ছররা গুলিতে আহত হয়ে দৃষ্টি হারাতে বসেছেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু। গুলিতে দুটি চোখই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার। বাম চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না তিনি। অপরদিকে অপারেশনের মাধ্যমে ডান চোখে ল্যাসিক করা হলেও এখন পর্যন্ত চোখটি শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
গত মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার চোখের দ্বিতীয় দফায় অপারেশন সম্পন্ন হয়।
শহীদুলের চোখের অস্ত্রোপচার করা চিকিৎসক নিয়াজ আব্দুর রহমান জানান, গুলিতে তার বাম চোখ এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল। অপারেশনের মাধ্যমে সেটি থেকে গুলি বের করা হয়েছে। চোখটিতে দৃষ্টি ফিরবে কিনা সেটি বুঝতে অন্তত ৬ মাস লাগবে।
তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়া ডান চোখে লেজার করা হয়েছে। তবে চোখটিতে আরও একটি গুলি রয়ে গেছে। এটি বেশি ভেতরে থাকায় বের করা যায়নি। এই চোখে আংশিক দৃষ্টিশক্তি থাকলেও গুলিটি বের করা না গেলে পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন তিনি।
টিটুর দাবি, গত ২৯ জুলাই দুপুরে দলীয় কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের ছোড়া শটগানের গুলি লাগে টিটুর চোখে। চোখ ছাড়াও শরীরের আরও অন্তত ৮টি স্থানে গুলি লাগে। গুলি লাগার পর থেকেই বাম চোখে আমি কিছু দেখতে পাচ্ছি না।
এদিকে বিএনপি নেতা টিটুর চোখে গুলির বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।
তিনি বলেন, মনে হচ্ছে টিটুর দুটি চোখ নষ্ট হওয়ার পথে। সে বাম চোখে দেখছেই না। আর ডান চোখে ঝাপসা দেখছে। ডাক্তার জানিয়েছে তার বাম চোখ থেকে একটি গুলি বের করা হয়েছে। চোখে জমে থাকা রক্তও বের করা হয়েছে। আরও অপারেশন বাকি রয়ে গেছে।
তিনি অভিযাগ করে বলেন, সেদিন আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সিদ্ধিরগঞ্জে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোড়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছিলাম। সেখানে বিনা উস্কানিতে পুলিশ আমাদের ওপর গুলি করে। এ সময় পুলিশের গুলি টিটুর চোখে লাগে। আমরা এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করছি।
টিটুর স্ত্রী আফরোজা ইসলাম বলেন, আমার স্বামী বাম চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। ডান চোখে দৃষ্টি থাকলেও চোখের ভেতরে গুলি রয়েছে। গুলিটি বের করা না গেলে পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন বলে চিকিৎসকরা শঙ্কা করছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জর ডাচ বাংলা মোড়ে দলীয় কর্মসূচি পালনের সময় বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ গুলি করলে টিটু চোখে গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পরদিন রোববার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মুমিনুল হক বাদী হয়ে ২৩ বিএনপি নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মন্তব্য করুন