কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

লক্ষ্মীপুরে ধানের চেয়েও খড় বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে

ধানের চেয়ে খড়ের দাম বেশি। ছবি : কালবেলা
ধানের চেয়ে খড়ের দাম বেশি। ছবি : কালবেলা

দেশজুড়ে বেড়েছে গবাদিপশুর খাদ্যের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন পশু খামারিরা। সম্প্রতি হওয়া বন্যার কারণে খড়ের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। যার প্রভাব পড়েছে ছোট-বড় সব ধরনের খামারে। এতে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ধানের থেকেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খড়।

খামারি মো. আলাউদ্দিন জানান, এবার তিনি সাড়ে ৬ লাখ টাকার খড় কিনেছেন। আগের বছর সমপরিমাণ খড় কিনতে তার খরচ হয়েছিল প্রায় ২ লাখ টাকা।

কমলনগরে ছোট ছোট আঁটি ও জমির পরিমাণ অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে খড়। বর্তমানে এক কেজি খড় বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায় এবং প্রতি মণ (৪০ কেজি) খড়ের দাম দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা, যা ধানের দামের থেকেও বেশি। যেখানে এক মন ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে একটু বেশি।

কৃষক ফয়েজ আহমেদ বলেন, তিনি চলতি মৌসুমে ১৬০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, তার জমিতে ৫০ হাজার টাকার ধান পাবেন। কিন্তু তিনি ইতোমধ্যে তার জমির খড় বিক্রি করে ফেলেছেন ৭০ হাজার টাকায়। গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে খামারিরা বাড়িতে গিয়ে তার খড়ের আগাম দাম দিয়ে গেছেন। গত বছর একই জমির খড় বিক্রি করেছিলেন ৫ হাজার টাকায়।

অন্যদিকে, চর কালকিনি এলাকার কৃষক মো. মন্তাজ, যিনি প্রায় ৫০ ট্রাক খড় বিক্রি করেছেন। প্রতি ট্রাকে প্রায় ১০ হাজার টাকা করে লাভ হচ্ছে তার।

কমলনগর উপজেলার সরকারি নিবন্ধিত খামারি হাজি মো. আলাউদ্দিন জানান, প্রতিবছরের এ সময়ে তিনি খড় সংগ্রহ করে রাখেন এবং এতে তার প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়। তবে চলতি মৌসুমে গত বছরের তুলনায় খড়ের দাম বেড়ে গেছে। তিনি এবার ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় গত মৌসুমের সমপরিমাণ খড় কিনেছেন।

খড়ের এমন নজিরবিহীন দাম অতীতে কখনো দেখেননি স্থানীয় কৃষক ও খামারিরা। কৃষকরা খড় বিক্রি করে খুশি হলেও হতাশ পশু খামারিরা।

গোখাদ্যের তীব্র সংকটে অস্থির হয়ে পড়েছেন তারা। অনেকেই গরু বিক্রি করেতে চেয়েও পারছেন না। গরুর দামও ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

খামারি ইউসুফের খামারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি গরু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।

তিনি বলেন, প্রতিটি গরুর জন্য বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় তিনশ টাকার খড় ও খাদ্য লাগছে। এত খরচ বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব না। সব গরু বিক্রি করতে চেয়েছি। কিন্তু পাঁচ মাস পালন করার পর এখন ১৫ লাখ টাকার গরু মাত্র অর্ধেক দামে বিক্রি করতে পারব। হিসেবে করে দেখেছি, এতে আমার ৬০ ভাগের মতো ক্ষতি হচ্ছে। এখন গরু রাখতেও পারছি না, আবার বিক্রিও করতে পারছি না। কাঁচা ঘাস নেই এবং খড়ের দাম খুব বেশি।

খামারি মো. রফিক বলেন, খড় গরুর খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু চাহিদা বাড়তে থাকায় অনেক খামারি দানাদার খাবারের দিকে ঝুঁকছেন। এতে খামার পরিচালনার খরচ আরও বেড়ে যাচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খেজুরের রস খেয়ে ফেরার পথে প্রাণ গেল কিশোরের

অনুসন্ধানে দুদক / সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

বিশ্বকাপ সামনে রেখে বড় চমক নামিবিয়ার

অ্যালার্মে ঘুম ভাঙে? অজান্তেই বাড়াচ্ছেন শরীরের চাপ

সরাসরি মোদির কাছে বিচার চাইলেন পাকিস্তানি নারী

আন্দোলন ঠেকাতে ‘মব সৃষ্টির’ পরিকল্পনা ঢাকা কলেজ শিক্ষকের

আগামী ৫ দিন তাপমাত্রা কেমন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

বিশেষ বৃত্তিসহ ৪ দফা দাবি জবি শিবিরের

হাসপাতালে নচিকেতা চক্রবর্তী

জামায়াতে ইসলামী হিন্দু শাখার ৯ নেতাকর্মীর পদত্যাগ

১০

মালয়েশিয়ায় আটক ৮৪৩, আছে বাংলাদেশিও

১১

২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ম্যাচ কবে কখন

১২

স্ত্রীর হাতে স্বর্ণের চুড়ি, সন্দেহের জেরে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে স্বামী

১৩

নতুন জোট গড়ছে ৩ দল, ঘোষণা বিকেলে

১৪

এই ৩ পানীয় খেলেই ত্বকে দ্রুত পড়বে বার্ধক্যের ছাপ

১৫

কবরস্থান থেকে ৬ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

১৬

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ভালো উন্নতি হয়েছে: সালাহউদ্দিন

১৭

ল্যাপটপের ৫ গোপন ফিচার, যেগুলো এখনই ব্যবহার করা উচিত

১৮

চকলেট রঙে আবেদনময়ী মন্দিরা

১৯

আইপিএল, বিগ ব্যাশ, পিএসএল মাতানো ক্রিকেটার এবার নোয়াখালীতে

২০
X