রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

আবু সাঈদের নামে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করবে হেফাজত

রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে আয়োজিত রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত
রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে আয়োজিত রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের স্মরণে ‘জামিয়া শহীদ আবু সাঈদ’ নামে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান। মাদ্রাসাটি আবু সাঈদের গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে তার কবরের পাশে প্রতিষ্ঠা করা হবে।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে আয়োজিত রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন তিনি।

হেফাজতের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, জালেম শাসকগোষ্ঠী থেকে স্বাধীনতা অর্জনে উলামায়ে কেরামের সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে। আগামীতে এই জমিনে কোনো জালিমকে ছাত্র-জনতা বরদাশত করবে না। শহীদ আবু সাঈদসহ ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে, ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলনে এবং ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারীদের স্মরণে “জামিয়া শহীদ আবু সাঈদ” নামকরণ করে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হবে। এটি আবু সাঈদের কবরের পাশে প্রতিষ্ঠা করব।

তিনি আরও বলেন, সংবিধান সংশোধন করে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস প্রতিস্থাপন করতে হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম থেকে ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সকল বিষয় বাদ দিয়ে নতুন পাঠ্যপুস্তক তৈরি করতে হবে। ২০১৩ সাল থেকে আজ অবধি হেফাজতের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

গণসমাবেশে যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনা রাতে দংশন করত সংখ্যালঘুদের আর দিনের বেলা ওঝা হয়ে ঝাড়ত। কিন্তু ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের নাটক বন্ধ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে। হেফাজতে ইসলাম সম্প্রীতির বাংলাদেশ চায়, কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামা চায় না।

তিনি আরও বলেন, বিরোধীদল হিসেবে বিএনপি নির্যাতনের শিকার হয়েছে, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নির্যাতনের শিকার হয়েছে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ গণহত্যার শিকার হয়েছে, সব হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। শেখ হাসিনাকে ধরে এনে তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের বাংলার মাটিতে বিচার কায়েম করতে হবে।

হেফাজতের এ নেতা বলেন, এখনও শিক্ষাব্যবস্থা থেকে নাস্তিকতাবাদীর শিকড় উপরে ফেলা হয়নি। আমরা যৌক্তিক সময় দিতে চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাহানা দিয়ে বেশি সময় দেওয়া যাবে না। আগামী শিক্ষাবর্ষের আগেই জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা থেকে নাস্তিকতার শিকড় উপরে ফেলতে হবে। আর যদি তা না করেন, তাহলে হেফাজতের মঞ্চ থেকে বলছি, আগামী ২০২৫ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে নতুন কোনো পাঠ্যসূচি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, বিগত সরকার ও তার দোসররা আমাদের আল্লামা শফি আহমেদকে হত্যা করেছে, মহাসচিব মরহুম কাসেমী সাহেবকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছে, জুনায়েদ নগরীকে হত্যা করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলব, এই তিন হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীকে চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে। আমরা যৌক্তিক সময় দেব। এরপরেও যদি করতে না পারেন, ব্যর্থ হন, তাহলে কতধানে কত চাল হেফাজতে ইসলাম তা বুঝিয়ে দেবে।

বিভাগীয় গণসমাবেশে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেদী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, অর্থ সম্পাদক মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুফতি বশির উল্লাহ, জুম্মাপাড়া মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ ইদ্রিস আলী।

এর আগে মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন এবং পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গভীর সমবেদনা জানান। এ সময় হেফাজতের পক্ষ থেকে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারকে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এনসিপির প্রেস বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানাল ইশরাকের আইনজীবী 

ফিলিস্তিনিদের জন্য মালয়েশিয়াস্থ চট্টগ্রাম সমিতির অনুদান

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ / ভারতের প্রতি সমর্থন, তবে পাকিস্তান প্রসঙ্গে প্রমাণ চায় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু ইস্যুতে অপপ্রচারে ব্রিটিশ এমপিদের উদ্বেগ 

আজ নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ

এআই আর্মস রেস  / ইসলামি দেশগুলোকে নিয়ে বসছে ইরান

কেউ গোপনে ভালোবাসছে? জেনে নিন তার ৭টি লক্ষণ

রক্তাক্ত গাজা : ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৩৫

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট

ইরানের জ্বালানি খাতে নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

১০

দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ শীর্ষে ঢাকা

১১

বন্ধুকে অপহরণ, মুক্তির শর্তে স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব

১২

‘প্রভাব খাটিয়ে’ হাটের ইজারা পেলেন বিএনপি নেতারা

১৩

ফুলে সাজানো রিকশায় প্রধান শিক্ষকের বিদায়

১৪

মুক্তি পেয়েই জেলগেটের সামনে ফের আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৫

ইসরায়েলের গুপ্তচরকে ফাঁসিতে ঝুলাল ইরান

১৬

পাকিস্তানে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার আশঙ্কা

১৭

ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার বিমান হামলা

১৮

ঢাকার আবহাওয়া আজ কেমন থাকবে

১৯

বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

২০
X