মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গর্ত থেকে একে একে বের হলো ২১টি গোখরা সাপ

গোখরা সাপগুলো মেরে ফেলা হয়েছে। ছবি : কালবেলা
গোখরা সাপগুলো মেরে ফেলা হয়েছে। ছবি : কালবেলা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় পুরোনো বসতঘর থেকে বিষধর গোখরা সাপের ২১টি বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে। পরে সাপের বাচ্চাগুলো মেরে ফেলেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে আনোয়াপুর গ্রামের বেপারি বাড়ির মো. জুলফিকার আলি বেপারির বাড়ি থেকে সাপগুলো ধরা হয়।

বাড়ির মালিক জুলফিকার আলি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দেখতে পাচ্ছি আমার বসতঘরের মধ্যে এবং ঘরের আশপাশে বড় বড় সাপের খোলস পড়ে আছে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘরের বাইরে বের হতেই দেখি বড় একটি সাপ ফণা তুলে আছে। তখন আমি চিৎকার দিলে সাপটি পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, প্রতিবেশীরা এসে আমার ঘরে গর্ত দেখে শাবল দিয়ে খুঁড়তে থাকে। এরপর একাধিক গর্ত থেকে একে একে বের হতে থাকে গোখরা সাপের বাচ্চা। বিকেল পর্যন্ত ঘরের গর্ত খুঁড়ে প্রায় ২১টি বিষাক্ত গোখরা সাপের উদ্ধার করা হয়। পরে লোকজন সাপের বাচ্চাগুলোকে মেরে ফেলে। কিন্তু বড় সাপগুলোকে এখনো মারতে পারিনি, তাই আমাদের বাড়ির লোকজন খুব আতঙ্কে আছেন।

স্থানীয় মো. সিপন বেপারি বলেন, খবর পেয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখি খুব ভয়ংকর ব্যাপার। পুরনো ঘরের মেঝে থেকে একে একে বের হচ্ছে বিষাক্ত সাপের বাচ্চা। এগুলো গোখরা সাপের বাচ্চা। যা খুবই বিষধর সাপ নামে এলাকায় পরিচিত। এগুলোর বয়স কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ দিন হবে।

গোখরা সাপের প্রজননকাল এপ্রিল থেকে জুলাই মাস। এ সময় এই সাপ সাধারণত ইঁদুরের গর্তে অনধিক ৩০টি ডিম দিয়ে থাকে। এদের বিষ শক্তিশালী সিনাপটিক নিউরোটক্সিন ও কার্ডিওটক্সিন সমৃদ্ধ।

এ সাপের বাচ্চার জন্ম থেকেই কার্যকর বিষগ্রন্থি থাকে। দংশনের ১৫ থেকে ১২০ মিনিটের মধ্যে বিষক্রিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। দংশনের পর দ্রুত অ্যান্টিভেনম দেওয়া হলে রোগী সুস্থ হয়ে যায়।

এদিকে গোখরা সাপ সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, গোখরা দেশের সর্বত্রই দেখা যায়। সাধারণত বসতবাড়ির আশপাশে, ছোট ঝোপঝাড়, ইঁদুরের গর্ত বা পুরাতন ভবন বা ইটের ফাঁকফোকরে সাপটি বাস করে। কিছুটা ধূসর বাদামি বর্ণের এই সাপটি লম্বায় প্রায় দেড় থেকে দুই মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। দ্রুত চলাফেরা ও সাঁতার কাটায় এরা খুবই দক্ষ। সাপটি ব্যাঙ, গিরগিটি, ছোট পাখি ছাড়াও ইঁদুর ও কীটপতঙ্গ খেয়ে কৃষকের উপকার করে, যা কৃষকের শস্যভাণ্ডার পূর্ণ করতে সাহায্য করে। আর এতে খাদ্যশৃঙ্খলেও সুস্থতা থাকে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণত বর্ষাকালে (মার্চ থেকে জুলাই) একটি মা সাপ ১২ থেকে ৩০টি ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা হতে প্রায় ৬০ দিন সময় লাগে। এই সাপের বিষ নিউরোটক্সিন প্রকৃতির, যা দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ও স্নায়ুতন্ত্রকে অকেজো করে দেয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভিডিও ডাউনলোডের জন্য কিছু সহজ ও নির্ভরযোগ্য অ্যাপ

১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ‘ড্র’ রোববার

দেশ ও জাতি নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে : ড. জালাল

আবারও বাংলাদেশে আসছে পাকিস্তানি ব্যান্ড ‘কাবিশ’

স্বাস্থ্য, ত্বক ও ঘরের যত্নে ছোট্ট জাদু ‘আদা’

একটি রাজনৈতিক দল জান্নাতের টিকিট বিক্রি করছে : ব্যারিস্টার খোকন

আজ ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

১০ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদন করুন ব্র্যাক ব্যাংকে

তছনছ করে দুর্বল হলো ঘূর্ণিঝড় মেলিসা

সিরিয়ার ওপর সিজার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

১০

প্রজেক্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ দিচ্ছে ব্র্যাক

১১

ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবে পেন্টাগন

১২

অফিসার পদে নিয়োগ দিচ্ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আভিভা ফাইন্যান্স

১৩

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১৪

দেশের ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাতিল হবে : মান্নান

১৫

ঢাকায় কখন হতে পারে বৃষ্টি, জানাল আবহাওয়া অফিস

১৬

শনিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৭

০১ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৮

কুবি ছাত্র সংসদ নির্বাচন / অনাবাসিকদের প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার নিয়ে বিতর্ক

১৯

বগুড়ায় ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়ে নির্বাচনী জনসংযোগে ব্যস্ত বিএনপির যেসব প্রার্থী

২০
X