বাংলাদেশ ব্যাংক সমবায় সমিতি হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন,
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন দুষ্টের দমন সৃষ্টির পালন না করে, সৃষ্টির দমন দুষ্টের পালন করছে এবং এটি চলছে দীর্ঘদিন থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন সমবায় সমিতির মতো হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যবসায়ী ও ব্যাংক ডিরেক্টর দেশসহ যৌথভাবে ডিসিশন নেয়। মানে তারা ব্যবসায়ীদের চাপে আছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এখনো হতে পারেনি।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০২১-২২ এ আমাদের চাহিদা থাকার পরও টাকার দর ধরে রাখা হয়েছিল। এতে আমাদের ক্ষতি হয়েছে। টাকার দর এখন একসাথে অবমূল্যায়ন করতে হয়েছে। তাহলে আমাদের ১২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে লাভটা হলো কী? এটা নিয়ন্ত্রক সংস্থার ফেইলিউর এবং বড় ফেইলিউর।
তিনি বলেন, এই যে ঋণ পুনঃতপশিলে ডাউন পেমেন্ট আপনারা মাত্র ২ শতাংশে নিয়ে এসেছেন। এটার কোনো মানে হয়? আমার সময় ছিল প্রথমবার পুনঃতপশিলে ১০ শতাংশ, দ্বিতীয়বারে ২০ শতাংশ, তৃতীয়বার পুনঃতপশিল করলে ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে। লোকজন ভয়ে তখন এ পরিস্থিতিতে যেত না। এখন পুনঃতপশিল করতে মাত্র দুই শতাংশ দিতে হচ্ছে। অর্থাৎ ১ লাখ টাকার ঋণে সে মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়েই ঋণ পুনঃতপশিল করতে পারছে। এ জন্য সবাই মহা আনন্দে এ পথে পা বাড়াচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এত ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কেন? এতগুলো সার্কুলার হচ্ছে কেন প্রতিনিয়ত? একটা সার্কুলার দেওয়ার পর একদিন-দুদিন পরেই আবার বলে না না, এটা হবে না। তারপর আরেকটা সার্কুলার দেয় সেটাও পরিবর্তন করে। আমি বলব, বাংলাদেশ ব্যাংকের এটি একটি পলিসি দুর্বলতা।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন ব্যাংকের মালিক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ মিলে একাকার হয়ে গেছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এই রকম নেই। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এমন পরিস্থিতি নেই। সেখানে রাজনীতিবিদরা কি ব্যাংক লোন করে, বা ব্যবসায়ীরা কি ব্যাংক লোন করে? এখন রাজনীতিবিদ ব্যবসায়ী যদি ব্যাংক লোন করে তাহলে তো ব্যাংকের টাকা ফেরত দেবে না। এটা স্বাভাবিক।
মন্তব্য করুন