বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
মো. সামীর আল মাহমুদ, ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঝালকাঠিতে নদীতে ইলিশ নেই, পেশা নিয়ে শঙ্কায় জেলেরা!

নদী তীরে বাঁধা জেলের নৌকা। ছবি : কালবেলা
নদী তীরে বাঁধা জেলের নৌকা। ছবি : কালবেলা

নদীতে অসংখ্য ডুবোচর, গভীরতা কমে যাওয়ায় সুগন্ধা আর বিষখালী নদীতে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে জাতীয় মাছ রুপালি ইলিশ। এ ছাড়া যেটুকু পাওয়া যায়, তাতে দেখা যায় ছোট হয়ে যাচ্ছে মাছের আকার। এ অবস্থায় পেশায় টিকে থাকা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ঝালকাঠির সাড়ে তিন হাজার জেলে।

মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ নানা কারণে নদীতে ইলিশ কম আসছে। এতে জেলায় ইলিশের সরবরাহ আশানুরূপ হচ্ছে না।

জেলেরা জানান, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১২টি নদী থাকলেও সুগন্ধা ও বিষখালী নদী দুটি জেলার ৪টি উপজেলা ঝালকাঠি সদর, রাজাপুর, কাঁঠালিয়া নলছিটিকে ঘিরে রেখেছে। এ দুই নদীর পাড়ে কয়েক হাজার জেলের বসবাস যাদের পেশা মাছ শিকার। বংশ পরম্পরায় ইলিশ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এক সময় সুগন্ধা, বিষখালী নদীতে জাল ফেললেই মিলত ঝাঁকে ঝাঁকে কাঙ্ক্ষিত রুপালি ইলিশ।

কিন্তু নদী দুটিতে জাল ফেললে আগের মতো আর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। আর যা পাওয়া যায়, তা আকারে ছোট। ফলে জেলেদের মধ্যে নেমে এসেছে হতাশা।

বৈশ্বিক জলবায়ুর প্রভাবে নদী যেমন শুকিয়ে যাচ্ছে, তেমনি সেতু ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং চর দখল করে স্থাপনা গড়ে তোলায় নদীতে সুষ্টি হচ্ছে ডুবোচর; কমেছে পানি। ফলে সমুদ্র থেকে ইলিশ নদীতে আসার পথে বাধা পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। কিছু আসলেও গভীর পানির মাছটি তার স্বাভাবিক পরিবেশ না পেয়ে বেড়ে উঠতে পারছে না।

সুগন্ধা নদীতে ইলিশ শিকার করেন উত্তম মালো। বাবা ও দাদার সঙ্গে তিনি বিষখালী ও সুগন্ধা নদীতেও মাছ ধরেছেন। তাদের মৃত্যুর পরও আঁকড়ে আছেন এ পেশা। তিনি বলেন, ‘বাপ-দাদার আমলে আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের বড় বড় ইলিশ ধরেছি। আর এখন মাত্র সাড়ে সাতশ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশের দেখা পাওয়া যায় না।’

তিনি আরও বলেন, নদীর নাব্য কমে গেছে। গভীর পানির ইলিশ এখন সুগন্ধা ও বিষখালীতে এসে উপযোগী পরিবেশ পাচ্ছে না। ফলে মাছের আকারও দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে।

সুগন্ধা পাড়ের জেলে পরিবারের নারী শেফালী ঝালো বলেন, ‘প্রতিবছর এই মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরে যে আয় হয়, তা দিয়েই আমাদের সারা বছর চলতো। আবার ধারদেনাও পরিশোধ করেছি। কিন্তু এ বছর ভরা মৌসুমেও আমার স্বামী খালি হাতে ফিরে আসছেন। এতে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ও বাজার খরচসহ দেনা কীভাবে পরিশোধ করব, ভেবে পাচ্ছি না।’

ঝালকাঠি পূর্বচাঁদকাঠির মাছের আড়তদার দেবু মালো বলেন, ‘আষাঢ় মাস ইলিশের মৌসুম। বৃষ্টিও হচ্ছে; কিন্তু বাজারে ইলিশের সরবরাহ নেই। জেলেরা শূন্য হাতে আসছেন। আর ইলিশ না পেয়ে ক্রেতারা বাজারে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব উল্লেখ করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘দিন দিন নদীতে ইলিশ আসা কমে যাচ্ছে। ফলে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। তবে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য গবাদিপশু বিতরণসহ বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘চশমা’ প্রতীকে নির্বাচন করবে আট দলের শরিক জাগপা

মানুষের অধিকারের প্রশ্নে খালেদা জিয়া সব সময় আপসহীন : মাসুদুজ্জামান

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির ওমরাহ পালন

সেঞ্চুরিও বাঁচাতে পারল না ভারতকে, সমতায় সিরিজ

মাদকাসক্ত ছেলের আগুনে পুড়ল বসতঘর

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় হাসপাতালে চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল

মাদ্রাসাছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু

শরীয়তপুরে খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় মিলাদ ও দোয়া

পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের যে দাবি

সন্তানহারা মা কুকুরটিকে দেওয়া হলো দুটি নতুন ছানা

১০

সালাউদ্দিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি বিসিবি, থাকছেন জাতীয় দলের সাথেই

১১

সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার কাজী আলাউদ্দিনের

১২

স্কুলে ভর্তিতে বয়সসীমা নিয়ে নতুন নির্দেশনা

১৩

বাস-ভ্যানের সংঘর্ষে প্রাণ গেল দুজনের

১৪

চা খেয়ে ফিরছিলেন চার বন্ধু, একে একে প্রাণ গেল তিনজনের

১৫

বিশাল এক ইলিশ ১৪ হাজারে বিক্রি

১৬

পিকনিকের কথা বলে ডেকে নিয়ে শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪

১৭

রাফিনিয়ার ফেরায় বদলে গেছে বার্সা—ফ্লিকের ভাগ্যও!

১৮

খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় রমনা কালী মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা

১৯

খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য কোরআন খতম ও দোয়া

২০
X