বান্দরবানের প্লাবিত হওয়া নিম্নাঞ্চলের পানি নেমে গেছে। এতে স্বাভাবিক হয়েছে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ। তবে চিম্বুকের পড়ে পাথুই পাড়া এলাকায় প্রায় ১০০ মিটার রাস্তা ধসে পড়ায় দুই উপজেলা রুমা ও থানচির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন আছে। সড়ক সচল করতে কাজ করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যারা।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন বাংলাদেশের (২০ ইসিবি) ওয়ারেন্ট অফিসার রাহুল হাসান পার্থ জানান, চিম্বুক পাহাড় পার হওয়ার পরের একটি জায়গায় প্রায় ১০০ মিটার রাস্তা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। ওই জায়গায় পাহাড়ের ভেতর দিয়ে বাইপাস সড়ক তৈরি করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব চলাচল উপযোগী করা হবে।
টংকাবতি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্লুকান ম্রো বলেন, ধসে পড়া সড়কের পশ্চিম অংশে টংকাবতি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে পাতুই পাড়া পড়েছে। পূর্ব অংশ পড়েছে রুমা গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুড়াবাংলা ম্রো পাড়া। স্থানীয় পাড়াবাসীরা আপাতত ধসে পড়া সড়কের পেছনে একটি পাহাড় পার হয়ে চলাচল করছে।
এদিকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ, নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সেবা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিজ বাড়িতে ফিরছেন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই। তবে নোংরা পানি বাসাবাড়িতে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে অনেকের জিনিসপত্র। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে পচা দুর্গন্ধ। এছাড়াও বাসা বাড়ির পচা জিনিসপত্র রাস্তার উপর স্তূপ করে রাখছেন বাসিন্দারা। সেখান থেকে ছড়াচ্ছে আরো বেশি গন্ধ।
তবে শনিবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকার ময়লা-আবর্জনা অপসারণে কাজ করছে বান্দরবান পৌরসভা এবং স্বেচ্ছাসেবকলীগের কর্মীরা।
জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাদেক হোসেন চৌধুরী জানান, বন্যা পরবর্তী ময়লা আবর্জনা থেকে মানুষের বিভিন্ন অসুখ ছড়িয়ে পড়ছে। তাই আমরা ময়লা পরিস্কার অভিযান শুরু করেছি। আমরা ময়লা পরিস্কারের পর ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের চিন্তাভাবনা আছে।
এ ছাড়া বান্দরবান সেনানিবাস এলাকায় বন্যার্তদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ করছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। বিভিন্ন সংস্থা থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে ত্রাণ, বিতরণ করা হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি।
এদিকে শনিবার সকালে বান্দরবান লোকাল ট্রাক মিনি ট্রাক মালিক সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে ৫০০ শ্রমিক পরিবারের মাঝে ৫ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.শাহ আলম, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি বান্দরবান ইউনিটের সেক্রেটারী অমল কান্তি দাশ, বান্দরবান পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, শ্রমিক লীগের সভাপতি মো.মুছা, মুদি ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাশসহ বান্দরবান লোকাল ট্রাক মিনি ট্রাক মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের বিভিন্ন সদস্য এবং বিভিন্ন শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চাল বিতরণ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, পুলিশ, সেনাবাহিনী সম্মিলিতভাবে এবং সরকারিভাবে অনুদান দিচ্ছে। তবে এটুকু বলতে পারি কোন লোক না খেয়ে থাকবে না। তাদের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্যায় যাদের ঘর বাড়ি ভেঙে গেছে তাদের ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে ঘর পনর্বাসন করে দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন