

বিশ্বব্যাপী টেক্সটাইল বাণিজ্য প্রদর্শনী আয়োজক মেসে ফ্রাঙ্কফুর্ট—যাদের ৬০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল ইভেন্ট রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দ্যা ওয়েস্টিন ঢাকাতে এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে টেকটেক্সটিল ও টেক্সপ্রসেস ২০২৬-এর ঘোষণা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এ দুটি শীর্ষ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্ভাবন এবং মূল্য সংযোজন বাড়াতে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা হয়।
২০২৬ সালের ২১-২৪ এপ্রিল জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে অনুষ্ঠিতব্য টেকটেক্সটিল ও টেক্সপ্রসেসে বিশ্বের শীর্ষ বিশেষজ্ঞরা আবারও একত্রিত হবেন। একই ছাদের নিচে প্রদর্শিত হবে প্রযুক্তিগত টেক্সটাইল, ফাংশনাল অ্যাপারেল ফ্যাব্রিক, নন-ওভেনস এবং আধুনিক পোশাক উৎপাদন যন্ত্রপাতির সবচেয়ে বিস্তৃত পরিসর। বিশ্ববাজারে গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশের নেতৃত্বের কারণে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ভিজিটর দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করেন মেসে ফ্রাঙ্কফুর্ট এসপি বাংলাদেশের হেড অব অপারেশনস মিস আফরোজ। যিনি বৈশ্বিক টেক্সটাইল ও প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ভূমিকা ও অবদানের ওপর জোর দেন।
এক্সপোর্ট প্রোমোশন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বিজিএমইএর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে প্রযুক্তিগত ও ভ্যালু-অ্যাডেড টেক্সটাইলে বিশেষায়িত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। ২০২২ এবং ২০২৪ সালে সফল অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতায় ২০২৬ সালে আরও বড় প্যাভিলিয়ন প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১০০ জনেরও বেশি ট্রেড ভিজিটর টেকটেক্সটিল ও টেক্সপ্রসেসে অংশ নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রদর্শক ও ক্রেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। টেকটেক্সটিল-এর ১৪টি কান্ট্রি প্যাভিলিয়ন—যার মধ্যে বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ড রয়েছে এবং টেক্সপ্রসেসের চীন ও তাইওয়ানের দুটি প্যাভিলিয়ন বাংলাদেশি ভিজিটরদের আধুনিক টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি এবং ইনোভেশন সম্পর্কে মূল্যবান অভিগম্যতা প্রদান করে। এসব প্রদর্শনী নেটওয়ার্কিং, জ্ঞানবিনিময় এবং সহযোগিতা বাড়িয়ে বাংলাদেশের নির্মাতাদের উৎপাদন আধুনিকায়ন, মান উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন হতে সহায়তা করে।
আন্তর্জাতিক এ ধরনের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ নতুন বাণিজ্য সুযোগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই ও উচ্চমানের টেক্সটাইল উৎপাদনে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করে। বৈশ্বিক উদ্ভাবক, সরবরাহকারী ও যন্ত্র প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো স্মার্ট টেক্সটাইল, অটোমেশন, পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়া ইত্যাদি উদীয়মান প্রবণতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা লাভ করে—যা প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি, পণ্যের বৈচিত্র্য এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অবস্থান বিস্তারে সহায়তা করে।
টেকটেক্সটিল ও টেক্সপ্রসেস সম্পর্ক ফ্রাঙ্কফুর্টে একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত টেকটেক্সটিল হলো প্রযুক্তিগত টেক্সটাইল ও নন-উভেনসের আন্তর্জাতিক শীর্ষ প্রদর্শনী; আর টেক্সপ্রসেস কেন্দ্রীভূত টেক্সটাইল ও পোশাক উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াজাত প্রযুক্তির ওপর। একসঙ্গে তারা ফাইবার, ফ্যাব্রিক থেকে শুরু করে উৎপাদন, ফিনিশিং এবং ডিজিটাল ইনোভেশন পর্যন্ত টেক্সটাইল ভ্যালু চেইনের সম্পূর্ণ অংশকে উপস্থাপন করে—যা বিশ্বব্যাপী নির্মাতা, সরবরাহকারী এবং ক্রেতাদের এক কেন্দ্রে যুক্ত করে।
মেসে ফ্রাঙ্কফুর্ট সম্পর্ক ১৮০টিরও বেশি দেশে উপস্থিতি এবং ৫০টিরও বেশি টেক্সটাইল-সম্পর্কিত ইভেন্ট নিয়ে মেসে ফ্রাঙ্কফুর্ট বিশ্বের বৃহত্তম ট্রেড ফেয়ার, কংগ্রেস ও ইভেন্ট আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম। কোম্পানিটি বৈশ্বিক শিল্পগুলোকে সংযোগ, উদ্ভাবন এবং বিকাশের প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে—আন্তর্জাতিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও বিক্রয় অংশীদারদের মাধ্যমে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা এবং স্থানীয় দক্ষতাকে একত্রিত করে।
মন্তব্য করুন