কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৩, ০৬:৩৬ পিএম
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৩, ০৬:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘অপরাধীকেও মৃত্যুর মুখোমুখি হতে দেখলে মায়া লাগে’

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ৩২ বছর কারাভোগের পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া। কারাগারের প্রধান জল্লাদ হিসেবে ৩ দশকে ২৬ জন অপরাধীর ফাঁসি কার্যকর করেন তিনি।

আজ রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর ফাঁসি কার্যকরের আগে শাহজাহানের নিজের মানসিক অবস্থার কথা জানিয়ে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে দণ্ডিত মানুষগুলোর জন্য মায়া লাগলেও আইনের খাতিরেই তাকে কাজটি করতে হয়েছে।

শাহজাহান বলেন, ‘দীর্ঘদিন জেল খেটেছি। জেলে সার্ভিস দিয়েছি। কারাগারে ছিলাম। আমাকে কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট আদর করেছে, সম্মান করেছে। আমি ভালোই ছিলাম।’

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জল্লাদ হিসেবে ৩ দশকেরও বেশি সময়ে ২৬ জন অপরাধীর ফাঁসি কার্যকর করেছেন শাহজাহান।

যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তি, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি, জেএমবির সদস্য, এরশাদ শিকদার ও মুনীরের মতো বড় বড় অপরাধীকে ফাঁসি দেওয়ার কথা জানান তিনি।

যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দেওয়া নিয়ে তার অনুভূতি সম্পর্কে শাহজাহান বলেন, ‘যদি তারা সে অপরাধ করে থাকে আমি তো আর তাদের মনের খবর বলতে পারব না, যেহেতু তারা দোষী হয়েছে, অপরাধ করেছে, সে হিসেবে তো আমার খারাপ লাগার কথা না।’

তিনি বলেন, ‘আমি অন্যের বাড়িতে উঠছি এখন। তাহলে আমি কী করে খাব? কোথায় যাব, কী করব? এখন তো আর আমার সেই বয়স নেই। আমার বয়স ৭৪। আমি এখন কী করব? আমার একটাই কথা আপনাদের কাছে, আপনারা যদি একটু সাহায্য করেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার একটাই অনুরোধ। আমাকে যেন বাড়িঘর দিয়ে, আমাকে চলার মতো কিছু করে দেন। এটাই আমার অনুরোধ।’

ফাঁসির অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে শাহজাহান বলেন, প্রতিটি ফাঁসিতেই কিছু আবেগ জড়িত। কারণ আমার হাত দিয়ে একটা লোক যাচ্ছে। একটা মানুষ যত অপরাধই করুক, তাকে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে দেখলে সবারই মায়া হয়। কিন্তু আমি মায়া করলেও তো আদালত বা আইন তো মায়া করবে না। আমি চলে আসার পরও অপরাধীদের ফাঁসি হবে। মায়া লাগলেও আইনের খাতিরে আমাকে কাজটা করতে হয়েছে। শাহজাহান জানান, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার ফাঁসির আগে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে শুধু একটি কথাই বলেছিলেন, আমার জীবনে আমি কখনো কোনো অপরাধ করিনি, আমার জন্য দোয়া করবেন। বাংলাভাই নামে পরিচিত জেএমবি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম অনুরোধ করেছিলেন তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পরে যেন ছবি তোলা না হয়।

শাহজাহান আরও জানান, বঙ্গবন্ধুর খুনিরা একেবারেই চুপচাপ ছিলেন। তারা কোনো কথাই বলেননি। ফাঁসি দেওয়ার আগে মুনীর বলেছিলেন, আমাকে একটা সিগারেট দাও।

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি সম্পর্কে শাহজাহান বলেন, ওইসময় তিনি চুপচাপ ছিলেন। একটা মানুষ যত উচ্ছৃঙ্খলই হোক না কেন, সে যখন জানতে পারে যে সে আজ দুনিয়া থেকে চলে যাবে, তখন তার মুখ দিয়ে আর কোনো খারাপ কথা আসে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কাশ্মীরে ‘ইসরায়েলি স্টাইলে’ প্রতিশোধের শঙ্কা

ঈদ পেরিয়ে ‘মেঘের বৃষ্টি’

রাতারাতি ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হলো পহেলগাম

জবি রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে কুশপুত্তলিকা দাহ, ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম

পলকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা

সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক ভারতের

পিপলস ইউনিভার্সিটিতে ‘ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ডে’ উদযাপন 

রাজশাহীতে শিবির নেতা হত্যা মামলার আসামি আ.লীগ কর্মীকে গুলি

বর্তমান সভ্যতা শুধু বিশ্বজুড়ে বর্জ্য তৈরি করছে : প্রধান উপদেষ্টা

পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা / মুম্বাইসহ উপকূলীয় অঞ্চলে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি

১০

পুলিশ সুপার তানভীর সালেহীন সাময়িক বরখাস্ত

১১

ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল

১২

চাকরি আইন সংশোধন হচ্ছে / তদন্ত ছাড়াই ৮ দিনের নোটিশে অব্যাহতি

১৩

আমেরিকার তৈরি বন্দুকে কাশ্মীরে হামলা

১৪

হামলায় জড়িতদের পরিচয় জানাল কাশ্মীরি পুলিশ 

১৫

দোহায় শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

১৬

পহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানকে বিসিসিআইয়ের কড়া বার্তা

১৭

কাশ্মীরে ব্যাপক গোলাগুলি চলছে, ভারতীয় সেনা নিহত

১৮

শিক্ষা উপদেষ্টাকে এক হাত নিলেন বৈষম্যবিরোধী নেতা

১৯

সিলেটে জিতে চট্টগ্রামেও ভালো করার প্রত্যাশা জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের

২০
X