টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাতে মোংলায় তলিয়ে গেছে ২২৮৩টি বসতঘর ও ৭২০টি চিংড়ি ঘের। বসতঘর তলিয়ে রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে এসব পরিবারের। কোনো ঘরে হাঁটু পানি, রাস্তায়ও হাঁটুর উপরে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বেশিরভাগ এলাকাতেই এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে যোগ হয়েছে জোয়ারের পানি। তাই জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহর ও শহরতলীর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।
মূলত রোববার রাত থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে পৌর শহর ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাড়িঘর ও চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। রোববার রাত থেকে সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত মোংলায় ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলা আবহাওয়া অফিস ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে আরেও কয়েকদিন ধরে। তবে মঙ্গলবারও মোংলা সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিপাতে চরমভাবে বিঘ্নিত হয়েছে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহনের কাজ বলে জানিয়েছেন বন্দরের হারবার কন্ট্রোল বিভাগ।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার সকালে বন্দরে ৮টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রানা জানান, ভারি বর্ষণে এখানকার ২২৮৩টি বসতঘর তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া কানাইনগর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ওই এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, সোমবারের ভারি বৃষ্টিপাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৩১৪ হেক্টর জমির ৭২০টি চিংড়ি ঘের তলিয়ে চাষিদের প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাঁদপাই ইউনিয়নে। আর কম বেশি ক্ষতি হয়েছে চিলা, সুন্দরবন ও বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ বলেন, অতি বৃষ্টিতে বেড়িবাঁধের দুই এক জায়গায় ক্ষতিসহ বাড়িঘর ও চিংড়ি ঘের তলিয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে, সেখান থেকে কোনো বরাদ্দ ও সহায়তা এলে তা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বণ্টন করে দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন