রাজধানীর মৌচাকের ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পার্কিংয়ে একটি প্রাইভেট কার থেকে উদ্ধার হয় দুজনের মরদেহ। তারা হলেন- জাকির হোসেন (২৮) ও মিজানুর রহমান মিজান (৪৪)। এই দুজনকে আদম ব্যবসায়ীরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন জাকিরের বাবা আবু তাহের।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এ অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমার ছেলে জাকির গাড়িচালক ছিল। পল্টনের একটি ট্র্যাভেলস এজেন্সিতে আমেরিকা যাওয়ার জন্য ২৫ লাখ টাকা দিয়েছিল সে। রোববার (১০ আগস্ট) সকালে আদম ব্যবসায়িরা জাকির ও মিজানকে ঢাকার একটি হাসপাতালে রোগী দেখার কথা বলে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, জাকিরকে শ্রীলঙ্কা থেকে প্রায় ছয় মাস ঘুরিয়ে আনা হয়। এরপর থেকেই ওই এজেন্সিকে বিদেশে যাওয়ার কথা বললে বিভিন্ন সময় হুমকিও দিতেন মিরাজ, বজলু, ইমন, রাশেদ ও ফরহাদ। তারা আমার ছেলেকে মারধর করেছে। আমার বিশ্বাস তারা আমার ছেলেকে হত্যা করে ওই গাড়ির মধ্যে রেখেছে।
আবু তাহের আরও বলেন, আমার ছেলেসহ দুজন হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
অন্যদিকে নিহত মিজানের মামা মো. জাহেদ আহমেদ বলেন, আমার ভাগনে কৃষিকাজসহ গ্রামের অন্যান্য কাজ করত এবং ড্রাইভিং শেখার জন্য জাকিরের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছিল।
এর আগে, সোমবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর মৌচাকে সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পার্কিংয়ে থাকা একটি প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার (১০ আগস্ট) ভোরে সাদা রঙের ওই প্রাইভেটকারটি পার্কিংয়ে প্রবেশ করে। এরপর থেকে পার্কিংয়েই ছিল। সকালে মেডিকেল কলেজের প্রধান নিরাপত্তারক্ষী পার্কিংয়ে চেক করতে গেলে বিষয়টি তার নজরে আসে।
নিরাপত্তারক্ষী জানান, তিনি গাড়ির ভেতরে দুজনকে দেখতে পান। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন ঘুমিয়ে আছেন। তবে ডাকাডাকির পরও সাড়া না পেয়ে বুঝতে পারেন যে তারা মারা গেছেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপির রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম। তিনি বলেন, আমরা মালিকের খোঁজ পেয়েছি। তিনি রোববার ভোরের দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক আত্মীয়কে দেখতে আসেন ওই গাড়িতে করে। পরে তিনি একা চলে গেলেও গাড়ির চালক এবং তার সঙ্গী ওই গাড়িতে এসে অবস্থান করছিলেন।
বিষয়টি হত্যাকাণ্ড নাকি অন্যকিছু জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সিআইডিসহ অন্য এক্সপার্টরা আসছেন। তারা তদন্ত করবেন। এ ছাড়া মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণের কাজ চলছে। গাড়ির মালিকও আসছেন। সব ধরনের তদন্ত শেষে বিষয়টি হত্যাকাণ্ড নাকি অন্যকিছু সে বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন