ঝাঁপা-বাওড়ি থেকে ফিরছিলাম দিনের শেষ গন্তব্যের দিকে,
পথে একজন সঙ্গীকে স্টেশনে ছেড়ে দেওয়ার কথা।
যশোর রেলওয়ে স্টেশন- খুলনাগামী ট্রেন...
সঙ্গীরা বিদায় নিল, বাকিরা চা খাবো বলে দাঁড়িয়ে আছি।
চা আসছে হাত ঘুরে ঘুরে, আমার দাঁড়িয়ে থাকা চোখ
দেখবার মতো বিষয় খুঁজে পেয়েছে ততক্ষণে।
এক মনে দেখছি, এত ভিড়-ভাট্টায়ও মনে হলো শুধু যেন
দৃশ্যটিই আছে বাকি কিছু নেই আর!
একটা বছর পাঁচ-সাড়ে পাঁচের মেয়ে
এই তীব্র কোলাহল আর ভিড়ে এক মনে রশি লাফ খেলছে।
তবে ওর হাতে রশি নেই কোনো!
ওর খেলা দেখে বুঝবার কোনো উপায় নেই
রশি ছাড়া কল্পনার রশিতে খেলছে সে।
হঠাৎ চোখাচোখি হলো! চোখের পলক ফেলা মুহূর্তের মধ্যে
তাকে আমি আমার সামনে পেলাম।
শুধু পেলাম তাই না, একদম চির পরিচিতের মতো জড়িয়ে ধরা।
পরের লাইনগুলো সহজে অনুমেয়!
স্টেশনে বড় হতে থাকা সে জীবনের কোনো
কানাগলির কথা বলে, বলতে পারে...।
মাথাভর্তি চুল ওর, মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে
কথা শুনছিলাম। ও তার উচ্চতা মাপছিল,
আর কদিন গেলেই আমার সমান হবে...
ওর লালচে মুখের সারল্যে এখনো পুরোপুরি
স্টেশনীয় দীক্ষার ছাপ পড়েনি, কিংবা শিখে উঠতে পারেনি।
ওর একবারের বলা টাকার কথা চাপা পড়ে
শৈশবের ফুলমন্ত কথায়।
পিছনে কাছাকাছি বয়সের কেউ একজন ডেকে ওঠে মরিয়ম বলে...
মরিয়ম!
সে যেভাবে এসে জাপটে ধরেছিল তেমনি
নিমিষেই নাই হয়ে যায় আমাদের ফেলে আসা শৈশবের মতোন।
মন্তব্য করুন