পাহাড়খেকো হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম শিবির ও ছাত্রদল কর্মী হত্যা মামলারও আসামি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সিএমপির বিভিন্ন থানায় মোট ১৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি হত্যা মামলা, পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে তিনটি, চাঁদাবাজির দুটি, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে একটি, বিস্ফোরক আইনে দুটি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে দুটি মামলা আছে। এ ছাড়া অন্যান্য ধারায় আছে আরও ছয় মামলা।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্স মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন নগর পুলিশের উত্তর বিভাগের উপকমিশনার আমিরুল ইসলাম।
গ্রেপ্তার জহুরুল আলম জসিম চসিকের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। এ ছাড়া তিনি উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন।
উপপুলিশ কমিশনার আমিরুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই নগরের ষোলশহর ও মুরাদপুর এলাকায় জসিমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় সেদিন ছাত্রদল কর্মী ওয়াসিম আকরাম, শিবির কর্মী ফয়সাল আহমেদ শান্ত ও ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। হামলায় ৪০ থেকে ৫০ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। জসিম জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করেন, আমাদের তদন্তে যার সত্যতা পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীকে ছাড়াতেই জসিম নিজেই ধরা দিয়েছেন— এমন প্রশ্নে উপপুলিশ কমিশনার আমিরুল বলেন, ‘এটা হাস্যকর স্টেটমেন্ট। আমি নিজে সেখানে ছিলাম। তিনি আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।’ গত বুধবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন জসিম। পরদিন সকালে তাকে চট্টগ্রাম আনা হয়।
তিনি আরও বলেন, এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে কাউন্সিলর জসিমের খোঁজে নগরীর আকবর শাহ থানার এ কে খান মোড়ে ‘গ্রিন গুলবাহার টাওয়ার’ নামে একটি ১৪তলা আবাসিক ভবন ঘিরে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। রাতভর ভবনটির প্রতিটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েও জসিমকে তারা খুঁজে পায়নি। পরদিন দুপুরে ডবলমুরিং থানা পুলিশ ওই টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাটে আবারও অভিযান চালিয়ে জসিমের স্ত্রী তাসলিমা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। পরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
মন্তব্য করুন