কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দিনে দিনে সংকুচিত হয়ে আসছে কুয়াকাটার সৈকত

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ছবি : কালবেলা
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ছবি : কালবেলা

সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সৈকতকে ক্রমশই গ্রাস করছে ক্ষুধার্ত সাগর। দিনে দিনে বাড়ছে বালুক্ষয়। বড় বড় ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙছে পাড়। ফলে ছোট হয়ে আসছে সৈকত। রূপ সৌন্দর্যের সৈকতটি তার নিজস্ব জৌলুস হারিয়েছে।

প্রতিবছর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির চাপ বৃদ্ধি পায় সাগরে। অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে সাগর উত্তাল হয়ে পড়ে ফলে বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ে সৈকতে। ফলে বিলীন হয়ে গেছে বিখ্যাত নারিকেল বাগান, সারি সারি ঝাউবনসহ নানা স্থাপনা। বিখ্যাত ফয়েজ মেয়ার নারিকেল বাগান কেবলই এখন স্মৃতি।

বালুক্ষয়ের শিকার হয়ে সীমানাপ্রাচীরসহ পুরো বায়ো গ্যাস প্লান্ট ভবনটি এখন অদৃশ্য। বালু গর্ভে স্থান পেয়েছে ওই ভবনের ধ্বংসাবশেষ। জাতীয় উদ্যানটি এরই মধ্যে চলে গেছে সাগরে। এ ছাড়াও জিও ব্যাগে সয়লাব পুরো সৈকতজুড়ে যা ভয়াবহ দুর্ঘটনা বয়ে আনতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বেড়াতে আসা পর্যটকরা।

সরেজমিনে সৈকত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে যে, বিগত ৫ বছর ধরেই সৈকত সংকুচিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘুর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ১ কিলোমিটার সৈকতের ক্ষয় হয়েছে। হাজার হাজার গাছ উপড়ে পড়ে আছে সৈকতে। জাতীয় উদ্যান চলে গেছে সমুদ্রে। বড় বড় জায়গাজুড়ে ফাটল ধরে বিলীন হয়ে যায় সাগরে।

পাশাপাশি প্রাকৃতিক বনাঞ্চল লেম্বুর চর, ঝাউবন, শালবন, নারিকেল বাগান পড়েছে ধ্বংসের মুখে। এভাবে বালুক্ষয় অব্যাহত থাকলে অতি কম সময়ের ব্যবধানে কুয়াকাটা বেড়িবাঁধের বাইরের সকল স্থাপনা সাগরের গর্ভে চলে যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়।

প্রচুর সম্ভাবনা থাকতেও কুয়াকাটা কেনো অবহেলায় পড়ে আছে তা রীতিমতো হতাশ করে কুয়াকাটা উন্নয়ন প্রেমিক ও পর্যটকদের।

দ্রুত বালুক্ষয় রোধসহ কুয়াকাটার উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসবেন কর্তা ব্যক্তিরা এমনটাই আশা প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীসহ কুয়াকাটার সচেতন মহল।

স্থানীয় হাজী আ. মান্নান হাওলাদার বলেন, আমার ছোট সময়ে সাগরে হেঁটে যেতে পারিনি। সেই সাগর দেখা যায় রাস্তায় বসে। এখনি ভাঙা ঠেকাতে হবে না হয় সাগরের তলে সব চলে যাবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. ইসমাইল খলিফা বলেন, সৈকতকে রক্ষা করা দরকার। আমি ৩ কিলোমিটার দূরে ব্যবসা করতাম। আজ সাগর বিলীন হওয়ায় আমি এখন ব্যবসা করি চৌরাস্তায় বসে। হয়তো বছর দুয়েক পরে বেড়িবাঁধের বাইরে কেউ থাকতে পারবে না।

ট্যুরিজম অ্যান্ড সিভিল অ্যাভিয়েশনের পরিচালক ও পর্যটন ব্যবসায়ী মো. নাসির মজুমদার বলেন, ২০০৯ সালের শুরুতে আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় কুয়াকাটায় ইনভেস্ট শুরু করি। আমার দেখাদেখিও অনেকে ইনভেস্ট শুরু করেছিল। কিন্তু সৈকত ক্ষয়ে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এত সম্ভাবনাময় স্থান হওয়া সত্ত্বেও সৈকত রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় কুয়াকাটা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে আলাপকালে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বিভাগ, কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, বিগত ৫ থেকে ৬ বছর ধরেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণেই সৈকত সংকুচিত হচ্ছে এবং শোরলাইন চলে যাচ্ছে। তাই সৈকতকে রক্ষা করার জন্য এরইমধ্যে স্থায়ী বাঁধ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে জন্য ৭৫৯ কোটি টাকার একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ১২ কিলোমিটার সৈকত স্থায়ী রক্ষা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন গিল, পরের টেস্টে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তা

তরুণদের নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়া হবে : হারুনুর রশিদ

আরও ১০০ যুদ্ধবিমান কিনছে ইউক্রেন

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু

আমি কোনো পার্টিতে যাই না: নোরা ফাতেহি

বরিশালে শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতা

পল্লবী থানা যুবদলের সদস্য সচিবকে গুলি করে হত্যা

নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধে প্রতিশ্রুতি আমিনুল হকের

১০

শেখ হাসিনা ও কামালের আপিল করার সুযোগ নিয়ে যা জানা গেল

১১

যুবদলের এক নেতা বহিষ্কার

১২

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে : খন্দকার মোশাররফ

১৩

রাজধানীর ২ স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ দুর্বৃত্তদের

১৪

ভয়াবহ আগুনে পুড়ল ৭ দোকান

১৫

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের ধোঁয়া, যাত্রীরা আতঙ্কিত

১৬

চট্টগ্রাম বন্দরে রুশ যুদ্ধজাহাজ

১৭

রায় ঘোষণার পর আ.লীগ অফিসে আগুন

১৮

আখাউড়ায় শ্রমিক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৯

‘ভুডু’ বিতর্কে থামল নাইজেরিয়ার বিশ্বকাপ স্বপ্ন

২০
X