার পার্ট টু চাইছে। আমি বলতে চাই, পার্ট টু এটার চাইতে ১০ গুণ বেশি ভালো হবে।’
দর্শকদের প্রশংসা পেয়ে যারপরনাই আনন্দিত তিনি। বললেন, ‘একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে সেটাই আমি চাইছিলাম। আমি যেন ভালো গল্পে কাজ করে নিজেকে মেলে ধরতে পারি। আমার কাছে দর্শকদের অবস্থান সবচেয়ে উঁচুতে। তারাই তো তারকা তৈরি করেন। দর্শক খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
ইংলিশ ভার্সন আগে রিলিজ দেওয়ায় বাংলাদেশে এর কোনা প্রভাব পড়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আলিশা বলেন, ‘হতে পারে। আমি সঠিকভাবে বলতে পারছি না। এটা ডিরেক্টর-প্রডিউসাররা ভালো বলতে পারবেন। তবে হ্যাঁ, কিছু মানুষ তো মন খারাপ করেছিল ঠিকই। ভেবেছিল হলিউডের সঙ্গে কম্বাইন্ড করার কারণেই হয়তো আগে ইংলিশ ভার্সন মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।’
‘এমআর-৯ : ডু অর ডাই’-এর মাধ্যমে অভিষেক হওয়ায় বেশ আনন্দিত আলিশা। বলেছেন, ‘প্রথম সিনেমায় আমার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। খুবই ভালো একটি সূচনা হয়েছে। সিনেমার ভালো রিভিউ
পাচ্ছে। একই সময়ে আমার বন্ধু, পরিবার এবং আশপাশে যারা আছেন, তারা সবাই আনন্দিত। আশা করছি আমার স্বপ্নগুলো একটা একটা করে পূরণ হতে থাকবে। ভালো একটি সিনেমা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছি। তাই আগামীর কাজগুলোও আমার কাছে চ্যালেঞ্জ। আমাকে বেছে বেছে ভালো কাজ করে যেতে হবে।’
মন্তব্য করুন