রাজধানীতে সরকার নির্ধারিত ১২ টাকা দামে ডিম বিক্রি শুরু করছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি এসোসিয়েশন (বিপিএ)। একইভাবে প্রান্তিক খামারিদের মতো করপোরেট উদ্যোক্তাদের সারা দেশে নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রির উদ্যোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর কাওরান বাজারে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) চত্বরে ভোক্তাদের নিকট সরাসরি ডিম বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় টিসিবি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান এবং বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
কার্যক্রমের আওতায় পর্যায়ক্রমে রাজধানীর ১৬ থেকে ২০টি পয়েন্টে প্রতিদিন প্রতিটি পয়েন্টে ১২ টাকা দরে ২০ হাজার ডিম বিক্রি করা হবে। তবে চাহিদা থাকলে এ সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। একজন ভোক্তা এক থেকে সর্বোচ্চ ৩০টি ডিম কিনতে পারবেন।
ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী ১৪ সেপ্টেম্বর ডিমসহ ৩টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করার পর থেকে তা বাস্তবায়নে ভোক্তা অধিদপ্তর মাঠে নেমেছে। সম্প্রতি মহানগর পুলিশ বাজার তদারকিতে ভোক্তা অধিদপ্তরের সঙ্গে আছে। এর মধ্যে আলু ও ডিমের দাম কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসলেও আবার বেড়ে গেছে। এতে সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়েছে। ভোক্তা ও সরবরাহকারীদের সহায়তা ছাড়া বাজার তদারকি করে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কারণ প্রতিটি পণ্য এত এত হাত বদল হয়, যেজন্য দাম বেড়ে যায়। তার পরেও আমরা যথা সাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর মধ্যে পোলট্রি এসোসিয়েশন নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। কারণ এ উদ্যোগে বাজারে প্রভাব পড়ছে। এ কার্যক্রম শুধু ঢাকায়। সেজন্য আমি ডিম উৎপাদন ও সরবরাহে বড় যে ৫-৬টি প্রতিষ্ঠান, সেসব মালিকদের বলব- আপনারা প্রান্তিক খামারিদের মতো সারা দেশে এ কার্যক্রম শুরু করতে পারেন। এতে যে সহযোগিতা প্রয়োজন হবে আমরা দেব।
টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান বলেন, সরকারের নির্দেশনায় টিসিবি সারা দেশে তার সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে প্রান্তিক খামারিদের এ উদ্যোগ মহৎ। আসলে সরকার ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণের আগে সব পক্ষের লাভের হিসাব করেই নির্ধারণ করেছে। এটি যৌক্তিক। কিন্তু সাধারণ মানুষ কিনতে পারছ না। যেজন্য প্রান্তিক খামারিরা নির্ধারিত দামে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন। একইভাবে এ খাতে যারা বড় প্রতিষ্ঠান আছে, তারাও এগিয়ে আসতে পারে। আমার বিশ্বাস প্রান্তিক খামারিরা পারলে করপোরেট প্রতিষ্ঠানও পারবে।
এ সময় তিনি টিসিবির কার্ডধারীদের জন্য সরকারের কার্যক্রমের বিষয়ে বলেন, সরকার দেশব্যাপী এক কোটি ফ্যামেলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সরবরাহ করছে। এ ক্ষেত্রে সরকার অনেক ভর্তুকি দিচ্ছে। বাজার পরিস্থিতিতে যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে, সেসব খাতের উদ্যোক্তারা ন্যায্যমূল্য বিক্রির উদ্যোগ নিলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।
বিপিএ সভাপতি বলেন, সরকার উৎপাদন ও খুচরা পর্যায়ে যে দাম ঠিক করে দিয়েছে তা যৌক্তিক। কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যেজন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, ভোক্তা ও খামারিদের মধ্যে দূরত্ব কমে আসুক। আমরা চাই ভোক্তা ন্যায্যমূল্য ডিম খাবে এবং খামারি ন্যায্যমূল্য পাবে।
এ সময় তিনি বলেন, দেশে পর্যাপ্ত ডিম আছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিম আমদানির প্রয়োজন নেই। ভোক্তাদের নিকট নির্ধারিত দামে ডিম পৌঁছাতে পারলে বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
মন্তব্য করুন