অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৩, ০২:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যশোরে নদীভাঙনে বিলীনের পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের হাট

নদের পাড়ে গড়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের হাট। ছবি : কালবেলা
নদের পাড়ে গড়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের হাট। ছবি : কালবেলা

যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে চন্দ্রপুর গ্রামের আতাই নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের হাট। ৫২ বছর ধরে চলা এই হাটটিতে দিন দিন ক্রেতা ও বিক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। সপ্তাহে প্রতি বুধবার সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। তবে নদীভাঙনের কারণে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের এই হাটটি নদীতে বিলীন হতে চলেছে। তাই বাঁশের হাটটিকে রক্ষা ও একটি চান্দিনার দাবি হাট কর্তৃপক্ষের।

জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতা আসেন এই বাঁশের হাটে। হাটে এসে তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাঁশ কেনাবেচা করেন। ঐতিহ্যবাহী এই হাটটি ১৯৭১ সালে স্বল্প পরিসরে শুরু হয়। পরবর্তীতে দিনে দিনে হাটের পরিধি বাড়তে থাকে। বর্তমানে এই হাটটি এ অঞ্চলের বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নদীর তীরবর্তী ও প্রধান সড়কের সংলগ্ন হওয়ায় হাটটিতে পণ্যপরিবহনে সহজলভ্য হয় বলে ক্রেতা ও বিক্রেতার অনেক সমাগম ঘটে। প্রতি হাটে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার বাঁশ বেচাকেনা হয়ে থাকে। নদীর পাড়ে প্রথম দিকে ২ একর জমিতে হাটটি শুরু হলেও বর্তমানে নদীভাঙনের ফলে ৫০ শতকের হাটটি টিকে আছে। এখানে শুধু হাটবারে বাঁশ বেচাকেনা হয়। কেউ বাঁশ কিনতে ব্যস্ত, আবার কেউ ট্রলারে সাজাতে, কেউবা আঁটি বেঁধে নদীতে ভাসাতে ব্যস্ত, আবার কেউবা নসিমনে বা ভ্যানে বাঁশ সাজাতে ব্যস্ত। দূর-দূরান্ত থেকে অনেক ব্যবসায়ী এ হাটে বাঁশ কিনতে আসে।

যশোরের বসুন্দিয়া থেকে আসা ব্যবসায়ী মো. সাবু খান বলেন, যশোর খুলনার একটা বৃহত্তম বাঁশের হাট। আমরা প্রতি হাটে অনেক টাকার কেনাবেচা করি। এই হাটে নিরাপত্তার ব্যবস্থা অনেক ভাল। তবে হাটটি নদী ভাঙ্গনে কারনে আমাদের বাঁশ রাখতে অনেক কষ্ট হয়।

খুলনা থেকে আসা ব্যবসায়ী মকবুল শেখ বলেন, আমি প্রতি হাটে ৪০০ থেকে ৫০০ বাঁশ কিনে নিয়ে দিঘলীয়া, মধুপুর, হাজীগ্রাম নিয়ে বিক্রি করি।

খুলনার পাইকগাছা থেকে আসা ব্যবসায়ী জিহাদ হোসেন বলেন, এখান থেকে বাঁশ ক্রয় করে নৌকায় ভরে নিয়ে চালনা, মংলা, কালীনগর, চুতরখালী ইত্যাদি জায়গায় নিয়ে বিক্রয় করা হয়।

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, এই হাটে বিভিন্ন জাতের বাঁশ যেমন- তল্লা, উলকো, জাবা ইত্যাদি বাঁশ ক্রয় বিক্রয় হয়।

চন্দ্রপুর বাঁশের হাট কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান খান বলেন, ১৯৭১ সালে এই বাঁশের হাটটি শুরু হয়। এখানে অনেক দূরদূরান্ত থেকে ব্যাপারী আসেন। এই হাটে হাজার হাজার বাঁশ বেচাকেনা হয়। বর্তমানে হাটটি নদীভাঙনে বিলীন হতে চলেছে। সরকারের কাছে হাটটি মেরামতের সুব্যবস্থা ও ব্যাপারীদের থাকার জন্য একটি চান্দিনার দাবি করি।

অভয়নগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, এই বাঁশের হাটের মাধ্যমে অভয়নগরসহ আশেপাশের অনেক উপজেলার মানুষ ব্যাপক উপকৃত হয়। সময়ের ব্যবধানে নদী ভাঙ্গনে এই হাট নদী গর্ভে বিলীনের পথে। এ অবস্থায় আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আহ্বান জানাবো, গাইড অল নির্মাণের মাধ্যমে হাটটিকে সংরক্ষণ করর। এবং এর পাশাপাশি চান্দিনা তৈরি ও সার্বিক উন্নয়নের জন্য উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে যতটুকু করা সম্ভব তা আমি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবো।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘শেষবারের মতো আমার ছেলের মুখটা দেখতে চাই’

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় ঝড়-বৃষ্টির আভাস

০৮ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১২ দল ও সমমনা জোটের সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের বৈঠক

১৭১ রোহিঙ্গাকে আটক করে ক্যাম্পে ফেরত পাঠাল বিজিবি

গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) খালেদ হোসাইনের নেতৃত্বে নতুন সদস্যদের গণসংহতি আন্দোলনে যোগদান

গাজীপুরে প্রবাসী বিএনপি নেতা পারভেজের প্রার্থিতা ঘোষণা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইমাম প্রশিক্ষণ দেবে তুরস্কের দিয়ানাত ফাউন্ডেশন

স্বপ্নদ্রষ্টার হাত ধরে ল্যাবএইড এআইয়ের উদ্বোধন

১০

মতবিনিময় সভায় যুব নেতারা / জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে

১১

দুর্গাপূজা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যে উদ্বেগ ঐক্য পরিষদের 

১২

মিয়ানমারে বৌদ্ধদের উৎসবে জান্তার বিমান হামলায় নিহত ৪০

১৩

আ.লীগের কর্মী-সমর্থকদের জন্য কেঁদে কেঁদে দোয়া করলেন হাদি

১৪

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারে ভুল উদ্ধৃতি সংশোধনের আহ্বান টিআইবির

১৫

‘আবরারের স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে অনেকের গাত্রদাহ দেখেছি’

১৬

সৌন্দর্যবর্ধনে সাভার উপজেলা প্রশাসনের নানা উদ্যোগ

১৭

ছেলের দায়ের করা মামলায় বাবাসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

১৮

ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে কোরআন অবমাননা, সিএমপির জরুরি সতর্কবার্তা

১৯

জাতীয়করণ নিয়ে বেসরকারি শিক্ষকদের প্রতি তারেক রহমানের বার্তা

২০
X