ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্মদানের পর থেকে মা শাহানা দুধ পান করাতে পারছিলেন না। পাশের বেডের আরেক সদ্য সন্তান জন্ম দেয়া মা নুসরাত এগিয়ে আসেন। তার বুকের দুধ পান করান নবজাতককে। কারণ নুসরাতের সন্তান তখন আইসিইউতে ভর্তি ছিল। নিজের সন্তান বাঁচবে না এই আশঙ্কা থেকে নুরসাত তার স্বামী শাশুড়িকে নিয়ে শাহানার সন্তানকে চুরি করে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে শিশু চুরির ঘটনায় জড়িত নারী নুসরাত তার স্বামীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নুসরাতের স্বামী নাজমুল হোসেন তুষার, শাশুড়ি নাহার বেগম ও ননদ নাদিরা ওরফে খুরশিদা।
রবিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন।
তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রাজমিস্ত্রি হিরোন মিয়া ও সাহানা বেগম দম্পতির পুত্র শিশুর জন্ম হয়। সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া নবজাতক মায়ের দুধ পাচ্ছিল না। এই সময়ে একই ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা নুসরাত দুধ দানে এগিয়ে আসেন। তার নবজাতক আইসিইউতে থাকায় তিনি এই সহযোগিতা করেন।
শিশু চুরির বিষয়ে ডিসি আশরাফ বলেন, তিন দিন ধরে সাহানার নবজাতককে দুগ্ধ দান করে আসছিলেন। এই সময়ে তার শিশুটি আইসিইউতে থাকায় তার শিশুটির বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা না থাকায় তিনি হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে ৩১ আগস্ট চুরি করে নিয়ে যান। এরপর শিশুটিকে নিয়ে আজিমপুর এলাকায় শিশুটিকে স্বামী তুষারের হাতে তুলে দেয়। এরপর ফের হাসপাতালের বেডে এসে শুয়ে থাকেন। আর তুষার শিশুটিকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়।
ডিসি আরও বলেন, এই ঘটনার তথ্য পেয়ে শাহবাগ থানা পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় নুসরাত নবজাতকটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। পরবর্তীতে তাকে জিজ্ঞাবাদে চুরির বিষয়টি স্বীকার করে৷ পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে স্বামী, শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নুসরাত সিজারের রোগী। সে অসুস্থ থাকায় থানা পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। নুসরাত সুস্থ হলে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে।
মন্তব্য করুন