জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট কর্মরত থাকলেও ডেন্টাল ইউনিটটি গত ৩ বছর ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে দাঁতের চিকিৎসা, বঞ্চিত হচ্ছে মাদারগঞ্জ উপজেলার প্রান্তিক জনপদের মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে ডেন্টাল ইউনিট নষ্ট থাকায় শুধু রোগীদের মৌখিক বর্ণনার ভিত্তিতে প্রেসক্রিপশন (ব্যবস্থাপত্র) প্রদান করা হচ্ছে।
জানা গেছে, চিকিৎসা প্রদানের জন্য চিকিৎসক নেই, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসকের অভাবে তারা রোগীদের ডেন্টাল সার্জারি, ফিলিং, রুট ক্যানেল, স্কেলিং করাতে পারছেন না। এতে ব্যাহত হচ্ছে দাঁতের রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম। পাচ্ছেন না ব্যবস্থাপত্রে উল্লিখিত সরকারি ওষুধও। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দাঁতের সমস্যা নিয়ে রোগী এলেও ফিরে যেতে হচ্ছে চিকিৎসা ছাড়াই। দূরদূরান্ত থেকে আসা নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষ টাকার অভাবে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা করাতে পারছেন না। আবার মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা না পেয়ে ছুটে চলেছেন শহরের নামিদামি প্রাইভেট হাসপাতালে। এমন চিত্রটি মাদারগঞ্জ উপজেলায় ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।
কথা হয় উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়ন থেকে দাঁতের চিকিৎসা নিতে আসা নিম্নমধ্যবিত্ত রাহিমা বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে দাঁতের সমস্যায় ভুগছেন তিনি। টাকা না থাকায় চিকিৎসা করাতে পারেননি। কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ওষুধ লিখে বলেছেন বাইরে থেকে কিনতে হবে।
দন্ত বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালে দাঁতের চিকিৎসা করতে এসে শুনতে পেলাম ডেন্টাল ইউনিটের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নষ্ট।
ডেন্টাল ইউনিট নষ্টের বিষয়ে জানতে চাইলে ডেন্টাল ইউনিটের টেকনোলজিস্ট বলেন, ‘আমি এই হাসপাতালে ১০ বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের এই হাসপাতালে আগে দাঁতের চিকিৎসার জন্য কোনো যন্ত্রপাতি ছিল না, কিন্তু গত করোনার মধ্যে আমাদের হাসপাতালে একটি ডেন্টাল ইউনিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণের সময় দাঁতের চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত ইউনিটটি বন্ধ থাকায় এখন নষ্ট হয়ে আছে। শুধু ডেন্টাল ইউনিটের চেয়ার ঠিক আছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে চিঠি লিখে অবগত করেছি। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ঠিক হলে দাঁতের চিকিৎসাসেবার উন্নতি হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, ডেন্টাল ইউনিটের যন্ত্রপাতি নষ্ট কিনা আমার জানা নেই। তবে দন্ত বিভাগে ডাক্তার না থাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ডাক্তার নিয়োগ হলে সব চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, ডেন্টাল সার্জারি, ফিলিং, স্কেলিং করা না গেলেও শিশুদের দাঁত ওঠানো হয়।
ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, সরকারি হাসপাতালে যেসব ওষুধ সাপ্লাই আছে তার সব ওষুধ রোগীকে দেওয়া হয়। যেগুলো সাপ্লাই নেই সেই ওষুধগুলো বাইরে থেকে কিনতে হয়।
মন্তব্য করুন