বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে কারখানা শ্রমিক আশিক মিয়া (২০) ও ঘুরতে আসা শফিক মিয়া (২৮) নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে আসামি করে দুটি পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকালে সোনারগাঁ থানায় নিহত আশিক মিয়ার মা কুলসুম বেগম (৪৭) এবং নিহত শফিক মিয়ার চাচাতো ভাই হানিফ বাদী হয়ে পৃথকভাবে দুটি মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার ওসি এসএম কামরুজ্জামান।
আন্দোলনে নিহত আকাশ মিয়া (২০) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্চারামপুরের গকুল নগর পশ্চিমপাড়ার মৃত কামাল মিয়ার ছেলে। তিনি উপজেলার কাঁচপুর বিসিক এলাকায় মক্কা ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি কারখানায় কাজ করতেন।
অপরদিকে নিহত শফিক মিয়া (২৮) শেরপুর জেলার নকলা এলাকার চিথলিয়া গ্রামের জুলহাস মিয়ার ছেলে। তিনি কাঁচপুর এলাকার রিকশাচালক হানিফ (৪০) মিয়ার চাচাতো ভাই। তিনি স্থানীয় এলাকার বেহাকৈর এলাকার জলিল সাহেবের ভাড়াটিয়া।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, আব্দুল্লাহ আল কায়সারসহ ১২২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৩০০ থেকে ৪০০ জনসহ মোট ৪২২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অপর মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, আব্দুল্লাহ আল কায়সার, অয়ন ওসমান, আজমেরী ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজীসহ ১৫৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১২০ থেকে ২০০ জনসহ মোট ৩৫৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। দুই মামলায় সর্বমোট ৬৯৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট উপজেলার কাঁচপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘর্ষের সময় কাজ থেকে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয় বিসিক এলাকায় মক্কা ইন্ডাস্ট্রির শ্রমিক আকাশ মিয়া। পরে স্থানীয়রা তাকে মদনপুর বারাকাহ হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে গত ৫ আগস্ট সকালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
অপরদিকে গত ৪ আগস্ট কাঁচপুরে আকাশ মিয়ার চাচাতো ভাই রিকশাচালক হানিফ মিয়ার বাসায় বেড়াতে গিয়ে ঘুরতে বের হলে স্থানীয় সিনহা গার্মেন্টসের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
মন্তব্য করুন