লিয়াকত শাহ ফরিদী, সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ০৩:০৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
সিলেট সিটি মেয়র

প্রস্তুত হচ্ছেন আনোয়ার, বিদায়ের পালা আরিফের

একান্ত আলাপচারিতায় সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত
একান্ত আলাপচারিতায় সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত

আগামী ৭ নভেম্বর মেয়াদ শেষ হচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন আইন), ২০০৯-এর ৬ ধারা মোতাবেক ৮ নভেম্বর দায়িত্ব নেবেন নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আনোয়ারুজ্জামান। একইসঙ্গে মেয়রের চেয়ার ছাড়ার মুহূর্তে মেয়র আরিফকে ‘ বড় আয়োজন’ করে বিদায় সংবর্ধনা জানানোরও প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (৬ আগস্ট) নগরভবনে সিসিক পরিষদের এক বৈঠকে নবনির্বাচিত মেয়রকে বরণ ও বিদায়ী মেয়রকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় সংবর্ধনা জানানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।

আরও পড়ুন : সিলেট হবে স্মার্ট সিটি : আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী

সিসিকের নবনির্বাচিত মেয়র অনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নির্বাচনের পর এক সপ্তাহের জন্য যুক্তরাজ্য সফরে যান। গত শনিবার তিনি দেশে ফিরেছেন। মেয়র পদে নৌকার প্রার্থীর বিজয়ে সিলেটের আওয়ামী লীগ পরিবার উচ্ছ্বসিত। দীর্ঘ ১০ বছর পর এই পদটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া ছিল। ফলে এটি সিলেটের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এদিকে দলীয় নির্দেশনা মেনে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি টানা দুই বারের মেয়র, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। ৭ নভেম্বরের পর থেকে আর নগরপিতার দায়িত্বে থাকছেন না তিনি। তাই দায়িত্ব হস্তান্তরের আগের দিন আরিফকে ‘আয়োজন’ করে বিদায় জানানো হবে বলে জানিয়েছে সিসিক সূত্র।

সদ্য সমাপ্ত সিটি নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে আরিফ নির্বাচনে মেয়র পদে পুনরায় প্রার্থী হননি। মেয়র পদে আরিফের প্রার্থী হওয়া না হওয়া নিয়ে অনেক নাটকীয়তার সৃষ্টি করে অবশেষে তিনি বয়কটের ডাক দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। কিন্তু সিসিক নির্বাচন জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। তবে মেয়র আরিফ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ অথবা সিলেট-৪ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির এক নেতা। তবে তা হবে যদি বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়।

নবনির্বাচিত মেয়রকে বরণ ও বিদায়ী মেয়রের সংবর্ধনার বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে টানা ৫ বার নির্বাচিত কাউন্সিলর, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, আমরা নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করব ও আগামী ৭ নভেম্বর মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মেয়াদ শেষ হবে। এদিনই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।

তিনি আরও বলেন, মেয়র আরিফকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হবে। সিটি করপোরেশন গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত পরিষদ থেকে এমন উদ্যোগ আর নেওয়া হয়নি। আমরাই প্রথম মেয়রকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানোর সিন্ধান্ত নিয়েছি।

গত ২১ জুলাই পঞ্চম সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১টি ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম (বাবুল) পান ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট।

আরও পড়ুন : সিলেটের নতুন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান

সিসিকে আরিফ দশকের অবসান

বিএনপি নেতা সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী টানা ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময়ে তার প্রতিপক্ষ দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। তবে তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্নেহধন্য ছিলেন। যে কারণে তিনি নির্বিঘ্নে ও বেশ দাপটের সঙ্গে টানা দশ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। আরিফ বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য। এর আগে তিনি ছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে আরিফুল হক সিসিকের একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম. সাইফুর রহমানের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে তিনি সিলেটের প্রভাবশালী নেতায় পরিণত হন। সেসময় তাকে ‘ডিপ্লোম্যাটিক লিডার’ হিসেবে আখ্যা দেন সাইফুর। ওই সময় আরিফ সিটি করপোরেশনের ‘নগর উন্নয়ন ও পরিকল্পনা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই সময় আরিফ সরকারি দলের ক্ষমতার দাপটে ‘বিকল্প মেয়র’ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতেন। মেয়র কামরান তখন সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছেন।

গত ২০১৩ সালের ১৫ জুন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে মনোনয়ন নিয়ে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন আরিফ। আওয়ামী লীগের শাসনামলেই তৎকালীন মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে প্রথম বারের মতো মেয়র হন তিনি। ২০১৮ সালে ফের কামরানকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আরিফ। আগামী ৭ নভেম্বর সিসিকে আরিফ দশকের অবসান হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কক্সবাজারে মার্কিন নারীকে শ্লীলতাহানি, অতঃপর...

এসএসসি পাসেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরির সুযোগ

গয়েশ্বর চন্দ্রের দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন ধার্য

সংস্কার না করে পূর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পারে না : চরমোনাই পীর

ওমরাহ করে ফিরেছেন রইস উদ্দিন, সাক্ষাৎ করতে গেলেন অপু বিশ্বাস

কেউ টাকা ধার চাইলে সম্পর্ক ঠিক রেখে যেভাবে ‘না’ বলবেন

ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা লড়াই করেছি : মো. শাহজাহান

৫৫ লাখ টাকা চুরির মামলায় গৃহকর্মী-দারোয়ান রিমান্ডে 

স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহারকারী স্বামীকে নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে

এশিয়া কাপ হকির ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশ

১০

গলায় ম্যাজিক বল আটকে শিশুর মৃত্যু

১১

সন্তান-স্ত্রীসহ সাবেক এমপি সালাহ উদ্দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা 

১২

প্রতিদিন কতটা হাঁটা স্বাস্থ্যসম্মত, ৭০০০ নাকি ১০০০০ পা?

১৩

জুলাই সনদের কয়েকটি দফা নিয়ে বিএনপির আপত্তি আছে : সালাহউদ্দিন

১৪

রাতে ঢাকাসহ ৯ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

১৫

অল্পের জন্য রক্ষা পেল ট্রেনের হাজারো যাত্রী

১৬

এআই ভিডিও দিয়ে অপপ্রচার, দাবি বিএফআইইউর প্রধানের

১৭

মেহেরপুর সীমান্তে ৩৯ নারী-পুরুষকে হস্তান্তর বিএসএফের

১৮

সেই রইস উদ্দিনের বাড়িতে অপু বিশ্বাস

১৯

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরের পদত্যাগ

২০
X