জনস্বার্থে দ্রুততার সঙ্গে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া বাতিল, এনবিআর বিলুপ্ত না করা ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার দাবি উঠেছে।
শনিবার (৩ মে) এনবিআরে বিসিএস ট্যাক্সেশন অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) এ দাবি জানানো হয়েছে।
এছাড়া শিগগিরিই আয়কর ও কাস্টমস অ্যাসোসিয়েশন যৌথ ইজিএম করবে বলে জানা গেছে। ইজিএমে আয়কর ক্যাডারের সকল ব্যাচ থেকে একজন কর্মকর্তা তাদের ব্যাচের পক্ষ থেকে দাবি ও তার সপক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
ইজিএমে এনবিআরের সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি করা হয়েছে। এছাড়া অংশীজন হিসেবে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের সদস্যদের মতামত নিয়ে নতুন করে অধ্যাদেশের খসড়া জারি। রাজস্ব নীতি পৃথক করার ক্ষেত্রে আলাদা কমিশন বা বোর্ড রাখা।
মূলত রাজস্ব খাত সংস্কারের জন্য সরকার পরামর্শক কমিটি গঠনের পর দুই অ্যাসোসিয়েশন তাদের মতামত দিয়েছিল। সেই কমিটি কয়েক মাস আগে প্রতিবেদন জমা দিলেও তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। পরে তড়িঘড়ি করে রাষ্ট্রীয় স্বার্থবিরোধী ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। যা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের রয়েছে।
রাষ্ট্রের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারকে বাড়তি সুবিধা দিতে গিয়ে গোপনীয়তার সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদে খসড়ার অনুমোদনের পর ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন দুই ক্যাডারের কর্মকর্তারা। ৫৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে ফেলাকে রাষ্ট্রের বৃহৎ স্বার্থবিরোধী বলে মনে করেন আয়কর কর্মকর্তারা। তারা মনে করেন, প্রধান উপদেষ্টার গঠিত সংস্কার কমিটির স্পিরিটকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজস্ববিরোধী প্রস্তাবকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
খসড়ার বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরেন তারা। এতে বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব পদে রাজস্ব অভিজ্ঞতাবিহীন কর্মকর্তাকেও নিয়োগের ব্যবস্থা রাখা, নীতি বিভাগের বিভিন্ন পদে বিভিন্ন বিভাগের জন্য উন্মুক্ত রাখা, নীতি বিভাগকে ব্যবস্থাপনা বিভাগের তদারকির ব্যবস্থা রাখা, অভিজ্ঞতাবিহীন কর্মকর্তাকেও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব পদে পদায়নের সুযোগ রাখা, প্রশাসনিক অনুবিভাগে একমাত্র প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা রাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী। এর আগে ২৭ এপ্রিল বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের ইজিএমে একই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই দুই অ্যাসোসিয়েশন যৌথ ইজিএম করবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন তৈরি ও প্রকাশে খুব স্বাভাবিক থাকলেও এনবিআরের সংস্কার ইস্যুতেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন টালবাহানা ও গোপনীয়তা। এতে শুরু থেকেই চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছিলেন অনেক কর্মকর্তা ও খাত সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন