

চট্টগ্রাম নগরীর দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হিসেবে শতভাগ বর্জ্য সংগ্রহ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তার মতে, নগরীর সব ময়লা-আবর্জনা যথাযথভাবে অপসারণ করা গেলে জলাবদ্ধতা অনেকটাই ইতিহাস হয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে কাজীর দেউড়ির একটি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে আমরা সংগ্রহ করতে পারছি ২২০০ টন। বাকি অংশটি যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে— বাসার জানালা দিয়ে, কিংবা রাস্তায় চলন্ত গাড়ি থেকে।’
তিনি জানান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে ‘ডোর টু ডোর’ সংগ্রহ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ‘বাসাবাড়ি থেকে মাসে ৭০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও কেউ যদি বেশি নেয়, সেটির লিখিত অভিযোগ দিন। আমরা তাদের বরাদ্দ বাতিল করব,’ বলেন মেয়র শাহাদাত।
শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে প্লাস্টিক বর্জ্যের আলাদা কনটেইনার স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শতভাগ ময়লা সংগ্রহ করতে পারলে জলাবদ্ধতা আর থাকবে না। তবে নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। ময়লা-আবর্জনার কারণেই ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ ছড়াচ্ছে।’
মেয়র আরও জানান, হালিশহরে বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ‘কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে হয়তো ময়লার জন্য নাগরিকদের আর টাকা দিতে হবে না, বরং আমরাই তাদের টাকা দেব,’ বলেন তিনি।
গত ৩০ বছরের জলাবদ্ধতা সমস্যার ৫০-৬০ ভাগ সমাধান হয়েছে দাবি করে মেয়র বলেন, ‘এখন আর মানুষ পানির মধ্যে বাস করে না। আগে যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র তৈরি হতো, সেসব জায়গায়ও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।’
আগামী এক বছরে ৫০-৬০টি বড় রাস্তা উদ্বোধনের ঘোষণা দিয়ে মেয়র জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে ‘আমাদের চট্টগ্রাম’ নামে একটি অ্যাপ চালু করা হবে, যেখানে ময়লা, রাস্তা, আলো, মশা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাসহ ১০টি সেবা থাকবে।
কিশোর অপরাধ রোধে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন কার্যক্রম এবং ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন মেয়র।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ, সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ, সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, ওয়াসার ভারপ্রাপ্ত এমডি মনোয়ারা বেগমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন।
মন্তব্য করুন